দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাট-বাজারের কাহিনী অনেক পুরোনো বিষয়। কিন্তু কনে বিকিকিনির হাটের কাহিনী আগে কখনও শোনা যায়নি। এবার আপনাদের শোনাবো বুলগেরিয়ার কনে বিকিকিনির এক হাটের কাহিনী।
এমন এক হাট যেখান লাইন ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সুন্দরী ললনারা। কেও কেও আবার ব্যস্ত রূপচর্চায়। কেও আবার নিজেদের পোশাক-আশাকের সঙ্গে স্বর্ণালংকার ঠিক করে নিচ্ছেন। দেখে মনে হতে পারে হয়তো কোনো সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নেমেছে তারা। কিন্তু আসলে তা নয়। অবাক করার মতো কাহিনী হলো যে, নতুন সঙ্গী (স্বামী) খোঁজার জন্য তাদের ওই হাটে তুলেছেন তার মা-বাবারা!
ঘটনাটি স্থান ও চিত্র হলো ইউরোপের সমৃদ্ধিশালী দেশ বুলগেরিয়ায় স্টারা জোগরা শহরের একটি উন্মুক্ত মার্কেটের। রোমা সম্প্রদায়ের (স্থানীয় ভাষায় ‘কালাইদেঝি’ বলা হয়ে থাকে) গরিব মা-বাবারা তাদের মেয়েদের হাটে তোলেন। এজন্য মেয়ের বিয়ের সব খরচপাতি বাবা-মাকে দিয়ে থাকে ওই সম্প্রদায়ের একটি ইউনিয়ন।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, যুবকরা বিয়ের জন্য কনে পছন্দ করতে আসেন ওই হাটে। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরাও সঙ্গে উপস্থিত থাকেন। উপস্থিত মেয়েদের মধ্য হতে কনে পছন্দ করেন ছেলেরা। পরে অবশ্য পরিবারের পছন্দ ও সম্মতির ভিত্তিতেই তাদের বিয়ে হয়।
জানা গেছে, এক বছরে চারবার এই ‘কনে হাট’ বসানো হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রোমান যাজকের কৃপা পাওয়ার আশায় ধর্মীয় ছুটির দিন, বসন্ত ও গ্রীষ্মে ওই হাট বসানো হয়ে থাকে। হাটে আসা যুবক-যুবতীরা শুধু খোশগপ্প করারই সুযোগ পান না, নিজেরা ম্যাচমেকারের ভূমিকাতেও অবতীর্ণ হন তারা। আবার কনজারভেটিভ সম্প্রদায়ের যুবক-যুবতীরা এই সুযোগে একে অন্যকে ধরে নাচেন, গান গাওয়া ও নানা ফুর্তিতে মেতে ওঠেন। ছবিতে পোজ দেওয়া, এমনকি হালকা পানীয়ও পান করেন এ সময়।
জানা যায়, এক কালের তাম্রলিপির যুগ হতে ঐতিহ্যগতভাবে এভাবেই ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিয়ে আসছেন বুলগেরিয়ার প্রাচীন রোমা সম্প্রদায়ের পরিবাররাবর্গরা। এক মেয়ের বিয়ের পেছনে আড়াই হতে সাড়ে ৪ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত খরচ করতে হয় এসব সম্প্রদায়ের ইউনিয়নকে। নিজেদের ঐতিহ্য রক্ষার কথা ভেবে যুগ যুগ ধরে এভাবেই নিজেদের সন্তানদের হাটে তুলছেন পিতা-মাতারা। এসময় মনে হয় যেনো বিয়ের এক ধুম পড়ে যায়। ঘরে ঘরে বিবাহযোগ্য মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য মা-বাবারা মেয়েদের হাটে তোলার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন আগে থেকেই। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই হাটের কাহিনী সত্যি এক অনন্য এবং অবিশাস্য ঘটনার মতো।