দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ওয়াশিংটনে শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে ৪-৩ গোলে হেরে নিজেদের যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষ করেছে জার্মানী। ম্যাচের ১৩ মিনিটে জোজি অ্যালটিডোরের গোলে আর ১৬ মিনিটে মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগেনের আত্মঘাতী গোলে প্রথমার্ধেই ম্যাচে শক্তিশালী অবস্থায় চলে যায় ক্লিন্সম্যানের যুক্তরাষ্ট্র দল। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার একটু পরেই জার্মানীর হেইকো ওয়েস্টারম্যান এক গোল শোধ করে দিলেও তার কিছুক্ষণ পরেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিন্ট ডেম্পসির জোড়া গোল ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। শেষের দিকে এসে জার্মানীর ম্যাক্স ক্রুজ আর জুলিয়ান ড্রেক্সলার আরও দুইগোল শোধ করলেও তা শুধুমাত্র জার্মানীর হতাশাই বাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে খেলাটির শতবর্ষ পূর্তীতে উদ্যমী হয়েই মাঠে নেমেছিল স্বাগতিকরা। শুরুতেই অ্যাল্টিডোর একটা সুযোগ পেয়ে গেলেও মেটাস্যাকার রুখে দেন তাকে। একটু পরেই আবার সুযোগ পান তিনি, গ্রাহাম জুসি’র রাইট উইং থেকে করা ক্রসে হেডও করেছিলেন কিন্তু, বল পোস্টে ঢোকেনি।
এরপরই জার্মানদের খেলায় জীবন আসে। পুরোপুরি ক্লিয়ার না করা কর্ণার থেকে লেফট উইং দিয়ে বক্সে ঢোকে বল, বেনেডিক্ট হাউডেস প্রথম সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও বল চলে যায় মেটাস্যাকারের কাছে। তিনি ড্যামারকাস বিসলিকে ঝেড়ে ফেলে শট নিলেও বল জালে জড়াতে পারেননি।
কিন্তু যখনই মনে হচ্ছিল জোয়াকিম লো’র দল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে তখনই তাদের ওপর আঘাতটা আসল। ডানদিক থেকে জুসি’র করা দুর্দান্ত ক্রসে ভলি করে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিজের গোলখরা কাটান অ্যালটিডোর।
একটু পরে অবস্থা আরো খারাপ হয়। বেনেডিক্ট হাউডেস সহজ পাস দেন গোলকিপার স্টেগেনকে, স্টেগেনের ভুলে জার্মানীর নিজেদের জালেই জড়ায় বল। ম্যাচে তারা পিছিয়ে যায় ২-০ তে।
এরপর ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে জার্মানী। আন্দ্রে স্কার্ল ডানদিক থেকে কয়েকজন প্লেয়ারকে কাটিয়ে শট নেন, কিন্তু সফল হননি। মিরোস্লাভ ক্লোসা একবার বল জালে জড়াতে সমর্থ হলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় তা।
দ্বিতীয়ার্ধে আরো দ্রুতগতিতে আক্রমণে ওঠে জার্মানী, দুই ফ্ল্যাঙ্ক দিয়ে আক্রমণ করে তারা। ৭ মিনিটের মাথায় গোলেরও দেখা পেয়ে যায় তারা। বদলি হিসেবে নামা ম্যাক্স ক্রুজের কর্ণার থেকে হেড করে বল জালে জড়ান ওয়েস্টারম্যান, খেলায় ফিরে আসে জার্মানী।
কিন্তু আক্রমণভাগে শাণিত হলেও রক্ষণভাগে তাদের দুর্বলতা ভালভাবেই চোখে পড়ছিল। ৬০ মিনিটে এই দুর্বলতার মাশুল দিতে হয় তাদের যখন অ্যাল্টিডোরের ক্রস জালে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ৩-১ এ এগিয়ে দেন ডেম্পসি।
এর ৪ মিনিট পরেই জার্মানীর পরাজয় প্রায় নিশ্চিত করে দেন ডেম্পসি। বাম পায়ের দুর্দান্ত এক বাঁকানো শটে স্টেগানকে পরাস্ত করেন তিনি, স্কোরলাইন হয় যুক্তরাষ্ট্র ৪ – জার্মানী ১।
ম্যাক্স ক্রুজ যখন ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া অসাধারণ এক শটে স্কোর ৪-২ করলেন, জার্মানীর সমর্থকরা তখনও হার এড়ানোর আশা পুষে রেখেছিল। সেই সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বল হয় যখন ১০ মিনিট বাকি থাকতে আরো এক গোল শোধ করে দেন ড্রেক্সলার। ম্যাচের দুর্দান্ত এক সমাপ্তির দিকে তাকিয়ে সবাই। জার্মানী বাকি সময়টা স্কোর সমানে সমান করার অনেক চেষ্টা করেছে, স্টপেজ টাইমে পেনাল্টির আপিলও করেছিল, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। যোগ্য দল হিসেবেই জয়ীর ভূমিকায় মাঠ ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্র।
তথ্যসূত্রঃ গোলডটকম