দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাদ্দামের ফাঁসির কথা এখনও কেও ভোলেনি। তবে কেটে গেছে ১০ বছর। সাদ্দামকন্যা রাগাদ এবার তার পিতার ফাঁসি বিষয়ে মুখ খুললেন। ফাঁস করলেন অনেক তথ্য।
২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর। পবিত্র ঈদুল আজহার সকাল। জর্ডানের রাজধানী আম্মানের একটি বাড়ি। টেলিভিশনের সামনে বসে রয়েছেন ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বড় মেয়ে রাগাদ হোসেন, সঙ্গে রয়েছেন তার বোন ও তাদের ছেলেমেয়েরা। পর্দার দৃশ্য দেখে তারা সবাই ডুকরে কেঁদে উঠলেন। মুখোশ পরা কয়েকজন লোক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ধাক্কা দিয়ে ফাঁসিকাষ্ঠে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখানেই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। সাদ্দাম হোসেনের চোখেমুখে বিষাদের কোনো চিহ্ন নেই। চোখ থেকে একফোঁটা অশ্রুও ঝরছে না। ফাঁসির পূর্বে তিনি জমটুপি পরতে অস্বীকার করলেন। মুহূর্তেই তাঁর গলায় পরানো হলো ফাঁসির রশি। সে সময় সম্প্রচার বন্ধ করে দিলো ইরাকিয়া টেলিভিশন। তার কয়েক ঘণ্টার পর মোবাইলে ধারণ করা ফাঁসি কার্যকরের একটি ভিডিও ফুটেজ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছিলো। তবে সেই ভিডিও আজ পর্যন্ত দেখেননি সাদ্দামকন্যা রাগাদ।
পিতার ফাঁসির ১০ বছর পর মুখ খুলেছেন রাগাদ। প্রথমবারের মতো মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অনুভূতি।
আম্মান হতে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘ফাঁসি কার্যকরের ওই ভিডিওটি আমি কখনই দেখিনি, দেখতেও চাইনি। বাবাকে মেরে ফেলার পদ্ধতিটা ছিলো অনেক কুৎসিত ও বেদনাদায়ক।
তবে ওটা ছিলো সম্মানিত মৃত্যু। ওই মৃত্যুটি আমার কাছে গর্বের। আমার ছেলেমেয়ে, আমার বোন ও তাদের ছেলেমেয়ে- যারা তাঁকে ভালোবাসে সবার কাছে ওটি বীরের মৃত্যু।’
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সাল হতে ইরাক শাসন করছিলেন সাদ্দাম হোসেন। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সামরিক আগ্রাসন চালানো হলে সাদ্দামকে ক্ষমতাচ্যুত ও গ্রেফতার করা হয়। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ইরাক আক্রমণের নির্দেশ দেন। সাদ্দামের ফাঁসি কার্যকরের পর বুশ বলেছিলেন, এর মাধ্যমে ইরাকি জনগণের ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছে। সেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। তবে সেখান থেকে ইরাকে অস্থিতিশীলতা ও সংঘাত আরও বেড়েছে। চরমপন্থী এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছে। ১০ বছর ধরে চলছে এক নৈরাজ্য।