Categories: সাধারণ

শত কোটি টাকার মালিক এখন ত্রাণের জন্য লাইনে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক সময় শত কোটি টাকার মালিক ছিলেন তিনি। কিন্তু এখন তিনি রাস্তার ফকিরে পরিণত হয়েছেন। এখন তিনি ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছেন!

মিয়ানমারের মংডু থানার ফকিরা বাজার গ্রামের এই বিত্তশালী রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদ (৬০)। রাখাইনের ফকিরাবাজার ৪টি স্বর্ণের দোকান ছিল তার। চাষাবাদের জমিও ছিল ৮০ কানি। গরু-মহিষ-ছাগল ছিল বলা যায় অগণিত। ১০/১২ জন কৃষক সারাবছর কাজ করতো তার অধিনে। দু’তলা গাছের বাড়ীতে স্ত্রী পরিজন কামলা সহ ১৮/২০ জনের সংসার তার সুখেই কাটছিল। মিয়ানমার জান্তারা একদিনেই আগুন দিয়ে নিঃস্ব করে ফেলেছে দিল মোহাম্মদকে। এখন কুতুপালংয়ের ঝুপড়িতে ত্রাণের জন্য কাঙ্গালের মতো চেয়ে থাকতে হচ্ছে তাকে।

জানতে চাওয়া হলে সে আরো বলেন, এলাকায় সম্পদশালী এবং তৎকালীন হুক্কাট্টা (চেয়ারম্যান) হিসেবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসহ রাখাইনের লোকজন তাকে সমিহ করে চলতো। প্রশাসনের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের সঙ্গে তার মেলামেশাও ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা আমাকে কথাও দিয়েছিল এখানে নির্ভয়ে থাকা যাবে, কেও কিছু করবে না। তবে সে কথা আর কাজে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। গত ১৫ দিন আগে এক রাতেই মিয়ানমার সেনারা আমাকে বাড়ী থেকে ডেকে তোলে, মনে করছিলাম হয়তো তারা কোনো বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আলাপ করতে এসেছে। এমন মনে করে আমি বাড়ীর লোকজনদের চাঁ-নাস্তা তৈরি করতে বলি।

Related Post

তখন রাখাইনের সশস্ত্র যুবকরা আমার স্বয়ং কক্ষে ঢুকে র্স্বণালংকার লুট করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার বুকে বন্দুক তাক করে বলে এই মুহূর্তে বাড়ী হতে বের হয়ে যাও, নইলে সবাইকে পুড়ে মরতে হবে। এ সময় আমার হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হওয়ার মতো অবস্থা হয়। প্রাণ বাঁচাতে এক কাপড়ে সবাইকে নিয়ে বাড়ী থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিয়ানমার সেনারা দ্বিতল বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই আগুনের আলোতে আমরা অনেক দুরে চলে এসেছি। কথাগুলো বলতে বলতে তার দু’চোঁখ বেয়ে শুধু পানি ঝরছিল। তিনি আরও জানান, এর আগে হায়েনার দল আমার স্বর্ণের দোকান লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা আমার মোটেও মনে ছিলনা। আসার সময় পাড়ার প্রতিবেশিরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট এবং জ্বালিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। ওইসব দোকানগুলোতে প্রায় শত কোটি টাকার (কিয়াতের) স্বর্ণালংকার ছিল বলে তিনি জানিয়েছেন।

এরপর বাংলাদেশে এসে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছি। আমার গ্রামের লোকজন এসে একটা থাকার জন্য পলিথিনের ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। সে ঘরে অবস্থান নিলেও আমার অন্তর আত্মা বারবার কেঁপে উঠছিল, মিয়ানমারের সেনাদের বর্বরোচিত আচারণ ও চোখের সামনে বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার দৃশ্যটি আমাকে হয়তো সারাজীবন তাড়া করে ফিরবে। এক সময়ের কোটিপতি অথচ আজ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কারণে রাস্তার ফকিরে পরিণত হয়েছেন।

This post was last modified on অক্টোবর ২৫, ২০১৭ 9:43 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকার ২০২৩-২৪ সেশনের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডিপিএস এসটিএস সিনিয়র স্কুল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হয়েছে ডিপিএস এসটিএস স্কুল…

% দিন আগে

এসসিবি-চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৩: ‘সেরা কৃষি প্রতিষ্ঠান’ স্বীকৃতি পেলো আইফার্মার

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক অ্যান্ড চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৩- এর…

% দিন আগে

দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রীর ছোটবেলার ছবি: বলুনতো এটি কে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে ছবিটি আপনারা দেখছেন সেটি দেশের জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রীর ছোটবেলার…

% দিন আগে

ওয়ারেন্ট ঠেকাতে মরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: গ্রেফতার আতঙ্কে নেতানিয়াহু!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের…

% দিন আগে

ছবিতে লুকিয়ে রয়েছে একটি কাঁচি: কেবলমাত্র বুদ্ধিমানেরাই ৩০ সেকেন্ডে খুঁজে বের করতে পারবেন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছবিতে লুকিয়ে রয়েছে একটি কাঁচি। তবে এই কাঁচির প্রতিকৃতিটি এই…

% দিন আগে

মাছ ধরার এক অসাধারণ দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে