দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শাহবাগের প্রজন্ম চত্ত্বরে হাজার হাজার মানুষ গত ৭ দিন ধরে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা চলছে আন্দোলন। ১৯৭১ সালে যেমন এতো যুদ্ধ বিগ্রোহ থাকলেও কেও না খেয়ে ছিলেন না। ঠিক তেমনি শাহবাগের প্রজন্ম স্কয়ারের কোন আন্দোলনকারীও এই ৮ দিনে না খেয়ে থাকেননি। কোথায় থেকে যেনো চলে আসছে খাদ্য-পানি। কে কোন দিক থেকে কিভাবে খাদ্য সামগ্রী পাঠাচ্ছে তার ঠিকানা মেলা ভার।
এদিকে এই রিপোর্ট তৈরি পর আজ ১২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। আজ বেলা ৪টায় ৩ মিনিট দাঁড়িয়ে কাজ-কর্ম রেখে নীরব থাকার কর্মসূচি দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে দেশের সকলকে অংশগ্রহণের আহবান জানিয়েছেন।
সেই প্রথম দিনের মাত্র ক’জনার সমাবেশ দিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল এখন তা বিশাল গণসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এই আন্দোলন এখন শুধু এই শাহবাগের প্রজন্ম চত্ত্বরই নয়, এই আন্দোলন সারাদেশে এমনকি বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে গেছে। বৃদ্ধ-শিশু, তরুণ-তরুণী এমনকি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-শিক্ষক-কর্মচারি, জাতীয় ক্রিকেট দল, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ আজ এখানে হাজির হয়েছেন।
কি দিন-কি রাত- আন্দোলনকারীদের কাছে সব সমান। কখন দিন হচ্ছে আর কখন রাত হচ্ছে আন্দোলনকারীরা তা টেরও পাচ্ছেন না। আর এতো মানুষের সমাবেশে খাদ্য নিয়ে যেনো কারো কোনো মাথা ব্যথাও নেই। কারণ যখন খাওয়ার আসছে তখন কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। যার যার হাতে কিভাবে যেনো খাদ্য-পানি পৌঁছে যাচ্ছে। এখানে কোন বিশৃংখলা নেই। কারো কোন আগ্রহও নেই খাওয়ার প্রতি। মানুষের বাঁচার জন্য সত্যিই খাদ্যের প্রয়োজন আর তাই বোধহয় তারা খাচ্ছেন!
১৯৭১ সালে যেমন যাদের সামর্থ ছিল তারা মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়েছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। আজকের এই প্রেক্ষাপটও যেনো একই রকম। অনেকেই পানি পাঠাচ্ছেন। আবার অনেকে খাবারের প্যাকেট। আবার কেও কেও মুড়ির মুয়া পলিথিনের বস্তায় ভরে পাঠাচ্ছেন আন্দোলকারীদের খাওয়ার জন্য। এসব দৃশ্য দেখলে মনে হয়ে মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হলে মানুষ বোধহয় এভাবেই নিজের জীবনও উৎসর্গ করে।