দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষ মরণশীল। মৃত্যুবরণ করা পৃথিবীর এক অঘোম নিয়ম। কিন্তু সেই নিয়মকে অনেক সময় মেনে নেওয়াটা কঠিন হয়ে যায়। প্রিয়জনকে হারানোর বেদনা মানুষকে বিবেকহীন করে দেয়। যেমন এক স্বামী ৬ রাত ঘুমালেন তার মৃত স্ত্রীর সঙ্গে।
পৃথিবীর শুরু থেকেই ভালোবাসা প্রতিটি মানুষের ভেতরে বিদ্যমান। আর স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় নিজের স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা একটু বেশি থাকে সেটিই স্বাভাবিক। ব্রিটেনের ডার্বিশায়ারের এক বাড়িতে, যে ঘরে কয়েক দশকের বিবাহিত জীবন কেটেছে এক দম্পতির। স্ত্রী ওয়েন্ডির মৃত্যুর পর রাসেল ডেভিসন নামে ওই স্বামী মৃতদেহ সে ঘরেই ৬ দিন রেখে দেন। ৬ রাত সেই ঘরেই ঘুমিয়েছেন তিনি মৃত স্ত্রীর পাশে!
বিবিসি বাংলার এক খবরে বলা হয়েছে, ১০ বছর ক্যান্সারে ভুগে ৫০ বছর বয়সে গতমাসে মারা যান ওয়েন্ডি ডেভিসন। নিজেদের শোয়ার ঘরের খাটে স্বামী রাসেল ডেভিসনের বাহুতে মাথা রেখেবা তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ব্রিটেনের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী শেষকৃত্যের আগে মৃতদেহ এলাকার সুনির্দিষ্ট হিমঘরে রাখতে হয়। কবর দেওয়া কিংবা দাহ করার পূর্বে একজন নার্স মৃত ব্যক্তিকে গোসল করান।
মি ডেভিসন তার স্ত্রীকে এতোটাই ভালবাসতেন যে তিনি সেই নিয়ম ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নেন। নিজ হাতে স্ত্রীকে গোসল করিয়ে, পোশাক পরিয়ে নিজেদের বেডরুমেই ৬ দিন ধরে রেখে দেন। মৃত স্ত্রীর সঙ্গে একই ঘরে ঘুমিয়েছেন ওই ৬ রাত।
মি ডেভিসন বলেছেন, “শেষকৃত্যের পূর্বে আমি তাকে বাড়ির বাইরে কোনো হিমঘরে রাখতে চাইনি। আমিই তাকে দেখে রাখতে চেয়েছিলাম। বেডরুমে রেখেছিলাম যাতে আামি তার সঙ্গেই ঘুমোতে পারি।”
ব্রিটেনের ডার্বিশায়ার কাউন্টি কোর্ট নিশ্চিত করেছে এতোদিন মৃতদেহ ঘরে রেখে নিয়ম ভঙ্গ হলেও আইন ভঙ্গ হয়নি। চিকিৎসককে জানিয়ে মৃতদেহ শেষকৃত্যের আগ পর্যন্ত ঘরে রাখলে আইন ভঙ্গ হয়না।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে ওয়েন্ডি ডেভিসনের জরায়ুর ক্যান্সার ধরা পড়ে। ২০১৪ সালে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন তিনি মাত্র মাস ছয়েক বাঁচবেন।
এমন এক পরিস্থিতিতে জীবনের শেষ দিনগুলো উপভোগ করার জন্য স্বামী-স্ত্রী পুরো ইউরোপ ঘোরার জন্য বেরিয়ে পড়েন। তবে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে মিসেস ডেভিসনের শরীরের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়লে তারা তাদের ডার্বিশায়ারের বাড়িতে আবার ফিরে আসেন। সেখানেই গত ২১ এপ্রিল ওয়েন্ডি ডেভিসন মারা যান।
মি ডেভিসন বলেছেন, “ওয়েন্ডি শান্তিতে মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় পুরোপুরি অচেতন ছিলো সে। আমি ও আমার ছেলে ডিলানের বাহুতে মাথা রেখেই সে চলে যায়।”