দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘামের গন্ধে আমরা অস্থির হয়ে পড়ি। বিশেষ করে অন্য কারও ঘামের গন্ধ আমাদের একেবারেই সহ্য হয় না। কিন্তু এবার জানা গেলো ঘামের গন্ধে বোঝা যাবে ব্যক্তির মানসিকতা।
আপনার পাশের ব্যক্তিটি সম্পর্কে এখন থেকে খুব সহজেই জানতে পারবেন তার মনমানসিকতা। আর সেটি করা যাবে একমাত্র ঘামের গন্ধ থেকেই। গবেষকরা বলেছেন, ঘামের বুঝে নেওয়া সম্ভব হবে- আপনার নিকটস্থ ব্যক্তিটি আনন্দে রয়েছেন, নাকি কষ্টে। অবাক করার মতো এমন কথাই জানিয়েছেন গবেষকরা। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি জার্নালে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গবেষকরা বলছেন যে, সাধারণত আমাদের ইতিবাচক আবেগ বা অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘামের গন্ধের সঙ্গেই হয়ে থাকে। আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে আমাদের শরীরের এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান (chemosignals) উৎপন্ন করে থাকে, যা মনের অবস্থা জানান দিতে পারে।
গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, কেবল ইতিবাচক নয়, ভয় এমন কি উদ্বিগ্নতার মতো নেতিবাচক অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘামের গন্ধের সঙ্গে ঘটে থাকে। আবার ঘামের গন্ধের সঙ্গে আবেগও অনেকটা প্রভাব বিস্তার করে বলে দাবি করেছেন নেদারল্যান্ডের অ্যাট্রেচ ইউনিভার্সিটির মনোবিশেষজ্ঞ গান সেমিন। ওই গবেষক বলেছেন, এটা অনেকটা সংক্রমণের মতো।
গবেষণায় পরীক্ষার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ১২ জন পুরুষের ঘাম নেওয়া হয়। পরীক্ষা চলাকালীন সময় ওই ১২ জন ধূমপান, মাদক গ্রহণ, কোনো প্রকার ওষুধ, মিলন, তীব্র ঘ্রাণযুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত ব্যায়াম হতেও বিরত থাকেন।
তাদের পরিষ্কার পোশাক পরিয়ে গবেষণাগারে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতির (আনন্দ, দুঃখ, ভয় ইত্যাদি) চলচ্চিত্র দেখানো হয় এবং বিরতি দিয়ে তাদের শরীর হতে ঘাম নেওয়া হয়। একইভাবে ৩৬ জন নারীকে গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাদের শারীরিক অথবা মানসিক রোগ নেই। পুরুষের তুলনায় নারীদের ঘ্রাণ শক্তি অনেক বেশি। ৫ মিনিট বিরতি দিয়ে তাদেরও ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতির চলচ্চিত্র দেখানো হয়। আবার ঘাম নেওয়া হয়।
নারী ও পুরুষ উভয়ের ঘাম পরীক্ষা করে দেখা যায়, প্রতিটি অনুভূতির সময় আমাদের শরীরে ভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে থাকে, যে কারণে গন্ধেরও পরিবর্তন ঘটে যায়। আবার একজন ব্যক্তির সঙ্গে অন্য ব্যক্তির সক্ষতা গড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও বিষয়টি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন। ‘আচরণগত মিল’ থাকলেই কেবল মস্তিষ্ক একজন ব্যক্তিকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে ও ঘ্রাণ অন্যকে প্রভাবিত করে থাকে। তবে মস্তিষ্কে ঘ্রাণের প্রভাব সুনির্দিষ্ট করতে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা।