দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সবার কাছেই যা প্রকৃত অর্থে বোঝা, তা-ই যেনো সম্পদে পরিণত হয়েছে সুইডেনের কাছে! তাই বিশ্বের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ হয়েও ময়লা আমদানি করছে!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, আবর্জনা ও বর্জ্য আমদানি করছে বিশ্বের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ হিসেবে খ্যাত স্ক্যান্ডিনেভিয়ার এ দেশ সুইডেন!
এমন কথা শুনে নিশ্চয়ই অবাক হয়ে ভাবছেন- আবর্জনা আমদানি! এ আবার কী ধরনের কথা? তবে সত্যিই এই অদ্ভুত ঘটনাই ঘটছে সুইডেনে। তবে নতুন কোনো উদ্ভাবন বা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের জন্য এই ব্যতিক্রমী আমদানি নয়। নিতান্ত বাধ্য হয়েই ময়লা আমদানির জন্য পাশের দেশগুলোর কাছে হাত বাড়িয়েছে সুইডেন!
জানা গেছে, ঐতিহ্যগতভাবেই ময়লা-আবর্জনা নিয়ে সুইডেনবাসী খুব সচেতন। দেশটির অধিবাসীরা তাদের বর্জ্যের প্রায় সবটুকুই ব্যবহার করে নবায়ন করে।
সুইডেনে প্রায় অর্ধেক বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদন হয়ে থাকে এই নবায়নযোগ্য উৎস হতে। এই খাতকে উৎসাহিত করতেই ১৯৯১ সালে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর উচ্চ হারে কর বসায় দেশটি।
তবে অবস্থা এখন এমন দাঁড়িয়েছে, ২০১১ সালের পর হতে সুইডেনের বাসিন্দাদের কাছ থেকে কোনো গৃহস্থালী বর্জ্যই বাইরে আসছে না। গত বছর মাত্র এক শতাংশ বর্জ্য জমিতে পড়েছিলো।
যে কারণে সমস্যায় পড়তে হয়েছে দেশটির ময়লা দিয়ে চালানো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে। কারণ নিজস্ব পদ্ধতিতে আবর্জনা হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সুইডেন বিশ্বে এক নম্বর। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোরও জ্বালানির অন্যতম উৎস এই বর্জ্য জ্বালানি। আবর্জনার অভাবে দেশটির প্রায় অর্ধেকের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।
এই আবর্জনা পোড়ানোর বিদ্যুৎ দিয়ে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশ সুইডেনের ৯৮ লাখ মানুষ প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হতে নিজেদের বাঁচিয়ে থাকে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে পরিমাণ আবর্জনা পোড়ানোর দরকার, সেই পরিমাণ আবর্জনা সুইডেনে মিলছে না। তাই আবর্জনা-আমদানিই এখন দেশটির ভরসা।
এদিকে সুইডেনের এই সংকটের কথা জেনে নরওয়ে, ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশ ইতিমধ্যে আবর্জনা পাঠিয়ে সাহায্য করছে সুইডেনকে। এবার ইতালি, বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া থেকেও আরও আবর্জনা আমদানি করতে চায় সুইডেন।
সুইডেন ভাবছে এই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে। তাই যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশ হতে নিয়মিতভাবেই ময়লা আমদানির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে সুইডেন।
এই ব্যাপারে সুইডিশ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রক কমিটির যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক অ্যান্না কারিন গ্রিপওয়েল জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন আইন অনুযায়ী যে কোনো দেশে ভাগাড় নিষিদ্ধ, তাই দেশগুলো সুইডেনে বর্জ্য পাঠিয়ে থাকে।