দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুধু আবর্জনা বা যাকে বলে জঞ্জাল থেকে শিল্পসৃষ্টির কাজ করেই সন্তুষ্ট নন পর্তুগালের এই শিল্পী। পরিবেশ দূষণ ও প্রাণিজগতের দুর্দশা সম্পর্কেও সচেতনতা সৃষ্টি তার উদ্দেশ্য।
তিনি একটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে অনেক মানুষের মনে প্রভাব সৃষ্টি করতে পেরেছেন বলেও মনে করেন। পর্তুগিজ শিল্পী আর্তুর বর্দালু বিভিন্ন পশুর আদলে ভাস্কর্য সৃষ্টি করে থাকেন। তাকে ভাস্কর্যের সঙ্গে স্ট্রিট আর্টের মেলবন্ধন বলা যায়। আবর্জনাই তার শিল্পকর্মের মূল উপাদান। বাস্তব প্রেক্ষাপটে কল্পনির্ভর তার ‘আপসাইক্লিং’ এই শিল্প।
পর্তুগিজ শিল্পী আর্তুর বর্দালু নিজে মনে করেন, ‘প্রাণীদের মাধ্যমে আমরা সহজেই মানুষের অভিব্যক্তির খুব কাছাকাছি রূপ পেতে পারি। জঞ্জালের কারণে প্রকৃতি সব সময় নষ্ট হচ্ছে, এই গ্রহ ধ্বংসের পথে চলে এসেছে। দূষণ ও আবর্জনার কারণে যারা এই প্রক্রিয়ার শিকার হচ্ছে, এই সব উপাদান দিয়েই তাদের চিত্র সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
এইসব বস্তুর মধ্যে রয়েছে পুরোনো পুতুল, গাড়ির টায়ার, মোবাইল ফোন বা পাইপ। মানুষ যা কিছু ফেলে দেয়, বর্দালো সে সব পণ্যই শিল্পে পরিণত করেন। আবর্জনা দিয়ে তৈরি তার ৩০টি ভাস্কর্য প্যারিসের এক সংগ্রহশালায় সম্প্রতি প্রদর্শিত হয়।
এই বিষয়ে আর্তুর বর্দালু বলেন, ‘শিল্পকর্মের সাহায্যে আমি সবার জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি মাত্র। শুধু হাতে গোনা শিল্পবোদ্ধাই নয়, জনসাধারণের কাছে আনতেও চেয়েছি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য এটি করেছি। কারণ তারাই তো সমাজের সবকিছু বদলানোর ক্ষমতা রাখে।’
২০১৪ সালে নিজের শহর লিসবনে তিনি প্রথম ‘বিগ ট্র্যাশ অ্যানিম্যাল্স’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। রাজপথ বা আবর্জনার স্তূপে তিনি সৃষ্টির উপাদান খুঁজে পান। আবর্জনা দিয়ে ভাস্কর্য সৃষ্টি করে প্রাক্তন এই গ্রাফিটি শিল্পী স্ট্রিট আর্ট জগতে দ্রুত খ্যাতিও অর্জন করেছেন। বার্লিন, রোম, লন্ডন, তাহিতি কিংবা লাস ভেগাস- সব জায়গায় তিনি ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন।
প্যারিসে প্রদর্শনীর জন্য বর্দালো সঠিক সময় দুটি নতুন সৃষ্টির কাজও শেষ করেছেন। গ্যালারির খুব কাছেই সে দু’টি ঝুলন্ত অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে। ফ্রান্সের রাজধানীতে একক প্রদর্শনীর জন্য এর চেয়ে ভালো বিজ্ঞাপন তো হতে পারে না। প্রায় ৭০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে তার সৃষ্টিকর্ম শোভা পাচ্ছে। অনেক দর্শক তা দেখে মুগ্ধও হচ্ছেন। কেও কেও বলেন, ‘সত্যি চমকপ্রদ শিল্পকর্ম! আমি শিল্পের এমন রূপ কখনও দেখিনি। খুবই বুদ্ধিমত্তা ও চাতুর্যের সঙ্গে প্লাস্টিক ও আবর্জনা মিশিয়ে আসল বাস্তবসম্মত প্রাণী সৃষ্টি করা হয়। তিনি আমার কাছে অন্যতম প্রিয় শিল্পী।’ আরেকজন বলেন, ‘পরিবেশের ক্ষতি বন্ধ করতে আমরা কী করছি? তিনি মানুষকে সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বাধ্য করছেন বলে মনে করেন। যেমন না জেনেই আমরা কীভাবে প্রাণীদের ক্ষতি করে বসছি। যে কারণে এই বিষয়গুলো আমরা ভাবতে বাধ্য হচ্ছি।’
‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’ শিরোনামে এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বর্দালো জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বোঝাপড়ার প্রতিও সচেতনতা সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। তবে তার কাছে এই উদ্যোগও যথেষ্ট নয়।
আর্তুর বলেন, ‘আগামী ২০ বছর পর আজকের শিশুরা ক্ষমতার দায়িত্ব নেবে। আমি যে সকল বার্তা পাঠাতে চাইছি, তারা সে সব পেলে হয়তো আমরা আরও এক ভালো পৃথিবীতে বসবাস করতে পারবো।’
বর্দালো-র ‘বিগ ট্র্যাশ অ্যানিম্যাল্স’ সকলের মনেই দাগ কাটে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সেই প্রভাব শুধু প্যারিসে প্রদর্শনীর দর্শকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বিশ্ববাসীর কাছেও এক নতুন বার্তা দেয়।
This post was last modified on মে ৫, ২০১৯ 1:43 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রাম। ফটো ও…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমেরিকান পপশিল্পী গায়িকা টেইলর সুইফটের খ্যাতি রয়েছে সর্বত্র। বহু আগে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা হবে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাসের ভিতর থাকা মহিলা কন্ডাক্টরের সঙ্গে কথা বলছেন ঝুলে থাকা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৭ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যেমন এক দিকে রয়েছে সংসারের দায়িত্ব, অপরদিকে পেশাগত জায়গায় কাজের…