আমাজনে ‘ফুটন্ত নদী’-র সন্ধান!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নদী অনেক রকম হতে পারে। বড় নদী, ছোট নদী আবার কখনও শোনা যায় রক্তের মতো লাল পানির নদী। তবে এবার ব্যতিক্রমি এক নদীর খবর পাওয়া গেছে। আর সেটি হলো ‘ফুটন্ত নদী’!

সেই ছোটবেলার গল্পের মধ্যে শোনা ফুটন্ত নদী কথা। তখন বেশ মজা লাগতো এগুলো শুনতে। লাগবে নাই বা কেনো? এমন অনেক ঘটনার কথা, বিশেষ করে রূপকথার কাহিনী অনেকেই ছোটবেলায় শুনে থাকতে পারেন। তবে আবার বড় হওয়ার পরও যখন এসব কাহিনী সামনে চলে আসে তখন আশ্চর্য না হয়ে পারা যায় না। এবার সত্যিই নিজের চোখে এই ফুটন্ত নদীকে চাক্ষুস করা যাবে। এবার গবেষকরা সন্ধান পেয়েছেন এমন এক ফুটন্ত নদীর।

জিওথার্মাল এনার্জি নিয়ে গবেষণারত পেরুর ভূবিজ্ঞানী আন্দ্রে রুসো এর মধ্যে অনেককেই ওই নদী নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। এমন নদী রয়েছে সে কথা কেও বলতে পারেননি। সাধারণত আগ্নেয়গিরির আশেপাশে এমন ধরনের নদী পাওয়া যেতে পারে। লাভার কারণে যার পানি গরম হতে পারে। কিন্তু আমাজনে এমন কোনও আগ্নেয়গিরি নেই। যে কারণে সকলেই না বলেছিলেন।

Related Post

বিজ্ঞানীরা আমাজনে ‘ফুটন্ত নদী’-র সন্ধান পেলেন যেভাবে!

২০১১ সালের কথা। তখন আবার একবার নিজের কাকিমার কাছে ফুটন্ত নদীর গল্প শোনার পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি রুসো। কাকিমাকে সঙ্গে নিয়েই একেবারে আমাজনের জঙ্গলে এসে হাজির হলেন তিনি। সেখানে নিজের চোখেই দেখেছেন সেই ফুটন্ত নদীকে।

কতো বড় ওই নদী?

৪ মাইল বা ৬.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২৫ মিটার চওড়া এবং ৬ মিটার গভীর এই নদীটি সত্যিই ফুটন্ত পানি বয়ে নিয়ে চলেছে। রুসো থার্মোমিটার নিয়ে মেপেও দেখেছেন। এই পানির স্ফুটনাঙ্ক ৮৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একেবারে ফুটন্ত না হলেও এর একেবারে কাছাকাছি তাপমাত্রার। যে কারণে এটি কোনও রূপকথা নয়, এক বাস্তব সত্য।

আমাজনের মাঝে কীভাবে হঠাৎ করে এমন একটি ফুটন্ত নদীর জন্ম হলো তা এখনও খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। বিগত ৫ বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস করে নদীটি নিয়ে যাবতীয় গবেষণা চালিয়েছেন রুসো। আর সেই গবেষণা থেকেই রহস্যের সমাধান বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

আপাতত মনে করা হচ্ছে যে, মূলত উষ্ণ প্রস্রবনের কারণেই এই নদীর পানি এতোটা গরম হয়ে গিয়েছে। কারণ হলো ভূপৃষ্ঠের বুকে শিরার মতোই প্রচুর ফল্ট লাইন রয়েছে। তারমধ্যে গরম পানি ভর্তি। এগুলি ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসার ফলে ভূ-তাপ নির্গত হয় এবং উপরের পানি উষ্ণ হয়ে প্রস্রবন সৃষ্টি হয়।

এই ফুটন্ত নদীতে কেও সাঁতার কাটা তো দূরে থাক, এর মধ্যে নামতেও পারে না। কোনো পশু-পাখি হঠাৎ নদীতে পড়ে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু ঘটবে।

বর্তমানে ওই ফুটন্ত নদীতে রক্ষণাবেক্ষণ ও এর চারপাশের পরিবেশকে রক্ষা করা নিয়েই কাজ করছেন রুসো। এই ধরনের নদী বা জলাশয় পৃথিবীতে একটিও নেই, হলফ করে এমন দাবি করেছেন এই ভূবিজ্ঞানী আন্দ্রে রুসো।

This post was last modified on অক্টোবর ৫, ২০১৮ 11:31 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

দীপিকা ছেলের জন্য সুস্থ হয়ে উঠতে চান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর যে কোনো মূল্যেই হোক না কেনো…

% দিন আগে

নাখোশ ইউরোপ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে খুশি রাশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…

% দিন আগে

কানাডায় বরফের নিচে আয়োজন হলো পার্টি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…

% দিন আগে

বরফে আচ্ছাদিত রাস্তা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে

নাসার রোভার মঙ্গল গ্রহে বজ্রপাতের সম্ভাব্য শব্দ ধারণ করলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…

% দিন আগে