‘শান্তির রাজধানী’: এমন এক গ্রাম যে গ্রামে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার এমন এক গ্রামের সন্ধান পাওয়া গেছে যে গ্রামে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ! অর্থাৎ গ্রামের নারীরা নিরাপদে এবং নির্ভাবনায় সেখানে চলাফেরা করেন!

এমন একটি গ্রাম যেখানে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ। তাই নিশ্চিন্তে জীবনটা কাটাতে পারছেন সেখানকার নারীরা। তাদের ওই জিনওয়ার গ্রামটা পেরলেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার দাঁত-মুখ বের করা চেহারাটা অদ্ভুতভাবে ধরা দেবে সবার সামনে। আইসিস জঙ্গিদের কালো পতাকা ও মুহুর্মুহু গ্রেনেডের হুঙ্কারে কার্যত জনপদ শূন্য হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই নিজেদেরকে নিজেরা নিরাপত্তা দিয়ে একটি সুরক্ষিত গ্রামও তারা তৈরি করেছেন। এটি উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কুর্দিশ এলাকার জিনওয়ার গ্রাম। এই গ্রামের সব বাসিন্দাই নারী, কোনো পুরুষ মানুষ নেই এই গ্রামে। খবর জিনিউজ-এর।

নিশ্চয়ই আপনার অনেক কৌতূহল হচ্ছে? তাহলে সেখানকার বাসিন্দা ২৮ বছর বয়সী যুবতি জ়য়নব গাবারীর কথা শুনুন তাহলে বুঝতে পারবেন বিষয়টি। তিনি বলেছেন, আমাদের জীবনে কোনোই পুরুষের প্রয়োজন নেই। আমরা খুব ভালো আছি। যে সব নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ গ্রাম। জ়য়নবের মতো এখানকার সব নারীরা ঠিক এই ভাবনাই বিশ্বাস করে। তবে কেনো এমন ভাবনা?

Related Post

জিনওয়ার গ্রামের প্রত্যেক নারীর জীবনে রয়েছে এক একটি করে মর্মান্তিক ঘটনা। কেও আইসিস জঙ্গিদের হাতে দীর্ঘদিন যৌনদাসী হয়ে বর্বরোচিত অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। কারও আবার স্বামীকে খুন করা হয়েছে। কেওবা জঙ্গি হামলায় সন্তান-স্বামী সব খুইয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়েছেন। কেওবা আবার দিনের পর দিন ধর্ষিত হয়ে সন্তানসম্ভাবনা হয়ে পড়েছেন। জীবনের ঘটনা যাই হোক না কেনো পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এক সরলরেখায় তারা যে অত্যাচারিত ও অবহেলিত, আজ তাই নির্দ্বিধায় বলছেন ওই গ্রামের নারীরা।

আপনি যদি পুরুষ হন তাহলে ইচ্ছে করলেও সেখানে ঢুকতে পারবেন না। জিনওয়ার গ্রামে ঢুকতে গেলে প্রথমেই আপনার সামনে পড়বে ফটকে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকজন নারী। আইসিসদের হামলা রুখতে অতন্দ্র প্রহরীর মতোই এরা কড়া পাহারা দিচ্ছেন। কৃষিকাজ থেকে স্কুলে পড়ানো সব কাজেই পারদর্শী এই গ্রামের নারীরা। স্থানীয় নারী ও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে এই গ্রামটি। বাড়ির দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা নারী শক্তির নানা কাহিনী ও গল্প। শরণার্থী হয়ে না পালিয়েও আইসিস জঙ্গিদের মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছেন এইসব নারী।

স্বামী হারানো ৩৮ বছর বয়সী আমিরা মহম্মদ বলেছেন, নারী ছাড়া স্বাধীনতা পাওয়া যায় না। যতো দিন না নারীরা শিক্ষিত হচ্ছে, স্বনির্ভর হচ্ছে এই সমাজও কখনও স্বাধীন হতে পারবে না। তিনি আরও জানান, আমরা নিজেরাও কৃষিকাজ করি, আমরা ফসল ফলাই। সেই ফসল আমরা রফতানিও করি। আবার সেইসঙ্গে সন্তান পালনও করি। পুরুষবিহীন এই ছোট্ট গ্রামই এখন ‘শান্তির রাজধানী’ তৈরি হয়েছে বাশার-অল আসাদের যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়াতে! সত্যিই সবাই যেনো এক অকুতোভয় যোদ্ধা।

This post was last modified on ডিসেম্বর ৯, ২০১৮ 3:51 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ডায়াবেটিস রোগিরা ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ খেলে কি রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ স্বাদে মিষ্টি না হলেও এই ধরনের খাবারে শর্করার…

% দিন আগে

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে সাব্বির আহমেদকে নিয়োগ দিলো ভিসা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেমেন্ট প্রযুক্তিতে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের…

% দিন আগে

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অন্তর্ভূক্তিমূলক থিয়েটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার…

% দিন আগে

বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শাকিব খান!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলীকে…

% দিন আগে

৬ মাসে ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত ১৩ হাজার শিশু

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার…

% দিন আগে

আপনার চরিত্র কেমন তা আপনার আঙুলের আকৃতিই বলে দেবে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার ব্যক্তিত্ব কীরকম তা বলে দিতে পারে আপনার আঙুলের আকৃতি!…

% দিন আগে