দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক বড় সিগন্যাল দিচ্ছে শাহবাগের প্রজন্মদের আন্দোলন। যেমন শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করার নজির তেমনিভাবে নেতা হওয়ার মন মানসিকতা থেকে দূরে সরে থাকা। মূল উদ্দেশ্য আন্দোলন করে দাবি আদায় করা।
এদেশের রাজনীতিবিদরা সব সময় তাদের নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা-ভাবনায় মগ্ন থাকেন। দেশের দোহায় দিয়ে নিজেদের আখের গোটানোর মানসে কারে করে থাকেন সব সময়। কিন্তু শাহবাগের গণজাগরণের জোয়ার আজ দেশের রাজনীতিবিদদের অনেক হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে ততই এটি এখন পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। কারণ গত হরতালটি ফ্লপ হওয়ার সেটি একটি কারণ। আমাদের দেশের সরকারি দলীয়রা সব সময় বিরোধী দলের হরতাল প্রত্যাখান করেছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে গাড়ি পুড়িয়ে পিকেটিং করে হরতাল হয়ে গেছে। কিন্তু এবার গণজাগরণ মঞ্চ হতে হরতাল প্রত্যাখান করে সকলকে প্রত্যাখানের আহ্বান জানালে তা মোটামুটিভাবে কার্যকর হয়। যদিও জামায়াতে ইসলামী সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলে অন্তত ৩ জন মারা যায়। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, স্কুল, কলেজ খোলা ছিল। স্কুল কলেজে হরতাল হলে পরীক্ষা পেছানো হয়ে থাকে। কিন্তু এবারের হরতালে তা করা হয়নি। সব স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে। সরকারও নতুন প্রজন্মের সঙ্গে সুর মিলিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখেছিল। রাজধানীর পরিবহন মালিক সমিতি সব গাড়ি চালানোর ঘোষণা দেয়। অপরদিকে দোকান মালিক সমিতিও খোলা রাখার ঘোষণা দেয়। শাহবাগের নতুন প্রজন্মের গণ জোয়ারের কারণে জনগণ এবারের হরতাল প্রত্যাখানের সাহস দেখিয়েছে। আর তা কাজেও লেগেছে।
একটি টিভি চ্যানেলের টক শোতেও দু’জন এমন মন্তব্য করেছেন। তারা বলেছেন, নতুন প্রজন্মের যারা আয়োজক তাদের মধ্যে কোন রাজনৈতিক সম্পর্ক এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। এবং তাদের কর্মকাণ্ড এখন পর্যন্ত স্বচ্ছ। কারণ তারা সবাই একই রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। কারো বক্তব্যের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কারণ তাদের দাবি একটিই তা হলো যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করা। ৪২ বছর পর হলেও তরুণ প্রজন্মরা এদেশ থেকে রাজাকার খেদাও এবং সন্ত্রাসমুক্ত সুখি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার যে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন, তা জাতির জন্য বড়ই সৌভাগ্যের। দেশের সাধারণ মানুষ আবার আশার আলো দেখতে পেয়েছে। আর সে আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ভবিষ্যতে এদেশ এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা এখন সকলের।