দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চাঞ্চল্যকর নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আলোচিত ৭ খুনের মামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেনসহ ২৬ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ (সোমবার) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই রায় ঘোষণা করেছেন। এই মামলার বাকি ৯ আসামিকে ১০ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই রায়কে ঘিরে সকাল হতে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়া ও এর আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার হতে সকাল পৌনে ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয় এই মামলার প্রধান আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১১-এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট (চাকুরিচ্যুত) কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, চাকরিচ্যুত কমাণ্ডার এম এম রানা, চাকরিচ্যুত মেজর আরিফ এবং চাকরিচ্যুত ল্যান্স নায়েক বেলালকে। এ সময় মামলার বাকি ১৮ আসামিকেও নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার হতে আদালতে নেওয়া হয়।
গত ৩০ নভেম্বর দুই মামলার ওপর শুনানি শেষে ১৬ জানুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছিলো আদালত। ওইদিন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনসহ ২৩ জন আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ৩৫ আসামির মধ্যে ২৩ জন কারাবন্দি রয়েছেন। এদেরমধ্যে ২১ জন নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দেন।
এই মামলায় সাক্ষী করা হয় ১২৭ জনকে। ১০৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। ২০ জন সাক্ষী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড হতে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জন। এর ঠিক ৩ দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ৬টি লাশ। পরেরদিন পাওয়া যায় আরেকটি লাশ।
নিহত অন্যান্যরা হলেন, নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন, তাজুল ইসলাম, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
২০১৪ সালের ২৮ এপ্রিল নিখোঁজ নাসিক কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি প্রথম মামলা করেন। তারপর ৮ মে নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দ্বিতীয় মামলাটি করেন।
২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে চার্জ গঠনের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়। মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন ভারতীয় পালিয়ে গেলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতে গ্রেফতার হওয়া নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।