জাপানি শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যায় ৩০ বছরের রেকর্ড: প্রয়োজন সচেতন করে তোলা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই এক বিস্ময়কর মনে হয়। কারণ কেনো শিক্ষার্থীদের এই আত্মহত্যা? বিগত ৩০ বছরের রেকড ছাড়িয়ে এই জাপানি শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনাটি!

প্রযুক্তির উৎকর্ষ যেমন মানুষকে অনেক উপরে নিয়ে গেছে ঠিক তেমনি প্রযুক্তির কারণে মানুষের মধ্যে বাড়ছে হতাশাও। সে কারণে বিশ্বব্যাপী আত্মহননের সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিবছর। তবে একটি বিষয় হলো জাপানে প্রাপ্ত বয়স্কদের আত্মহত্যার পরিমাণ বেশ কম হলেও তরুণরা বেছে নিচ্ছেন এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর পথ। কিন্তু কেনো?

বিগত ৩০ বছরের মধ্যে এই বছরই জাপানি শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পরিমাণ সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ২০১৬-১৭ শিক্ষা বছরে ২৫০ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। এরা দেশটির বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পড়া-লেখা করতেন।

এই সংখ্যাটি গত বছরে তুলনায় ৫ জন বেশি। অপরদিকে ১৯৮৬ সাল হতে শুরু করে এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ। যে কারণে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে অভিভাবক হতে শুরু করে জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কাছেও ভাবনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

এদিকে জাপানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্নহননে ঝুঁকে পড়াদের সমস্যার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যা, ভবিষ্যতের জন্য ভীতিকর পরিস্থিতি, ধর্ষণ ও হয়রানি শিকার হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য আত্নহননের মতো এমন একটি পথ বেছে নিয়েছে।

জাপানের স্কুলগুলোর তথ্য মতে, কি কারণে এই ধরনের মৃত্যু তারা বেছে নিয়েছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ এখন পর্যন্ত উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।

এই বিষয়গুলো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা চলছে। ১৪০ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যু সম্পর্কিত নথি অনুসন্ধান করে দেখা যায়, তারা মারা যাওয়ার পূর্বে কোনো চিঠি (সুইসাইড নোট) লিখে যায়নি। সুইসাইড নোট লিখে গেলে হয়তো বিষয়গুলো কিছুটা হলেও পরিষ্কার হতো।

রিপোর্টে আরও বলা হয়, জাপানে ১৮ বছর বয়সী ছেলে-মেয়ের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরণের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের হিসাব মতে, ২০১৫ সালে জাপানে রেকর্ড সংখ্যাক শিশু আত্নহত্যা করে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৭ সালে প্রায় ২১ হাজার। আবার ২০০৩ সালে ৩৪ হাজার ৫০০ শিশু মারা যায়।

জাপানের শিক্ষামন্ত্রী নুরিকি কিতাজাকি সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করে বলেছেন যে, ছাত্রদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকে। যা সত্যিই একটি বিপজ্জনক বিষয়। এটি মোকাবেলা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কি কি কারণে শিক্ষার্থীরা আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে সেই বিষয়টি চিহ্নিত করা দরকার বলে সংশ্লিষ্টকরা মনে করছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যেহেতু স্কুলের শিক্ষার্থীদের এই আত্মহত্যার হার বেশি তাই স্কুলগুলোতে এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলতে হবে। তাদেরকে শিক্ষার পাশাপাশি আত্মহত্যার খারাপ দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। অভিভাবকদেরকেও করণীয় ও ডিপ্রেশন হতে দূরে রাখার জন্য কিছু হেলথ টিপস দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের কাউনসিলিং করা দরকার।

বিষয়টি শুধু জাপানে তা নয়, আমাদের দেশেও এই ধরনের সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে উঠতি বয়সী (টিনএজার) মেয়েদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যায়। এই বিষয়ে আমাদের দেশেও সচেতনতা দরকার।

This post was last modified on নভেম্বর ৮, ২০১৮ 12:05 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

টাইটানিকের সবচেয়ে ধনী যাত্রীর সেই স্বর্ণের পকেট ঘড়িটি রেকর্ড দাম ১৬ কোটি টাকায় বিক্রি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক টাইটানিক জাহাজ ট্রাজেডির…

% দিন আগে

আজ মহান মে দিবস: শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ ১লা মে, মহান মে দিবস। বঞ্চনা, নির্যাতন ও বৈষম্যের…

% দিন আগে

নদীমাতৃক বাংলাদেশের এক চিরাচরিত দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ১ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

অফিসে এসি না থাকলে গরমে সারাদিন পরিশ্রম করে সুস্থ থাকবেন কীভাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক অফিসেই এসির ব্যবস্থা থাকে না। এসি না থাকলেও কাজ…

% দিন আগে

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা: এক মহা দুর্যোগের শিকার এশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুরো বিশ্বের জলবায়ুর সঙ্গে তুলনা করলে প্রথমেই উঠে আসে এশিয়ার…

% দিন আগে

এনার্জিপ্যাকের সঙ্গে চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও…

% দিন আগে