দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজকাল এমন কথা শোনার কথা নয়। কারণ আমাদের দেশেও এমন এক সময় ছিল যখন গ্রামে-গঞ্জে শৌচাগার ছিল না। বনে-জঙ্গলে ওই কাজটি সারতে হতো গ্রামের মানুষকে। তবে এখনকার এই আমলেও শোনা গেলো এমন কথা। শৌচাগার না থাকায় শ্বশুরকে শেষ পর্যন্ত থানায় নিলেন বৌমা!
বিয়ের পর বৌমা দেখলেন বাড়িতে শৌচাগার নেই। তাই দিনের পর দিন ধরে লজ্জার মাথা খেয়ে দিনে-দুপুরেও প্রাকৃতিক কাজ সারতে ছুটতে হয় বাড়ির আশাপাশের ঝোপঝাড়ে! বারবার বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণের কথা বলেও কর্ণপাত করেনি কেওই। তাই বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেই শ্বশুরমশাইকে থানায় টেনে নিয়ে গেলেন বৌমা। তারপর রীতিমতো থানায় গিয়ে পুলিশের সামনে শ্বশুরমশাইকে দিয়ে বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণের জন্য বন্ড সই করিয়ে তবেই মুক্তি দিলেন!
এমন বিস্ময়কর ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যের মুজাফফরপুর জেলাস্থ মীনাপুর ব্লকের ছেজ্ঞননেউরা গ্রামে।
শ্বশুরবাড়িতে শৌচাগার না থাকায় মুজাফফরপুরের নারী পুলিশ স্টেশনে শ্বশুর এবং ভাসুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
ওই গৃহবধূ জানিয়েছেন, বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণের জন্য তিনি বারবার শ্বশুর এবং ভাসুরের কাছে অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়নি। তার অনুরোধে কেওই কর্ণপাত করেননি। যে কারণে ঝোপঝাড়ে প্রাকৃতিক কাজ সারার ভয়ে ওই গৃহবধূ বছরের বেশির ভাগ সময়ই বাপের বাড়িতে কাটাতে বাধ্য হন।
ওই নারী জানিয়েছেন, তার স্বামী কর্মসূত্রে তামিলনাড়ুতে থাকেন। বছরে দু-একবার বাড়িতে ফেরেন। স্বামী বাড়িতে ফিরলেই তখন ওই গৃহবধূ শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। এরপর স্বামী কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনিও ফিরে যান তার বাপের বাড়িতে। দিনের পর দিন ধরে এই সমস্যা চলতে থাকায় অগত্যা শ্বশুর এবং ভাসুরের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই নারী।
ওই গৃহবধূর অভিযোগের পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ অভিযুক্ত শ্বশুর ও ভাসুরকে থানায় ডেকে পাঠান। সেখানে গৃহবধূর চাপের মুখে পুলিশের কাছে শ্বশুরমশাই বন্ড সই করেন এবং জানান, শীঘ্রই তিনি বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণ করবেন। পুলিশ এক সপ্তাহের মধ্যে শৌচাগার নির্মাণের নির্দেশ দিলেও শ্বশুর আবেদন জানিয়ে বলেছেন, শৌচাগার নির্মাণের জন্য অর্থ জোগাড় করতে তার কিছুদিন সময়ের প্রয়োজন। সেই সময় যেনো তাকে দেওয়া হয়। এরপর গৃহবধূ শ্বশুরের সেই বন্ড সইয়ের পর থানা হতে তার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।