দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মারণব্যাধি ক্যান্সার নিয়ে গবেষকদের গবেষণার যেনো শেষ নেই। তারা দীর্ঘদিন যাবত গবেষণা করে টীকা আবিষ্কারের কথা জানালেও এখনও পুরোপুরিভাবে কার্যকরি কোনো ওষুধ আসেনি। এবার ক্যান্সার সারানোর নতুন পদ্ধতি আবিষ্কারের খবর দেওয়া হয়েছে।
এই নতুন পদ্ধতি আবিষ্কারক হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ৪৪ বছর বয়সী ডিমাস প্যাডিলা। একটি কোম্পানির প্রতিনিধি এই যুবক কয়েক বছর ধরেই গলার ক্যান্সারে ভুগছিলেন। প্রথমবার অপারেশন শেষে থেরাপি নেওয়ার পর পরীক্ষায় দেখা যায় ক্যান্সার কোষ ধ্বংস হয়েছে। তবে দুই বছর পর আবার ফিরে এলো ওই মারণ ব্যাধিটি। আবার তাকে অপারেশন করতে হলো। আবারও থেরাপির পর পরীক্ষায় ধরা পড়লো রোগমুক্ত হয়েছেন তিনি। এরপর এক বছরের মাথায় আবার টিউমারটি দেখা দিলো। চিকিৎসকরা নিশ্চিত হলেন তার শরীর হতে ক্যান্সার কোষ পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হচ্ছে না।
কোনো একদিন টাম্পার মোফিট ক্যান্সার সেন্টারের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ফ্রেডারিক লকির সঙ্গে প্যাডিলার পরিচয় ঘটলো। তিনি লকিকে তার কষ্টের কথা খুলে বললেন। তখন লকি তাকে জানালেন যে, তিনি চিমারিক এন্টিজেন রিসেপটর টি-সেল থেরাপি (সংক্ষেপে সিএআর টি-সেল থেরাপি) নিয়ে গবেষণা করছেন দীর্ঘদিন যাবত। এটির মাধ্যমে জেনেটিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোগীর নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো শক্তিশালী করে তোলা হয়ে থাকে। তিনি প্যাডিলার রক্ত হতে টি-সেল সংগ্রহ করলেন। তারপর বিজ্ঞানীরা ওই সেলগুলোতে নোভেল জিন প্রবেশ করিয়ে দিলেন। যে কারণে কোষগুলোর এমন এক প্রকার শক্তি তৈরি হলো যাতে এগুলো ক্যান্সার কোষের বিশেষ প্রোটিনকে আক্রমণ করে খুব সহজে তাকে শুষে নিতে পারে।
পরবর্তীতের এই কোষগুলোকে আবারও প্যাডিলার রক্তে প্রবেশ করানো হলো। এর ফল হলো সত্যিই অকল্পনীয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে তার টিউমার শুকাতে শুকাতে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলো। এরপর প্রায় ১৮ মাস পার হয়ে গেছে। তার শরীরে কোনো টিউমার ফিরে আসেনি। উবে গেছে তার শারীরিক সব ধরনের জটিলতাও। তিনি দিব্যি সুস্থ শরীরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করলেন যে, ক্যান্সার হতে তিনি মুক্তি পেয়ে গেছেন।
চিকিত্সকরা জানিয়েছেন যে, এই গবেষণায় অংশ নেওয়া ১০১ জন রোগীর মধ্যে অর্ধেকের বেশিই ইতিমধ্যে পুরোপুরিভাবে মুক্তি পেয়েছেন ক্যান্সার হতে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন জিন থেরাপি নামে পরিচিত এই চিকিত্সা পদ্ধতির অনুমোদন দিতে রাজিও হয়েছে এর সফলতার হার দেখে। তবে অন্যান্য চিকিত্সা পদ্ধতির মতো এরও কিছুটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।