দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বড়ই বিচিত্র এই দেশ! ঘর নেই। বেড়া নেই। ধানক্ষেতে সাইন বোর্ড স্থাপন করেই কলেজ উদ্বোধন। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ’ সম্প্রতি উদ্বোধন করেন আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য আবদুল কুদ্দুস। সংসদ সদস্যের প্রিয়ভাজন নজরুল ইসলাম এই কলেজটির উদ্যোক্তা। খবর দৈনিক সমকালের।
নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব আলীসহ স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নিয়োগ-বাণিজ্য করতেই সম্প্রতি ধানক্ষেতে কলেজের নামে সাইন বোর্ড টাঙানো হয়েছে। কলেজের অনুকূলে বিধিমোতাবেক কোনো জমি রেজিস্ট্রি করা হয়নি। নির্মাণ করা হয়নি কোনো অবকাঠামো। অথচ অতি গোপনে কাগজপত্র তৈরির কাজ চলছে। শিক্ষিত বেকাররা যাতে বিশ্বাস করেন এ জন্যই বঙ্গবন্ধুর স্ত্রীর নামে কলেজটির নামকরণ করা হয়েছে। তাছাড়া যে স্থানে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেখানে কলেজ চলার মতো অবস্থা নেই। কারণ ওই স্থানের এক কিলোমিটারের মধ্যে নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজ নামে একটি কলেজ চালু রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার নাজিরপুর-হালসা সড়কের পাশে গোপীনাথপুর গ্রামে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ নামে একটি সাইন বোর্ড ঝোলানো রয়েছে। পাশেই রয়েছে একই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠা করা টিনের বেড়ার একটি নতুন প্রাথমিক স্কুল।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক বিশ্বাস জানান, কলেজের অস্তিত্ব না থাকলেও প্রায় ১০ জন যুবকের কাছ থেকে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কলেজটির উদ্যোক্তা নজরুল ইসলাম। একই সঙ্গে পেছনের তারিখ দিয়ে কাগজপত্র তৈরির কাজ চলছে। সংসদ সদস্য আবদুল কুদ্দুসকে ভুল বুঝিয়ে নজরুল ইসলাম এমন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কলেজের উদ্যোক্তা নজরুল ইসলাম দাবি করেন, এলাকায় নারী শিক্ষার প্রসার ঘটাতে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাগজপত্র তৈরি করে প্রাথমিক স্বীকৃতির জন্য বিভিন্ন দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে কলেজের নামে জমি রেজিস্ট্রিসহ অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য আবদুল কুদ্দুস জানান, তিনি একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। পথে তাকে থামিয়ে কলেজের সাইন বোর্ড উদ্বোধন করা হয়।
নেতাকর্মীদের খুশি করতেই তিনি কাজটি করেছেন। পরে জানতে পেরেছেন উদ্যোক্তা নজরুল ইসলাম কলেজটির কাগজপত্র জমা দিয়েছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তার দফতরে কোনো কাগজপত্র নেই। বিষয়টি তিনি জানেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজেদা ইয়াসমীনও একই রকম জানান।