দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাচীনকাল থেকে সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ চেয়েছে তার রূপ- লাবণ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি তারুণ্য ধরে রাখতে। বিজ্ঞানের এই অত্যাধুনিক যুগেও এর বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম ঘটেনি। আমাদের প্রতিদিনের জীবন ধারণের পদ্ধতি দেহে এবং চেহরায় বয়সের প্রভাব ফেলে। আমাদের জীবন যাপনে নিয়ন্ত্রণ এবং কিছু বিষয় মেনে চললে আমাদের বহুদিন তারুণ্য ধরে রাখা অসম্ভব কিছুই নয়। তারুণ্য ধরে রাখার যুদ্ধে মনকে উচ্ছল রাখাটা শারীরিকভাবে ‘ফিট’ থাকার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। কার্যত নিয়মিত পত্রিকার শব্দ, ধাঁধা সমাধান করে ব্রেনকে ব্যস্ত রাখার মাধ্যমে থাকতে পারেন চির তরুণ।
সপ্তাহে অন্তত তিনবার ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং বা বাগানে কাজ করুন অথবা অন্য কোনো শারীরিক পরিশ্রম করুন। ব্যায়াম চলাকালে কোনো কারণেই থামবেন না। একনাগাড়ে ব্যায়াম করতে হবে।
বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থেকে এবং নতুন স্কিল আয়ত্ত করার মাঝ দিয়ে ব্রেনকে সচল রাখুন। যদি আপনার কাজ যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং না হয় অথবা আপনি আর কাজ করছেন না তবে আপনার অবসর সময়কে ব্যয় করুন সেসব কাজ করে, যা করতে আসলে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। যেমন অংক কষতে বা ইতিহাস শিখতে। অথবা আপনি পাড়ার কোনো ক্লাব বা সংগঠনের সাথে কাজ শুরু করে দিতে পারেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নাম লেখাতে পারেন অথবা পত্রিকার শব্দ ধাঁধা সমাধানে লেগে যেতে পারেন।
পুরনো কোনো ঘটনা বা স্মৃতি মনে করার চেষ্টা করুন। সবচেয়ে ভালো হয় এমন কিছু বিষয় মনে করার চেষ্টা করা যেটা বলতে গেলে আপনি ভুলেই গেছেন। অথবা মনে করার চেষ্টা করুন ছোটবেলার সব বন্ধুর নাম। আবার প্রতিদিনের ঘটনাগুলোও মনে রাখার চেষ্টা করুন। বাজার থেকে কী কী কিনলেন, কত টাকা কোথায় রিকশা ভাড়া দিলেন- দিন শেষে এগুলো মনে করার চেষ্টা করে দেখুন। স্মৃতিশক্তি এতে অনেক বাড়বে, প্রখর হবে।
নতুন কোনো কাজ শেখা, নতুন নতুন ভাষা শেখা, একটি কোর্সে ভর্তি হওয়া অথবা নিজ এলাকায় কোনো সামাজিক কাজে নিজেকে জড়ানো। দ্বিতীয় একটি ভাষা শিখলে আপনার ব্রেনের সামনের অংশগুলো ভালো ব্যায়াম পাবে। আর ব্রেনের সামনের অংশই হচ্ছে আপনার ব্রেনের ম্যানেজার, যা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণত সংকুচিত হতে থাকে।
একটি ডায়রি লিখতে পারেন। প্রথমত দিনকে ছয়টি অংশে ভাগ করুন (যেমন খুব সকাল, সকালের পরের দিক প্রভৃতি) এবং আপনি কী করেন তা লিখুন। সব কাজকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, মাঝারি গুরুত্বপূর্ণ এবং কম গুরুত্বপূর্ণ প্রভৃতি লেভেলে চিহ্নিত করুন। এক সপ্তাহ পর থেকে একটি কম গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে একটি ছোট মানসিক এক্সারসাইজ জুড়ে দিন।
