দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের বিতর্কিত ইসলামী বক্তা জাকির নায়েক দাবি করে বলেছেন, তার বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে তরুণরা জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে- এমন অভিযোগ বাংলাদেশের লোকজন ‘বিশ্বাস করে না’।
ভারতের বিতর্কিত ইসলামী বক্তা জাকির নায়েকের বক্তব্য নিয়ে নানা সমালোচনা এবং ভারতে জাকির নায়েকের পিস টিভির সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ও বাংলাদেশেও একই দাবি জোরালো হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে তিনি জাকির নায়েক এই দাবি করেছেন বলে টাইমস অব ইনডিয়ার খবরে বলা হয়েছে।
জাকির নায়েক দাবি করে বলেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকারের লোকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছেন যে, বাংলাদেশের জঙ্গিদের আমি নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে অনুপ্রাণিত করছি- এমন অভিযোগ তারাও বিশ্বাস করেন না। তাদের মধ্যে একজন আমার ফ্যান ছিল, সেটা ভীন্ন বিষয়।’
এক ডিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘সারা বিশ্বে আমার কোটি কোটি ভক্ত রয়েছে। বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ আমার ফ্যান। তবে আমি তাদেরকে মানুষ খুন করতে উৎসাহ দিয়েছি- এটা বলা শয়তানি।’
সৌদি আরবে বর্তমানে অবস্থানরত এই ইসলামিক বক্তার ভাষ্য হলো, বিশ্বে একমাত্র যুক্তরাজ্য তাকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।
মালয়েশিয়ায় তাকে নিষিদ্ধ করার খবর অস্বীকার করে জাকির নায়েক বলেছেন, মাত্র তিন বছরেরও কম সময় পূর্বে তিনি দেশটির সর্বোচ্চ পদক তোকো মাল হিজরাহ পেয়েছেন। সুতরাং নিষিদ্ধ করার যে খবর বেরিয়েছে তা সত্যিই ‘যুক্তিহীন’।
জাকির নায়েক বলেছেন, ‘গত ২৫ বছরে আমি হলাম চতুর্থ বিদেশি, যে ওই পুরস্কার পেয়েছে।’ তিনি প্রশ্ন করেন, যে লোক সন্ত্রাসবাদের পক্ষে, তাকে কি তারা পুরস্কার দিতে পারে? তিনি বলেন, ‘ঢাকার পত্রিকার খবর যাচাই না করেই ভারতীয় পত্রিকা ওইসব লিখছে।’
জাকির নায়েক পরিচালিত মুম্বাইভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান হলো এই পিস টিভি। এই টিভিতে ধর্ম নিয়ে আলোচনায় ইসলামের যে ব্যাখ্যা তিনি দিয়ে থাকেন, তা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই গুলশানে বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াবহতম জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে অন্তত দুইজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাকির নায়েকের মতো ইসলামী বক্তাদের নিয়মিত অনুসরণ করতেন। তার কথায় প্ররোচিত হয়ে ভারতের কয়েকজন তরুণ আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে বলেও খবর প্রকাশ পেয়েছে।
এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর জাকির নায়েকের বিষয়ে উদ্যোগী হয় ভারত সরকার। জঙ্গিবাদে উৎসাহ জোগানোর অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। মুম্বাইয়ে তার অফিসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারতের সম্প্রচারমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু গত শুক্রবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘আমরা অভিযোগ তদন্ত করছি। কারণ হলো এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, সেই সঙ্গে সামাজিক সম্প্রীতির জন্যওক একটি হুমকি।’
বাংলাদেশেও জাকির নায়েকের পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের ইঙ্গিত দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
শনিবার তিনি বলেছেন, ‘এই টিভিটি সম্পর্কে কিছু অভিযোগ আমাদের গোচরীভূত হয়েছে। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। মন্ত্রণালয়ের অফিস খুললেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে সরকারের স্ট্যান্ড আমরা স্পষ্ট করবো।’