দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা সমস্যা বিশ্ববাসীকে বিচলিত করে তুলেছে। এবার খবর বেরিয়েছে সাগরে পানির স্তরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।
আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, যতোদিন ‘এল নিনো’র প্রভাব পৃথিবীতে থাকবে, পৃথিবীর তাপমাত্রা ততোদিন বাড়বেই। প্রশান্ত মহাসাগরে পানির স্তরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বৃদ্ধিই পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ। এই প্রাকৃতিক ঘটনার নামই হলো ‘এল নিনো’।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, এ কারণে উষ্ণতম বছর হতে চলেছে ২০১৫ সাল। শুধু তাই নয় গবেষকরা বলছেন, ২০১৬ সাল হবে আরও অনেক কষ্টকর। গত বুধবার জেনেভায় জাতিসংঘ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এ তথ্য জানিয়েছে।
ডব্লিউএমওর আবহবিদরা আরও জানান, এই মুহূর্তে ‘এন নিনো’র যা গতিপ্রকৃতি তাতে করে ২০১৬ সাল আরও উষ্ণতম বছর হবে। এই এল নিনো হচ্ছে বায়ুমণ্ডলীয় ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের সমুদ্রগুলোর মধ্যে একটি পর্যাবৃত্ত পরিবর্তন। এল নিনো হচ্ছে পর্যায়বৃত্তের একটি উষ্ণ পর্যায়। এল নিনো বন্যা, খরা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এতে বলা হয়েছে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল যেসব দেশ কৃষি কাজ ও মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল, তারাই এই এল নিনো দ্বারা অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
২০১৫ শেষ হতে আর এক মাসের মতো সময় বাকি। ডব্লিউএমও আশঙ্কা করছেন, এই সময়ের মধ্যে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ১৯৬১ সালের তুলনায় এক ডিগ্রি বৃদ্ধি পাবে।
ডব্লিউএমওর সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, ২০১৫ সালে জানুয়ারি হতে অক্টোবর মাস পর্যন্ত পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ১৯৬১-৯০ সালের তুলনায় ইতিমধ্যে ০ দশমিক ৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। ১৯৬১ হতে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পৃথিবীপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেনেভায় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সেক্রেটারি জেনারেল মাইকেল জরাড বিশ্বের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে গিয়ে আরও বলেছেন, ‘পৃথিবীর জন্য এটা খুবই খারাপ একটা খবর।’
ডব্লিউএমও বলেছে, এল নিনোর এই দাপটের জন্য মানব সভ্যতাই অনেকাংশে দায়ী। যেভাবে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভিন্ন দেশ পরিবেশে গ্রিনহাউস গ্যাস (কাবর্ন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সাফলার ও নাইট্রোজেনের গ্যাস) পরিবেশে এসে মিশছে তাতে করে বাতাসের তাপমাত্রা বাড়ছে। তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে এই এল নিনো! এই দুইয়ের যুগলবন্দিতে আগামী বছর বিশ্বজুড়ে আবহাওয়া বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা। আর তাই কোথাও কোথাও অসময়ে ভারি বৃষ্টিতে বন্যাও হতে পারে। কোথাও বর্ষার সময়ে বৃষ্টি হবে না। বিশ্বের কোথাওবা গ্রীষ্মের সময়টাও তুষারপাত হতে পারে। আবার কোথাওবা একইসঙ্গে অনুভূত হবে গরম-শীত! বিশ্ববাসীকে এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে বলে আবহাওয়াবিদরা অভিমত দিয়েছেন।