যখন আপনার ওপর খুব বেশি প্রেসার পড়বে তখন আপনার মুড বদলানোর চেষ্টা করুন। সহজ হতে হবে। যেমন গান শুনতে পারেন, হাসির মুভি দেখতে পারেন অথবা মজার আড্ডা দিতে পারেন। যতই আনন্দিত থাকবেন ততই ভালোভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবেন।
যতই আমাদের বয়স বাড়ে ততই আমাদের সামাজিক সার্কেল কমে আসে অথবা ছোট হয়ে আসতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই ব্রেনকে খাটানোর চাহিদাটা তখনই বেশি হয় যখন আমরা অন্য কারো সংসপর্শে আসি। সামাজিক কিছু কাজকর্মের সাথে নিজেকে যুক্ত করুন। এগুলো সংখ্যায় খুব কম হতে পারে এবং এর মাঝে থাকতে পারে বিনোদনভিত্তিক ক্রিয়াকলাপ, যেমন সিনেমা বা থিয়েটারে যাওয়া। অথবা হতে পারে পাড়ার দোকানে যাওয়া এবং যেতে যেতে দুএকজন লোকের সঙ্গে কথা বলা।
সপ্তাহে অন্তত তিনবার মাছ খাবেন। রঙিন ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি খান। যেমন- আম, জাম, কলা, লিচু, কমলা এমনকি খেতে পারেন কাঁচামরিচ ও লাল মরিচও। অধিক চর্বিযুক্ত খাবার এবং লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন কারণ এগুলো রক্তনালিকে সংকুচিত করে।
নতুন ধারা এবং ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। মিশতে হবে আপনার চেয়ে অল্পবয়সীদের সঙ্গে এবং পরিহার করতে হবে পুরনো সেই ধ্যানধারণাগুলো যা বলছে ‘বয়স অনুযায়ী’ আপনাকে কী করতে হবে আর কী করতে হবে না।
যেখানে ভয় এবং মানসিক চাপ ব্রেনের সেলগুলোকে সংকুচিত করতে পারে, সেখানে একইভাবে ভালোবাসা ব্রেনের বিকাশ ঘটাতে পারে। প্রাপ্তবয়স্করা ভালোবাসার প্রকাশ হতে উপকার পেতে পারেন এবং এ কারণেই আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনী পরিবার এবং বন্ধুদের জন্য আপনার মনের টান থাকা চাই।
যাকে ভালোবাসেন তাকে সেটা জানিয়ে দিন। তার সাথে খানিকটা সময় কাটান। ভালোবাসা যে কেবল মানুষকেই বাসতে হবে-তা নাও হতে পারে। ভালোবাসার সঙ্গী হতে পারে পোষা বিড়াল থেকে শুরু করে আড্ডা দেয়ার মানুষটি পর্যন্ত।
তাছারা নিচের বর্ণিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারেনঃ
- খাবারের তালিকায় টমেটো রাখুন। নিয়মিত টমেটো খাওয়ার অভ্যাস বর্তমান বয়স থেকে কম বয়সী দেখায়
- সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক এবং মানসিক সুসম্পর্ক থাকলে বয়স অনেক কম দেখায়
- প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন
- চকলেট পছন্দ করেন? প্রতিদিন চকলেট খেলে বয়স কম দেখাবে
- মন খুলে হাসতে পারলে আয়ু বাড়ে
- প্রতিদিন ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন
- প্রচুর পানি পান করতে হবে
- সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
- ভিটামিন জাতীয় খাবার প্রচুর পরিমাণে খেলে বয়স কম দেথায়
- সুন্দর হাসির জন্য প্রয়োজন সুস্থ দাঁত। দাঁতের সঠিক যত্ন নিলে বয়স কম দেখাবে
- সকালে নিয়মিত সকালের নাস্তা খান
- রাতে খুব ভালো ঘুম আয়ু বাড়িয়ে দিতে পারে
- নিয়মিত যে কোনো ধরনের বাদাম আমাদের ত্বক সজীব রাখে
- দুশ্চিন্তা এবং হতাশা আমাদের জীবনী শক্তি কমিয়ে দেয়। আর বয়সের তুলনায় আমাদের বুড়ো দেখায়।
ধন্যবাদ: শারমীনা ইসলাম