The Dhaka Times Desk এক সময় ছিল যখন গোলা ভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ ও গোয়াল ভরা গরু- এসবই গ্রাম-বাংলার কৃৃষকদের প্রাচীন ঐতিহ্য হলেও বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন দিনকে দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের সেই গরু দিয়ে হালচাষ।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কমে যাচ্ছে বসতভিটার অংশ, কৃষি জমির পরিমাণ। ফলে ইচ্ছা থাকলেও গোয়াল ঘরের জায়গার অভাবে সম্ভব হচ্ছে না গরু পালন। এক সময় গরু ছাড়া কৃষি কাজ অসম্ভব ছিল বিধায় বাধ্য হয়ে কৃষকরা গরু পালন করতেন। এখন আধুনিকতার ছোঁয়া এবং কৃষি জমির স্বল্পতার কারণে গরু পালন ছেড়ে দিয়েছে অনেক কৃষক।
এলাকায় জমি চাষের জন্য মূলত পাওয়ার টিলারের প্রচলন হওয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গবাদি পশু দিয়ে হালচাষ পদ্ধতি। এক সময় কৃষক বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের জন্য গরম্ন দিয়ে হালচাষ করতো। দেশে কৃষি ফসল উৎপাদনের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরম্ন হওয়ায় গ্রামে গরম্ন দিয়ে জমি চাষ আজ হারিয়ে যাচ্ছে। তবে আজো প্রত্যনত্ম এলাকার অনেক গৃহস্থ পরিবার গরম্ন পালন করে তা দিয়ে হালচাষ চালিয়ে যাচ্ছে। এক সময় বাণিজ্যিকভাবে হালচাষ করতে অনেক কৃষক বাড়িতে গরম্ন পালন করতেন। গ্রাম-পাড়া-মহলস্নায় শুধু জমি চাষ করার জন্য কিছু মানুষ গবাদি পশুর হালচাষকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতো। অন্যের জমিতে হালচাষ করে তাদের সংসারের ব্যয় নির্বাহ হতো। গরম্ন দিয়ে হাল চাষে সময় লাগলেও জমির মালিকরা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে হালচাষের ব্যবস্থা করতো। সিরিয়াল মতো তারা জমিতে হালচাষ দিতো। হালের গরম্ন কিনে দরিদ্র মানুষ জমি চাষ করেই তাদের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে পেতো।
পূর্বনাউরী গ্রামের করিম ভূঁইয়া, পাঁচআনি গ্রামের মোছলেম প্রধান ও মাথাভাঙ্গা গ্রামের আকবর আলী বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে আমাদের পেশা ছিল গরম্ন দিয়ে হালচাষ করা। ওই পেশার মাধ্যমেই সংসার পরিচালিত হতো। ধীরে ধীরে পাওয়ার টিলারের প্রচলন হওয়ায় গরম্ন দিয়ে হালচাষের কদর কমে গেছে। কম সময়ে বেশি জমিতে চাষ দিতে সক্ষম হওয়ায় জমির মালিকরা পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে জমি চাষ করে নিচ্ছেন। ছোট হলদিয়ার শাহআলম জানান, নিজেদের যেটুকু জমি রয়েছে তা গরম্ন দিয়েই তিনি চাষ করেন। প্রায় ১৫ বছর ধরেই তারা গরম্ন দিয়ে হাল-চাষ করে আসছেন বলে জানান। এক সময় গরম্নই হালচাষের একমাত্র মাধ্যম ছিল। বর্তমানে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি আসায় কৃষি ক্ষেত্রে অনেক সাফল্য আসছে বলে তারা স্বীকার করেন। যেসব কৃষক গরম্ন দিয়ে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন কালক্রমে তারা পেশা বদল করে অন্য কোনোভাবে উপার্জনে নেমেছেন।
এখলাছপুর ইউপির বোরোচর গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম গাজি আলী জানান, গরম্ন দিয়ে হালচাষের কদর না থাকায় ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। অনেক সময় খ- খ-ভাবে বিভক্ত জমিতে হালচাষ করতে গরম্নই ছিল একমাত্র মাধ্যম। ওই সমসত্ম জমিতে পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করতে হিমশিম খেতে হয়। হালচাষে আধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে পাওয়ার ট্রিলারের প্রচলন হওয়ায় ধীরে ধীরে গ্রামের ঐতিহ্য গরম্ন দিয়ে হালচাষ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এর মাঝেও গ্রামের অনেক কৃষক গরম্ন দিয়ে হালচাষের পদ্ধতি টিকিয়ে রেখেছেন। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে কৃষি ক্ষেত্রে আরো আধুনিক যন্ত্রপাতির সহজলভ্যতার কারণে হারিয়ে যাবে গবাদি পশুর হালচাষ পদ্ধতি। কৃষকরা এখন কৃষি কাজে ব্যবহার করছে যন্ত্রপাতি, পাওয়ার ট্রিলার, ট্রাক্টর, ধান মাড়াই মেশিন, হার্ভেস্টার, কীটনাশক ছিটানোর মেশিন ও সার প্রয়োগের মেশিনসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নত বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি। কিছুদিন আগেও গ্রামগঞ্জে গরম্ন দিয়ে হালচাষ, ধান মাড়াই ও কৃষিপণ্য বহন করা হতো। এখন সেই দৃশ্য তেমন একটা চোখে পড়ে না। এখন কৃষক ভোর বেলার পানত্মা ভাত, মরিচ পোড়া খেয়ে গরম্ন আর লাঙ্গল-জোয়াল ও মই কাঁধে নিয়ে জমি চাষের উদ্দেশে বের হয় না। মোবাইলে ট্রাক্টর মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে জমি চাষ করেন।
কয়েকজন প্রবীণ কৃষকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা বলেন, বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে চাষাবাদের জমি ও ভিটাবাড়ির স্বল্পতার কারণে গরম্ন পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি কাজ লাভজনক না হওয়ায় কৃষি কাজ ছেড়ে দিয়েছি, গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং গোচারণ ভূমির স্বল্পতায় ঘরে আর দোয়াল গাভী পালন করা হয় না। এভাবেই নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য গরম্ন দিয়ে হালচাষ।
This post was last modified on আগস্ট ২, ২০১৫ 8:46 pm
The Dhaka Times Desk President Ibrahim Raisi and his...
The Dhaka Times Desk With an illustrious career spanning more than a decade, Sura Krishna Chakma as…
The Dhaka Times Desk Bank financing and loan repayment for maize and chilli farmers…
The Dhaka Times Desk Production of 'Ai Toh Prem' with Superstar Shakib Khan and Bindu…
The Dhaka Times Desk On May 19, Sunamganj Sadar Priyangan Community Center of 12 upazilas...
The Dhaka Times Desk The wreckage of the helicopter carrying Iranian President Ibrahim Raisi has been found.