দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ ধ্বংস নিয়ে বিশ্বের নেতৃবৃন্দ ঐক্যমতে পৌঁছেছেন। তবে এখন অনেকের মধ্যে অবিশ্বাস দানা বাঁধছে।
সিরিয়া সরকারের জিম্মায় থাকা রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ ধ্বংস বা সরিয়ে নিতে শেষমেষ একটা বোঝাপড়া হয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। অনেক তিক্ত বাগবিতণ্ডা ও লম্বা আলোচনা শেষে গত শনিবার মতৈক্যে পৌঁছেছে উভয় পক্ষ। তবে এ মতৈক্যেকে পরাশক্তি দুটির মধ্যকার সম্পর্কের অগ্রগতি হিসেবে এখনই চিহ্নিত করতে নারাজ বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, স্নায়ুযুদ্ধকালীন বৈরিতার জেরে এখনো পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটির মধ্যে যে পারস্পরিক আস্থাহীনতা রয়েছে, সহসা তা দূর হওয়ার নয়। তবে তাঁরা স্বীকার করছেন, দীর্ঘদিনের বরফ শীতল সম্পর্কে একটু হলেও উষ্ণতার ছোঁয়া এই সমঝোতা সেই ইঙ্গিত বহন করছে।
মস্কোভিত্তিক গবেষণা সংস্থা- সেন্টার ফর অ্যানালিসিস অব মিডলইস্ট কনফ্লিক্টসের প্রধান আলেক্সান্দার শুমিলিন বলেন, এ সমঝোতায় ‘অবিশ্বাসের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা মস্কো-ওয়াশিংটন সম্পর্কের কোনো উন্নতি হবে না।’ তাঁর মতে, ‘এই চুক্তিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অবস্থানটা এমন দাঁড়িয়েছে যে তিনি বাজে লোক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিপক্ষে জয় পেয়েছেন। কিন্তু তাঁর (পুতিন) লক্ষ্য আসলে শান্তির জন্য লড়াইয়ের ভান করে অপরাধী প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে রক্ষা করা।’ তবে সিরিয়া ইস্যুতে দুই পক্ষের এক ছাতার তলে দাঁড়ানোর ব্যাপারটিকে ইতিবাচক বলেই মনে করেন শুমিলিন। সিরিয়া ইস্যুতে মতভিন্নতা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নজরদারির তথ্য ফাঁসকারী এডওয়ার্ড স্নোডেনকে মস্কোয় আশ্রয় দেওয়ার বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা রয়েছে। সিরিয়া নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ থেকেই যায়।
অপর দিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা- সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অ্যানথনি কর্ডেসম্যানের মতে, ওয়াশিংটনকে মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় বাধ্য করাতে এই এক সিরিয়া ইস্যুই যথেষ্ট, ‘যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে রাশিয়াকে বাদ দিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করবে না।’ তাদের এ যোগাযোগ স্নায়ুযুদ্ধ যে অতীত হয়ে গেছে, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট করে।
সমঝোতাকে স্বাগত জানালেন ওবামা
সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস বা অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে হওয়া সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সমঝোতা অনুযায়ী নিরস্ত্রীকরণে সিরিয়ার সরকার ব্যর্থ হলে তাদের সামরিক হামলার মুখে পড়তে হবে।