দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতকে সুবিধা দিতে আগে থেকেই আইসিসি তৎপর ছিল? এমন অভিযোগ রয়েছে আগে থেকেই। আজকের খেলায় আম্পায়ারের ভূমিকা নিয়ে পূর্বের অভিযোগ সত্য বলেই মনে হচ্ছে।
ভারতকে সুবিধা দিতে আগে থেকেই আইসিসি তৎপর ছিল? এমন অভিযোগ রয়েছে আগে থেকেই। আজকের খেলায় আম্পায়ারের ভূমিকা নিয়ে পূর্বের অভিযোগ সত্য বলেই মনে হচ্ছে। এমন কথা উঠেছে যে, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আজকের ১৯ মার্চ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শুধু ভারতই ছিল না, আইসিসিও। অবাক করার মতো কথা মনে হলেও অবস্থাদৃষ্টে তাই মনে হয়েছে। এর বেশকিছু যুক্তিযুক্ত কারণও রয়েছে। ভারতের দু’দুটি আউট আম্পায়ারের কারণে হয়নি। আবার বাংলাদেশের খেলার সময় সীমানার কাছের ক্যাচটি নিয়েও রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। বাংলাদেশ অবশ্য আইসিসির কাছে অভিযোগ করেছে। আইসিসি বলেছে, বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হবে। যদি কেও দোষি হয়, ব্যবস্থা নেওয়া হবে- এমন কথা জানিয়েছে আইসিসি।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ ও ত্রি-দেশীয় সিরিজে যথেষ্ট নাস্তানাবুদ হয়েছে ভারত। ত্রি-দেশীয় সিরিজের ফাইনালই খেলতে পারেনি ভারত। সেই দলটিই আবার বিশ্বকাপে এসে আমুল বদলে গেলো! এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, বিশ্বকাপে ভারতকে অনৈতিকভাবে সুবিধা দিচ্ছে আইসিসি!
অভিযোগটা সত্যি বলে প্রমাণ হলো যখন দেখা গেলো ভারতেরই প্রভাবে কোয়ার্টার ফাইনালের সূচীতে পরিবর্তন আনা হলো। বিশ্বকাপের জন্য সূচী নির্ধারণ করা হয়েছিল অন্তত এক বছর আগে।
আইসিসির সেই নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী ২১ মার্চ শনিবার ‘এ’ গ্রুপের চার নম্বর দল হিসেবে ওয়েলিংটনে খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। আর মেলবোর্নে খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের। সিডনিতে খেলার কথা ছিল নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। অ্যাডিলেড ওভালে মুখোমুখি হওয়ার কথা দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলংকার।
অভিযোগ রয়েছে, ভারতের সুবিধার্থে আইসিসি আমুল বদলে দিল কোয়ার্টার ফাইনালের সূচী। ভারতের ইচ্ছা, মেলবোর্নে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে তারা। সে ইচ্ছা পূরণ করতেই ভেন্যু ও তারিখ পরিবর্তন করে দেওয়া হলো। পরিবর্তিত সূচীর কারণেই মেলবোর্নেই ভারতের মুখোমুখি হতে হলো বাংলাদেশকে।
তবে যে কোন ভেন্যুতে বাংলাদেশ খেলতে কোন ভয় পায় না। কিন্তু ভয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো, ভেন্যু পরিবর্তনের মতো আর কী কী অনৈতিক সুবিধা ভারতকে দিতে পারে আইসিসি সেটি নিয়ে। ভারতের চাহিদামত উইকেট তৈরি করাই হতে পারে সবচেয়ে বড় অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার একটি বিষয়। যা আজ ঘটলো। এই কাজটি বিশ্বকাপের প্রথম থেকেই ধোনিদের জন্য করে আসছে ক্রিকেটের এই শাসক সংস্থা আইসিসি।
১০ মার্চ গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ওয়েলিংটনে আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। ওই ম্যাচের আগেই আইসিসির পক্ষ থেকে ওয়েলিংটনের পিচ কিউরেটর কার্ল জনসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, ভারতের ব্যাটিং উপযোগী উইকেট তৈরী করতে। কার্ল জনসন নিজেই তখন সংবাদ মাধ্যমে স্বীকার করেছিলেন, ‘আইসিসি আমাদের বলেছিল ভাল ব্যাটিং ট্র্যাক তৈরি করতে। যেসব পিচে সিম মুভমেন্ট প্রায় থাকবেই না। টার্নও কম হবে। এখানে যে দুটি ম্যাচে হলো, তা নিয়ে আইসিসি খুশি।’
মেলবোর্নেও যে তেমনটিই ঘটেছে বলে অনেকেই মনে করেন। এর কারণ হলো, আইসিসি চলে ভারতের কথায়, ভারতের অর্থে। তারা যেভাবে চাইবে, সেভাবেই কাজ করবে বিশ্ব ক্রিকেটের শাসক সংস্থা। আবার আইসিসি এটাও চাইতে পারে, বাংলাদেশের কাছে হেরে ভারতের বিদায় হলে, তাহলে তাদের বিশাল বাণিজ্যের জায়গাটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন তারা। যেমন ২০০৭ বিশ্বকাপে হয়েছিল, ভারতের প্রথম রাউন্ড হতে বিদায়ের কারণে।
আর তাই এটা প্রায় নিশ্চিত যে, বাণিজ্যের খাতিরে হোক, ক্ষমতার দাপটে হোক কিংবা বিসিসিআইর আর্থিক জোরে হোক, মেলবোর্নে আইসিসি যে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করেছে তাতে আর কোনো সন্দেহ নেই। বিশ্বকাপের এ পর্যন্ত ভারতের হয়ে আইসিসির নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্ব আর আজকের ম্যাচেও আম্পায়ারিং এর ত্রুটিগুলো দেখে সেটি নির্দ্বিধায় বলা যায়।