দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছাগল কখনও একটি রাজ্যের রাজা হতে পারে? হয়তো এমন কথা শুনে বিস্মিত হতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে ঠিক তাই ঘটেছে আয়ারল্যান্ডের কিলোরগন শহরে!
আয়ারল্যান্ডের কিলোরগন শহরের বর্তমান রাজা হলো একটি ছাগল! রূপসী রাণীর পাশে মাথায় রাজমুকুট পরে রাস্তায় হেঁটে বেড়াচ্ছে ওই ছাগল। সেদেশের মানুষজন তখন সম্মানের সঙ্গে কুর্নিশ করছে তাকে! ভাবতে অদ্ভুত লাগলেও বাস্তবে এমনটিই হয়ে আসছে পুরো আয়ারল্যান্ডজুড়ে। রাজার সিংহাসনে অধিষ্ঠান উপলক্ষে শহরজুড়ে সপ্তাহব্যাপী চলে এমন আজব উৎসব!
এমন আজব একটি উৎসবটিকে বলা হয় ‘পাক ফেয়ার’। আর ওই রাজাকে ডাকা হয় ‘কিং পাক’। এখন প্রশ্ন আসতে পারে কেনো এমন একটি উৎসব?
তবে এমন ব্যতিক্রমি কাহিনীর গল্পে রঞ্জিত ইতিহাসও দীর্ঘদিনের। তবুও বহুল প্রচলিত কাহিনী হলো, সপ্তদশ শতাব্দীর কথা। তখন আয়ারল্যান্ডের রাজা ছিলেন অলিভার করমওয়েল। তিনি বাস করতেন এই শহরটিতে। এক ফসল কাটার উৎসবে অংশ নেওয়ার সময় রাজার পোষা এবং প্রিয় ছাগলটি হঠাৎ হারিয়ে যায় পাহাড়ে। নিঃসন্তান সেই রাজা ছাগলটিকে সন্তানের মতো করেই পালন করতেন। সন্তান সমতুল্য ছাগল হারানোর শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজা অলিভার করমওয়েল। এই অসুস্থতাই এক সময় তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। সেই ছাগলকে স্মরণ করে প্রতিবছর পাহাড় হতে বন্য ছাগল ধরে এনে পাক ফেয়ারের মাধ্যমে তাকে রাজা বানানো হয়। প্রতিবছর আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই উৎসব শুরু হয়ে চলে টানা ৭ দিন পর্যন্ত।
তখন ওই এক সপ্তাহ ছাগল রাজার মতোই আয়েশি ও সম্মান নিয়ে জীবনযাপন করে। ৭ দিন পার হওয়ার পর রাজত্ব ও রাণী হারালেও রয়ে যায় রাজার রেশ তার মধ্যে। সেই বন্য ছাগল পায় রাষ্ট্রীয় বিশেষ অতিথিশালায় থাকার বিশেষ সুযোগ। মৃত্যু পর্যন্ত আয়েশিভাবেই শেষ হয় এইসব ‘৭ দিনের রাজা’ ছাগলের জীবন কাহিনী।