দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বর্বরতার সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ করলো দেশটির সেনা সমর্থক ও জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা! তাদের এই মিছিল-সমাবেশ বিশ্ববাসীকে হতভম্ব করেছে।
সব ধর্মেই অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা বল হলেও বার্মার বৌদ্ধরা ধর্মের বাইরে গিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির কথায় চিন্তা করছেন। দেশটির সেনাবাহিনীর বর্বরতার সমর্থনে মিয়ানমারে মিছিল-সমাবেশ করে অন্তত সেই প্রমাণ দিলেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। মানবিক দিকটা তারা বেমালুম ভুলে গেলেন!
রাখাইন রাজ্যের মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী সাম্প্রতিক সময় যে বর্বরতা চালিয়েছে তারই সমর্থনে বিশাল মিছিল এবং সমাবেশ করেছে দেশটির সেনা সমর্থক ও জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা!
বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল এক খবরে বলেছে, নির্যাতনের মুখে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে চারদিক হতে সমালোচনার মুখো পড়তে হচ্ছে।
এমন এক পরিস্থিতির মধ্যেও গত রবিবার দেশটির সাবেক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে দুই হাজারের বেশি সেনা সমর্থক, বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী এবং ভিক্ষুরা অংশ নেয়।
ওই মিছিল-সমাবেশে অংশ নেওয়া জাগারা নামের এক প্রবীণ বৌদ্ধ ভিক্ষু বলেছেন, ‘আমি আপনাদের সেনাবাহিনীকে পূর্ণ সমর্থন করার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ একমাত্র সেনাবাহিনী শক্তিশালী হলেই আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা হবে।’ (যদিও মানুষ খুন করে আগুন দিয়ে ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে কি সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি খোলাসা করেননি)।
খবরে বলা হয়েছে যে, রাখাইন রাজ্যে সর্বশেষ সহিংসতায় গত ২৫ আগস্টের পর ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের দাবি হলো, দেশটির পুলিশী চৌকিতে হামলার জবাব দিতে এই সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়!
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো মিয়ানমারের এই দাবি মানতে নারাজ। তারা এটিকে মানবতাবিরোধী ও জাতিগত নিধন অভিযান হিসেবে অভিহিত করে আসছে। অন্তত মিয়ানমারের কর্মকাণ্ড দেখে সেটিই বোঝা যাচ্ছে। ২৫ আগস্ট পুলিশী চৌকিতে হামলার বদলা হিসেবে ১০ লাখ মানুষের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া, হত্যা-নির্যাতন করে দেশ থেকে বের করে দেওয়া কোনা মানুষের কাজ হতে পারে না বলেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিশ্ববাসীকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।