The Dhaka Times Desk দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হবার মাত্র ১৫ মিনিট আগেই শিবগঞ্জে দায়িত্বপালনরত নির্বাহী প্রকৌশলী তোহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী খালেদা বেগমের সঙ্গে শেষ কথা বলেছিলেন।
তিনি সে সময় বলেন, দুর্বৃত্তদের হামলায় আক্রান্ত হয়ে গেছি। আমার জন্য দোয়া করো। এরপর আর কিছু বলার সুযোগ পাননি। তার টেলিফোন খোলাই ছিল। স্ত্রী অপর প্রান্ত থেকে হ্যালো হ্যালো করে যাচ্ছেন। সাড়া নেই। একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছেন। সাড়া নেই। তবে ফোনটি খোলা থাকায় হামলাকারিদের হৈ হুলেস্নাড় ও গালিগালাজের শব্দ স্ত্রী এবং পরিবারের লোকজন শুনতে পান। তোহিদুল বলেছিলেন, ভাই আমরা সরকারি চাকরি করি, আমাদের মারছেন কেন। উত্তর আসে, আরে তুই এখনো বেঁচে আছিস! এরপর আবার হামলা।
তোহিদুল ইসলাম ১৯৮৯ সালে পর্যটন কর্পোরেশনে যোগদান করেন। সর্বশেষ তার কর্মস্থল ছিল বগুড়া পর্যটন মোটেলে। তিন মাস আগে তাকে সেখানে বদলি করা হয়। বগুড়া কর্মস্থলে যাবার পর তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনা মসজিদ এলাকায় নির্মিতব্য মোটেলের কাজ তদারকি করতেন। এখানেই তিনি থাকতেন। মোটেল নির্মাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত পাশে ডাক বাংলায় থাকতেন। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর সোনামসজিদ মোটেলটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিলো। পর্যটন কপোরেশনের দুই কর্মকর্তা বলেন, ২৮শে ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ঘটনার দিন ডাকবাংলা থেকে বিছানাপত্র নিয়ে প্রকৌশলী তোহিদুল সকালে সোনা মসজিদ মোটেলের তিনতলার একটি কক্ষে উঠেন। এর আগে পর্যটনের শীর্ষ কর্মকর্তারা তাকে বলেছিলেন ২৬শে মার্চের মধ্যে উদ্বোধন হয়ে যাবে। আপনি মোটেলে থাকবেন। সেই আদেশ অনুযায়ী তিনি মোটেলে ওঠেন। সেখানে ওঠার ঘন্টাখানেক পরে হামলার শিকার হন বলে কর্মকর্তারা জানান।
সূত্র জানায়, হামলাকারিরা একযোগে সেদিন সোনা মসজিদে মোটেলে ভাংচুর শুরু করে। ওই সময় তোহিদুল আত্মরক্ষার জন্য দৌড়ে ৪র্থ তলার ছাদে গিয়ে লুকান। কিন্তু হামলাকারিরা তাকে সেখানে ধাওয়া করে ধরে ফেলে ৪র্থ তলা থেকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দেয়। এরপর হামলাকারিরা মোটেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
রাজধানীর শাহীনবাগে তোহিদের বাসায় গিয়ে স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে আলাপ করলে তারা কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে সেই বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেন। ওই সময় স্ত্রী, দুই পুত্র ও শিশু কন্যার বুক ফাটা কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।
ঘটনার পর শিবগঞ্জ থানার এসআই শহীদুল সালাম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত দুই থেকে তিন হাজার হামলাকারিকে আসামি করা হয়। এখন পর্যন্ত এ হত্যা ও অগ্নিকান্ডে জড়িত কাওকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ খুনিরা এলাকার পরিচিত মুখ। তারা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।
মৃত্যুর আগে বাঁচার জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন
ঘটনার দিন ২৮শে ফেব্রুয়ারি তোহিদ স্ত্রীকে প্রথম ফোন করে বলেছিলেন, এখানকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত। জামায়াত-শিবির হামলা করছে বিভিন্ন স্থানে। এই ফোনের ঘন্টা খানেক পর দ্বিতীয় দফা ফোন করে তিনি স্ত্রীকে বলেন, আমি হামলার শিকার। মোটেলে ভাংচুর শুরু হয়ে গেছে।
মোটেলে তোহিদের সঙ্গে ম্যানেজার মতিয়ার রহমান ছিলেন। মতিয়ার কোন রকমে আত্মরক্ষা করেন। তোহিদ ঢাকায় পর্যটন কর্পোরেশনের পরিচালক (প্লানিং) কালী রঞ্জন বর্মনকে ফোন করে বলেছিলেন, স্যার আমাকে রক্ষা করেন, হামলাকারিরা আমাকে মেরে ফেলবে।
কি দোষ ছিল তৌহিদের? সে তো একজন সরকারি কর্মকর্তা মাত্র। জামায়াত-শিবিরের এই আন্দোলনের সঙ্গে তার তো কোনই সংযোগ ছিল না। তাছাড়া তিনি শুধুই সরকারি দায়িত্ব পালন ছাড়া অন্য কোন ঝামেলায় জড়াতেন না। তারপরও কেনো তাকে জামায়াত-শিবিরের হিংসাত্বক কর্মকাণ্ডের শিকার হতে হলো? তৌহিদের পরিবারবর্গ আজ বড়ই করুণ অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। এক ছেলে এবার ঢাকা শাহীন কলেজ থেকে এস.এস.সি পরীক্ষা দিচ্ছে। আজ তৌহিদের পরিবারের একমাত্র প্রত্যাশা ওই খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
The Dhaka Times Desk Ex-army chief of Bangladesh General (retd) Aziz Ahmed has been banned...
The Dhaka Times Desk Bangladesh Association of Software and Information has officially taken responsibility...
The Dhaka Times Desk good morning Tuesday, 21 May 2024 AD, 7 Jaisht 1431…
The Dhaka Times Desk President Ibrahim Raisi and his...
The Dhaka Times Desk With an illustrious career spanning more than a decade, Sura Krishna Chakma as…
The Dhaka Times Desk Bank financing and loan repayment for maize and chilli farmers…