দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিয়ের মাত্র ১২ দিনের মাথায় স্বামী জানতে পারলেন, তার স্ত্রী আসলে একজন পুরুষ! এই ঘটনার পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই স্বামী।
গ্রেফতার করা হয়েছে তার স্ত্রী-রূপী যুবককে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়াতে। গত ২৭ মে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দিয়েছে হংকং-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
গত এপ্রিলে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন এই দম্পতি। তবে বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই স্ত্রীর আচরণে ওই তরুণের মনে সন্দেহ জাগতে থাকে। পরে তিনি জানতে পারেন যে, এতোদিন তিনি যার সঙ্গে প্রেম করেছেন এবং যাকে বিয়ে করেছেন, তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন ছেলে।
ওই তরুণের নাম হলো একে। তিনি ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের নারিংগুল অঞ্চলের একজন বাসিন্দা। ২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদিনদা কানজা নামে এই নারীর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। একসময় দু’জনে দেখা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একে বলেন, কানজা সব সময়ই মুসলিম ঐতিহ্য অনুযায়ী বোরকা পরে থাকতেন। যখনই তার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন, তখনই হিজাব পরেই আসতেন।
একে বলেন, ইসলাম ধর্মের অনুশাসনের প্রতি তার এই নিষ্ঠা দেখে তিনি কখনও বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেননি। এটা নিয়ে তার বিরক্তিবোধও লাগেনি কখনই।
যখন দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তখন কানজা জানালেন, তার পরিবারে এমন কেও নেই, যারা এই বিয়েতে থাকতে পারেন। তাই একের বাড়িতেই ১২ এপ্রিল বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিলো।
বিয়ের সময় কানজা যৌতুক হিসেবে নিজের তরফ হতে ৫ গ্রাম সোনাও নিয়ে আসেন। তাদের বিয়ে হলেও সেই বিয়েটি নিবন্ধন করা হয়নি।
বিয়ের মাত্র ১২ দিনের মাথায় একের মনে কানজার আচার-আচরণে সন্দেহ জাগে। তিনি দেখলেন কানজা তার (একে) পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মেলামেশা করতেই চান না। আবার বাড়ির ভেতরও তিনি পর্দা করছেন।
এমনকি একে যখনই তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাইতেন, তখনই কানজা কোনো না কোনো বাহানা খাড়া করতেন।
তখন একের মনে সন্দেহ আরও দানা বাঁধে। কানজা তার পরিবারের যে গল্প বলেছিলেন, সেই সূত্র ধরে তিনি খোঁজ শুরু করে দেন। সেই অনুসন্ধানেও জোর ধাক্কা খেয়েছেন একে। তিনি জানতে পারেন যে, কানজা মোটেও অনাথ নন। তার বাবা-মা বেঁচে আছেন ও ভালো আছেন।
একে সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি আরও জানতে পারেন, সেটি হচ্ছে কানজা প্রকৃতপক্ষে একজন ছেলে। ২০২২ সাল থেকেই তিনি মেয়েদের পোশাক পরছেন।
কানজার মা-বাবাও সন্তানের বিয়ের কথা শুনে থ খেয়ে যান। তারা ‘জামাতা’ হিসেবে একের নাম কিংবা তাদের সম্পর্কের কথা কোনো দিন শোনেনওনি।
কানজা অবশ্য পরে পুলিশকে জানিয়েছেন যে, একের কাছ থেকে তার পারিবারিক সব সম্পত্তি নিয়ে যেতে তিনি এমন কাণ্ড করেছেন।
এমনকি পুলিশ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে যে, কানজা যখনই মেকআপ করেন, তখনই তাকে নারীর মতোই লাগে। এমনকি তার কণ্ঠস্বরও নারীদের মতোই।
কানজা বর্তমানে পুলিশী হেফাজতেই আছেন। স্থানীয় আইনে প্রতারণার দায়ে তার ৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডও হতে পারে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org