দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক নারী মৃত সন্তান পেটে নিয়েই বেঁচে ছিলেন ৪৬ বছর! পেটে মৃত সন্তান নিয়ে এতো দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকার ঘটনা এটিই প্রথম।
আমরা জানি প্রত্যেক মায়ের জন্য সন্তান জন্মদান যেমন সবচেয়ে আনন্দের, ঠিক তেমনি সবচেয়ে কষ্টকর মুহূর্তও।
সন্তান জন্মদান করতে গিয়ে মা অথবা সন্তান যে কারও মৃত্যুও হতে পারে। এ কারণেই অনেক নারীই প্রাণ হারানোর ভয়ে সন্তান জন্মদান করতে চান না।
এই ভয় হতেই মরক্কোর এক নারী গর্ভবতী হওয়ার পরও সন্তান প্রসব না করে হাসপাতাল হতে পালিয়ে গিয়েছিলেন! তিনি ৪৬ বছর ধরে মরা সন্তান পেটে নিয়েই বেঁচে ছিলেন! অবশেষে চিকিৎসকরা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই জোরপূর্বক অপারেশন করে মমি হয়ে যাওয়া সন্তান তার গর্ভ হতে অপসারণ করেছেন! তবে কীভাবে ওই নারী এতোদিন বেঁচে ছিলেন সেটিই প্রশ্ন।
গর্ভের মধ্যেই মারা গেলে সে শিশুর কী ঘটে? যখন শিশু পেটের ভেতরই মরে যায় ও আপনাতেই বের না হয়ে আসে তখন সেটি প্রকৃতপক্ষে পাথরে পরিণত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় লিথোপেডিয়ন বা স্টোন বেবি।
গর্ভের শিশুটি যদি খুব বেশি বড় হয় ও পুনরায় দেহের সঙ্গে মিশে যাওয়ার যোগ্য না হয় সেক্ষেত্রে সেটি শক্ত হয়ে যেতে থাকে। এক সময় সেটি ক্যালসিয়াম কার্বোনেট এর মতো কঠিন পদার্থে পরিণত হয়।
খাদ্য, রক্ত ও হাড় হতে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে দেহ ওই মৃত শিশুটির চারদিকে একটি পাথরের মতো শক্ত আবরণ তৈরি করতে থাকে। এই আবরণটি গর্ভবতীকে শিশুটির মৃত কোষের ক্ষতি থেকেও রক্ষা করে থাকে। শিশুটি স্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে আসতে পারে না!
জাহরা আবু তালিব নামে মরক্কোর ওই নারী ২৬ বছর বয়সে গর্ভধারণ করেন। দুই দিন ধরে প্রসববেদনার পর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
এই ঘটনাটি ঘটে ১৯৪৫ সালে। চিকিৎসা বিজ্ঞান তখনও নিখুঁতভাবে পেট কেটে বাচ্চা প্রসব করানোর কৌশল পুরোপুরি রপ্ত করেনি।
অপারেশন থিয়েটার দেখে ওই নারী জাহরা ভয় পেয়ে যান। সেখানে তিনি আরেকজন নারীকে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মরে পড়ে থাকতে দেখেন। ওই দৃশ্য দেখে তিনি আতঙ্কে হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান।
এরপর আর কখনও তিনি হাসপাতালে যাননি। বিস্ময়কর হলো এরপর আরও কিছুদিন তার প্রসববেদনা হলেও গর্ভের পানি কখনও ভাঙেনি, তিনি কখনও আর সন্তান প্রসব করেননি।
ওই নারী ভেবেছিলেন তার সন্তান হয়তো আপনা-আপনিই বের হয়ে আসবে। তবে তেমনটি আর ঘটেনি। বরং শিশুটি তার গর্ভেই এক সময় মারা যায়। এরপর তার কোনো সমস্যা না হওয়ায় তিনি বিষয়টি চেপে যান। এরপর এই বিষয়টি নিয়ে আর তিনি মাথা ঘামাননি। তিনি স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে থাকেন।
এরপর তিনি ৩টি শিশু দত্তক নেন। সেই দত্তক নেওয়া সন্তানদের ঘরে সন্তান হওয়ায় তিনি দাদীও হন। দীর্ঘ ৪৬ বছর পর একদিন তার তলপেটে ব্যথা শুরু হলে তার এক ছেলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসেন।
কী সমস্যা হয়েছে চিকিৎসকরা প্রথমে বুঝতে পারেননি। তবে স্ক্যাণ করানোর পর তারা বিস্মিত হন। তারা বুঝতে পারছিলেন না তার পেটের মধ্যে আসলে ওটি কী। পরে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন মরা শিশুটি একটি মমিতে রূপান্তরিত হয়েছিল।
অবশেষে চিকিৎসকরা ওই মহিলাকে অপারেশনে রাজি করাতে সক্ষম হন। টানা চার ঘণ্টার অপারেশন শেষে তার গর্ভের ভেতরই ৪৬ বছর আগে মরে যাওয়া শিশুটিকে বের করে আনেন চিকিৎসকরা। এই ৪৬ বছরে শিশুটি মিসরের পিরামিডের ভেতরে থাকা মমির মতোই যায়!
This post was last modified on অক্টোবর ১০, ২০১৭ 11:44 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুরো বিশ্বের জলবায়ুর সঙ্গে তুলনা করলে প্রথমেই উঠে আসে এশিয়ার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয়তার শিখরে আছেন অভিনেত্রী জয়া। দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ক্যাম্পাস বিক্ষোভের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বৈশাখ এলে বাংলা সালের কথা আমাদের মনে পড়ে। আসলে এই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১…