দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অরল্যান্ডোর ঘটনার পর মুসলিমদের বিরুদ্ধে তোপ দেখে যে খুব একটা বিচক্ষণতার পরিচয় দেননি, সম্ভবত তা ঠারেঠোরে বুঝতে পেরেছেন আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প। তাই তার সুর নরম হতে শুরু করেছে।
গত শনিবার তাইতো ট্রাম্পের আগের ‘ভুল শুধরে’ দিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থীর মুখপাত্র হোপ হিক্স বলেছেন, ‘কোনও দেশ থেকেই মুসলিমরা আমেরিকায় আসতে পারবেন না, এটা ‘বস’ (ট্রাম্প) আসলে বলতে চাননি। উনি চান, যে দেশগুলোতে সন্ত্রাসবাদ সীমা ছাড়িয়েছে, সেই দেশগুলো হতে মুসলিমদের আমেরিকায় আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।’ হিক্স ই-মেলে ট্রাম্পের এই বক্তব্য পাঠিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে।
গত ডিসেম্বর থেকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লাগাতার কামান দেগে চলেছেন ট্রাম্প। কেও কেও তাই বলতে শুরু করেছিলেন, এটাই হয়তো এবার নির্বাচনে ‘ট্রাম্প-কার্ড’! ঘটনাচক্রে, অরল্যান্ডোর ঘটনার আঁততায়ী এক জন মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তার বহু পরিচিত মুসলিম-বিদ্বেষের ‘ড্রাম’ আরও জোরে বাজাতে শুরু করে দেন রিপাবলিকান এই প্রার্থী।
ওই সময় ট্রাম্প সরাসরি বলেছিলেন, ‘যে কোনও দেশ হতে মুসলিমদের আমেরিকায় আসার ব্যাপারে পাকাপাকিভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।’ এরপর একের পর এক টুইটে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কড়া কড়া কথা বলতে শুরু করেন ট্রাম্প। তা নিয়ে আমেরিকা তো বটেই, বিশ্ব জুড়ে শুরু হয়ে যায় নিন্দার ঝড়। আমেরিকার মতো একটি দেশের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর এহেন জাতিবিদ্বেষী আচরণ, মন্তব্যের বিরুদ্ধে উত্তরোত্তর সরব হতে শুরু করে পুরো বিশ্ব জনমত। আমেরিকার প্রাইমারিগুলোতে যারা কিছু দিন পূর্বেও ভোট দিয়েছেন ট্রাম্পকে, তারাও শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের অসংযত জাতিবিদ্বেষী মন্তব্যে যারপরনাই বিরক্তি প্রকাশ করতে থাকেন। এর আলোড়ন শুরু হয়ে যায় রিপাবলিকান পার্টিতেও।
শনিবার স্কটল্যান্ডে গল্ফ খেলতে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে ট্রাম্পের একটা গল্ফ কোর্স রয়েছে। সঙ্গে গিয়েছিলেন সাংবাদিকরাও। সেখানেই এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, স্কটল্যান্ড হতে কোনও মুসলিম আমেরিকায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে কি ট্রাম্প তাকে ‘আমাকে বিরক্ত করবেন না’ বলে বিদায় করে দেবেন? তার পাশেই ছিলেন ট্রাম্পের মুখপাত্র হিক্স। এরপর সাংবাদিকদের ই-মেইল পাঠাতে মোটেও দেরি করেননি ট্রাম্পের মুখপাত্র!
এরপর হতেই মূলত সুর অন্যরকম শোনা যাচ্ছে। অর্থাৎ চরমতম মুসলিম বিদ্বেষী ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন মাথা নিচু করতে শুরু করেছেন। কারণ তিনি বুঝেছেন, ‘হয়তো এই ইস্যুটিই হয়তো তার জন্য কাল হতে পারে!’