দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক পায়ে হেঁটে রোগী দেখেন এক ব্যক্তি! এমন কথা শুনে যে কেও আশ্চর্য হতে পারেন। বাস্তবে এটিই সত্য। দীর্ঘ ৩৯ বছর ধরে গ্রামে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা সেবা দেন তিনি।
সত্যিই এমন ব্যক্তি মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ আমাদের দেশে কোনো ব্যক্তির পা না থাকলেই মানুষের কাছে হাত পাতা শুরু হয়। পা নাই বলে খোড়ার উসিলা দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির মতো পেশা বেছে নেওয়া হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। তবে চীনের এই ব্যক্তি ৩৯ বছর ধরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। তার এক হাতে ব্যাগ! অন্যহাতে স্ট্রেচার! এভাবেই গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে রোগীদের সুস্থ করে তোলার কাজে নিজেকে সব সময় নিয়োজিত রেখেছেন।
চীনা গণমাধ্যমে ৫৭ বছর বয়সী ডাক্তার লি শানজোকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে মানবিকতার এক অপার দৃষ্টান্তের বাস্তব চিত্র।
জানা গেছে, সলি শানজো একজন প্রতিবন্ধী; তার একটি পা নেই। ১৬ বছর বয়সে ডাক্তারের অবহেলার কারণে তার একটি পা হারাতে হয়। এরপর তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, যে করেই হোক নিজে একজন ডাক্তার হয়ে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিবেন। তার মতো আর কাওকে যেনো এমন নিদারুণ পরিণতি ভোগ করতে না হয়, সেজন্যই চালিয়ে গেছেন কঠোর পরিশ্রম। এভাবেই নিজেকে একজন যোগ্য চিকিৎসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন লি শানজো।
গত ৩৯ বছর ধরে লি শানজো লোহার তৈরি একটি স্ট্রেচারে ভর করে গ্রামের মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। আবার দূরের মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য কিনেছেন একটি চার চাকার ভ্যান গাড়ি। সেই ভ্যানগাড়িতে চড়েই দূরের রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন লি শানজো। তবে এই চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি কোনো ফি নেন না। ইতিমধ্যে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে লি শিনজো ২০টি জাতীয় সনদও অর্জন করেছেন।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে লি বলেছেন, এই সম্মাননা আমার জন্য অবশ্যই গর্বের। মৃত্যুর আগেরদিন পর্যন্ত আমি গ্রামের দরিদ্র-অবহেলিত মানুষদের জন্য চিকিৎসা সেবা করে যেতে চাই। তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।