দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক ব্যক্তি মৃত্যু ভয়ে নারকেল গাছে কাটালেন তিন বছর! ২০১৪ সাল হতে ২০১৭, এই ৩ বছরে তিনি একদিনের জন্যও নিচে নামেননি।
ওই ব্যক্তির নাম গিলবার্ট সানচেজ। ফিলিপাইনের আগুসান দে সার প্রদেশের লা পাজ শহরের ওই ব্যক্তি গত ৩ বছর ধরে ষাট ফুট উঁচু একটি নারকেল গাছের উপর বসবাস করেন। ২০১৪ সাল হতে ২০১৭, এই ৩ বছরে তিনি একদিনের জন্যও নিচে নামেননি। খাওয়া, ঘুম হতে শুরু করে যাবতীয় প্রাকৃতিক কাজ তিনি সারেন ওই গাছের উপর বসে। চলতি মাসে তাকে গাছ কেটে জোর করে নিচে নামানো হয়।
ঘটনার শুরু হয় যেভাবে। ২০১৪ সালের গোড়ার দিকের ঘটনা। স্থানীয় এক গোলযোগ চলাকালীন সানচেজের মাথায় বন্দুকের গুলি এসে ঢোকে। মারাত্মক আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান গিলবার্ট সানচেজ। সুস্থ হওয়ার পর সারাক্ষণ একটি ভয় তাকে তাড়া করে ফিরতো। তার ধারণা ছিলো কেও তাকে প্রাণে মেরে ফেলতে চাইছে। এই মৃত্যু ভয় হতে বাঁচতে তিনি নারকেল গাছে উঠে পড়েন।
সানচেজের মা উইনিফ্রিদা সানচেজ হতে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশী সবাই তাকে গত ৩ বছরে বহুবার বহুভাবে বুঝিয়ে নিচে নামার জন্য অনুরোধ করেছেন। তবে কোনো অনুরোধেই তিনি কর্ণপাত করেননি। প্রবল ঝড় বৃষ্টি কিংবা পোকামাকড়ের কামড় কোনো কিছুই তাকে নারকেল গাছ হতে নামাতে পারেনি। এমনকি বাবা হওয়ার সংবাদ শুনেও গিলবার্ট সানচেজ নিচে নেমে আসেননি। যে কারণে বাধ্য হয়ে তার মা একটি দড়িতে বেঁধে তার খাবার, কাপড়-চোপড় এবং সিগারেট উপরে পাঠিয়ে দিতেন যাতে সে বাঁচতে পারে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়লে লাপাজ পৌর কর্তৃপক্ষ সানচেজকে নিচে নামানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরপর ৫০ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল গাছ কেটে তাকে নিচে নামিয়ে আনতে বাধ্য করে।
নিচে নামিয়ে আনার পর সানচেজের শরীরের দিকে তাকিয়ে সবাই চমকে ওঠেন। দীর্ঘ দিন অযত্ন-অবহেলা ও পোকামাকড়ের কামড়ে তার শরীরে বড় বড় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তার পা অনেকটা বেকে গেছে। বর্তমানে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি।