দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বানর পশু হলেও বানরের রয়েছে মানুষের মতোই বুদ্ধি। এবার সেই প্রমাণ দিলো এক বানর। চিকিৎসার জন্য পা এগিয়ে দিলে তাকে ব্যান্ডেজ করে দেওয়ার পর সে আবার ফিরে গেলো জঙ্গলে।
এমন একটি ঘটনা সংবাদ মাধ্যমের প্রধান খবরে পরিণত হয়েছে। যে কেও এমন কথা শুনে বিস্মিত হবেন। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে এমন একটি ঘটনা।
হাসপাতালের এক নার্স রাতভর ডিউটি শেষে সবেমাত্র একটু চেয়ারে হেলান দিয়েছেন। এমন সময় আচমকা ঘরে বানরকে দেখে ভয়ে আঁতকে ওঠেন।
এ সময় হাসপাতালে হঠাৎ বানরের প্রবেশ দেখে মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রোগীদের মধ্যেও। একজনতো ভয়ে বিছানা হতে পড়েও গেলেন। তবে এতোকিছুর পরও কোনো ভ্রূক্ষেপই নেই বানরটির। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে একটু পরেই খোলা দরজা দিয়ে সোজা এসে হাজির হলেন নার্সদের ঘরে।
এমন দৃশ্য দেখে নার্সরা হতবাক। কী করা উচিত তা ভাবতে ভাবতেই সময় কাটছে নার্সদের। তবে নার্সরা খেয়াল করলেন বার বার নিজের পা তুলছে কেনো হনুমানটা? হঠাৎই তাদের একজনের নজরে পড়লো তার ডান পায়ের দিকে। চামড়া উঠে বেশ রক্ত ঝড়ছে পা হতে। বিষয়টি বুঝতে পেরে কোনো মতে সাহস নিয়ে একজন নার্স এগিয়ে গেলেন তার দিকে। ধীরে ধীরে হাত দিয়ে দেখলেন তার ক্ষতস্থান।
ওই নার্স সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এ সময় টেবিলের উপর তখন একেবারে বাধ্য রোগীর মতোই চুপ করে বসে রয়েছে বানরটি! আস্তে আস্তে ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিলাম ওর পায়ে। ব্যান্ডেজ বাঁধার পরে গায়ে দু’বার হাত বুলোতেই ধীরে সুস্থে ওয়ার্ড হতে বেরিয়ে এ গাছ থেকে সে গাছ করতে করতে অদৃশ্য হয়ে গেলো বানরটি!’
সম্প্রতি ভারতের চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতেই এসেছিল ওই বানরটি! বিষয়টি নিয়ে রবিবার দিনভর আলোচনা চলেছে গোটা হাসপাতাল জুড়ে। খবর পৌঁছে যায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শুভ্রাংশু চক্রবর্তীর কাছেও। ওই নার্সের কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘এখানে যে ভালো চিকিৎসা করা হয়, বানরটির মধ্যে বোধ হয় সেই বোধ কাজ করেছিল!’
পথেঘাটে আহত হনুমানের চিকিৎসা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করার নালিকুলের একটি সংস্থার সম্পাদক বিশাল সাঁতরার। তিনি বলেন, কামারকুণ্ডুতে একটি হনুমান কার্যত আমার গায়ে হেলান দিয়ে শুশ্রূষা করার সুযোগ করে দিয়েছিলো।’
তিনি আরও জানান, এ ক্ষেত্রে ঠিক কী কারণে বানরটি হাসপাতালে ঢুকে পড়েছিল, বলা মুশকিল। হতে পারে আগে কোনো বানরকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এবং তার পরে সুস্থ হতে দেখেছে সে। আর সেই অভিজ্ঞতা হতেই সে হাসপাতালে এসেছে।