দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্যাসেঞ্জারের ফেলে যাওয়া ৭ কোটি টাকার সোনা পেয়েও ফিরিয়ে দিলেন এক বাংলাদেশী ট্যাক্সিক্যাব চালক।
মধ্যপ্রাচ্যের স্বপ্ননগরী হিসেবে খ্যাত দুবাইয়ে বাংলাদেশী ক্যাব চালক লিটন চন্দ্র নাথ পালের এমন এক সততায় মুগ্ধ হয়েছে সেদেশের কর্তৃপক্ষ। দেশটির সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, লিটন চন্দ্র নাথের সততার এই দৃষ্টান্তকে সামনে নিয়ে এসে ‘দুবাই ক্যাবি রিটার্নস ২৫ কেজি গোল্ড টু প্যাসেঞ্জার’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের খ্যাতমান পত্রিকা গালফ নিউজ।
বাংলাদেশী ওই ক্যাব চালক লিটন কাজ করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ট্যাক্সি কর্পোরেশনের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান দুবাই ট্যাক্সি কর্পোরেশনে।
জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতোই মধ্যরাতের শেষ শিফটে ডিউটি করছিলেন লিটন। দুবাই বিমানবন্দর হতে চারজন আরোহী তার ট্যাক্সিক্যাবে করে মুরাকাবাত এলাকায় নিজের গন্তব্যে পৌঁছান। তাদের কাছে ছিলো ৪টি ব্যাগ।
প্যাসেঞ্জারদের নির্দিষ্টস্থানে নামিয়ে দিয়ে পুনরায় নিজের ডিউটিতে ফিরে আসেন লিটন। রাত পৌনে ৩টা, শিফট প্রায় শেষের দিকে। এ সময় ট্যাক্সিক্যাবের রেডিওতে আরটিএর কাস্টমার সেন্টার হতে ব্যাগ হারানোর বিষয়টি জানানো হয় সকল ক্যাব চালকদের। রেডিওতে বিষয়টি জানার পর নিজের ক্যাবের ট্র্যাংকে ব্যাগটিকে খুঁজে পান লিটন। ব্যাগটি খুলে ভেতরে ৮টি সোনার বার দেখে চোখ কপালে ওঠে তার। আমিরাতের স্থানীয় মুদ্রায় সোনার বারগুলোর দাম কমপক্ষে ৩৫ লাখ দিরহাম। বাংলাদেশী টাকায় ৭ কোটিরও বেশি।
এতো বিশাল টাকার সোনা দেখেও সততা টলেনি লিটনের। যথারীতি রেডিওতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হাতে অবশেষে সোনার বারগুলো তুলে দিয়ে আসেন লিটন।
এই ঘটনায় আরোহীদের নিকট হতে ধন্যবাদ বাদে আর কোনো পুরস্কার না পেলেও লিটনকে পুরস্কৃত করতে ভুল করেনি দুবাইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আরটিএ’র প্রধান নির্বাহী ড. ইউসুফ আল আলী লিটনকে তাৎক্ষণিকভাবে ১ হাজার দিরহাম পুরস্কার ও এক বছরের জন্য ফ্রি হাউজিংয়ের সুবিধা ঘোষণা করেন। এরপর আরটিএর রেল শাখার সিইও আব্দুল মোহসিন ইবরাহীম ইউনুস লিটনকে ৫ হাজার দিরহাম পুরস্কার দেন। সততার স্বীকৃতিস্বরূপ একটি সার্টিফিকেটও প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার পর লিটন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তার এই খবর পেয়ে গর্বিত তার পরিবার। এই ঘটনা জানার পর তার বাংলাদেশে থাকা মা তাকে অনেক আশীর্বাদ করেছেন বলে জানিয়েছেন লিটন।