দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মিসরে সেনাপ্রধান ফাত্তাহ আল সিসির বিরুদ্ধে আদালত রায় দিয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিসহ দেড় হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার জন্য সরকারি তালিকার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
মিসরে আপিল আদালতের এক রায়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিসহ দেড় হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে চাওয়া হলে সরকারি তালিকার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে। মুরসি ও ১৫৩৭ জন মিসরীয়’র করা আবেদনের প্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
২০১১ সালে গণঅভ্যুত্থানে হোসনি মোবারকের পতনের পর ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মুরসি। তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর হতেই তিনি নিজের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার নানা পথ অবলম্বন করেন। তার পক্ষে-বিপক্ষে মানুষ রাস্তায় নামলে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয় দেশটিতে।
সেই অস্থিরতার মধ্যে সেনাপ্রধান ফাত্তাহ আল সিসিরের নেতৃত্বে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিসরীয় সেনাবাহিনী। একপর্যায়ে বিভিন্ন অভিযোগে মুরসিকে বন্দি করা হয়। দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডও। বর্তমানে তোরা নামের এক অখ্যাত কারাগারে বন্দি আছেন সাবেক এই মিসরীয় প্রেসিডেন্ট মুরসি।
ওই তালিকায় মুরসি ছাড়াও বিখ্যাত ফুটবল তারকা মোহামেদ আবু ত্রেইকাও রয়েছেন। মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাদের সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভূক্তির সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার। এর প্রতিবাদে আদালতে আপিল করেন মুরসি।
২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে বিক্ষোভকারীদের নির্যাতন এবং গ্রেফতারের আদেশ দেওয়ার অভিযোগে ২০১৫ সালের এপ্রিলে মুরসিকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কাতারকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহের অভিযোগে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দেওয়া হয় আরও ২৫ বছরের কারাদণ্ড। বিচার বিভাগ অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আরও ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাকে।
ডিটেনশন রিভিউ প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুরসিকে যে অবস্থায় রাখা হয়েছে তা মিসর এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নির্যাতনের শামিল। বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসিকে নির্যাতনকারী হিসেবে দায়ী করা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।