টাকা না থাকলেও খেতে দিবে এমন এক রেস্টুরেন্টের গল্প!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এখনকার আমলে কী কখনও এমনটি ভাবা যায়? বাদশাহী শাসন আমলে মুসাফিরদের জন্য বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা থাকতো। তবে এবার এমন এক রেস্টুরেন্টের খবর পাওয়া গেছে যারা টাকা না থাকলেও খেতে দেন!

বাদশাহী শাসন আমলে মুসাফিরদের জন্য বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করা হতো। রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হতো। সেই সময় মেহমানখানায় অভুক্ত যে কোনো পথিক পেট পুরে খেতে পারতেন। কালে কালে সেইসব ঐতিহ্য পাল্টে গেছে। কালক্রমে মানুষও হয়ে ওঠেছে বিত্তশালী। তাই শহরে শহরে গড়ে ওঠেছে হোটেল-রেস্টুরেন্ট। তাই এই জামানায় ভাবা যায় না বিনামূল্যে খাবারের কথা।

অতীতের সেই রীতি বদলে গেলেও আধুনিক শহরের রাস্তায় এখনও অনেকেই ক্ষুধার্ত পড়ে থাকেন। কিন্তু খাওয়ার সাহস হয় না তাদের। কারণ তখন তাদের পকেটে টাকা থাকে না। সেসব ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে দুবাইয়ের ‘ফুল ও হুমুস’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট। যেখানে পকেটে টাকা না থাকলেও ক্ষুধা নিবারণে কোনো রকম বেগ পেতে হয় না। তারা বিনামূল্যে খাবার দেন যে কোনো পথচারিকে।

Related Post

জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক শহর দুবাইয়ের ‘ফুল ও হুমুস’ রেস্টুরেন্টটি অভুক্তকে বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করে থাকে। দুবাইয়ের বার্শা শহরের এই রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ডে আরবি এবং ইংরেজিতে লেখা রয়েছে, ‘আপনি যদি কিনতে না পারেন, তাহলে আপনার জন্য একদম ফ্রি। আমাদের খাবার আল্লাহর পক্ষ হতে আপনার জন্য উপহার।’

দুবাই ভিত্তিক গণমাধ্যম খালিজ টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, হোটেলের মালিক ৩৯ বছর বয়সী ফাদি আইয়াদ হলেন জর্ডানের নাগরিক। তিনি ২০১১ সালে প্রথম বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার জন্য একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেছিলেন। তারপর এ পর্যন্ত আরও ৩টি শাখা চালু করেন তিনি।

এই হোটেলে প্রতিদিন ৩০/৩৫ জনকে এই সেবা দেওয়া হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সপ্তাহে প্রতিদিনই এই হোটেলটি খোলা থাকে। যে কেও প্রবেশ করে মেন্যু দেখে পছন্দমতো খাবারের অর্ডার দিতে পারেন। চা, কফি এবং পানিসহ সবকিছুই এখানে বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

এই রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন দেশের নাগরিক খেতে আসেন। এমনকি এখানে অনেকেই নিয়মিতভাবেই খেতে আসেন। অস্ট্রেলিয়ান এক নারী আর্থিক সংকটের কারণে প্রতিদিন এখানে বিনামূল্যে খেতে আসেন। তাছাড়া ক্ষুধার্তরা মূলত রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ডটি দেখেই এখানে আসেন। তাদের জন্য সব ধরনের খাবারই ফ্রি।

সংবাদ মাধ্যমকে রেস্টুরেন্টের মালিক ফাদি আইয়াদ বলেছেন, ‘বিনামূল্যে সেবা দেওয়ার কারণে তার ব্যবসা আরও ভালোভাবে চলছে। যেহেতু আমার কিছু নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। কারণ হলো খাবার মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। আমরা চাই, আর্থিকভাবে অস্বচ্ছলরা ক্ষুধায় যেনো কষ্ট না পান।’

ফাদি আইয়াদ আরও বলেন, ‘খাওয়ার পর ক্ষুধার্তদের হাসতে দেখে আমি মনে পুলক অনুভব করি। যা কখনও টাকা-পয়সা দিয়ে কিনতে পাওয়া যায় না। এখানে যারা খেয়ে যান তারা আবারও আমাদের কাছেই আসেন। আমরা এই ধরনের ভালো কাজের প্রেরণা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাদের আরও উৎসাহিত করি।’

This post was last modified on সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯ 12:40 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ঐক্য সম্মেলনে ইরানের জাতীয় সংগীতে দাঁড়ালেন না আফগান মন্ত্রী: কিন্তু কেনো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঐক্য সম্মেলনে ইরানের জাতীয় সংগীতে দাঁড়ালেন না আফগান মন্ত্রী: কিন্তু…

% দিন আগে

ট্রেনের দরজায় ঝুলে কেরামতি: রিল বানাতে গিয়ে লোহার স্তম্ভে বাড়ি খেলেন এক তরুণী!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চলন্ত ট্রেনের পাদানিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক তরুণী। পাদানিতে দাঁড়িয়ে ট্রেনের…

% দিন আগে

এই খাড়া পাহাড়গুলো দেখতে কেমন লাগছে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৬ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে

রোগা হওয়ার জন্য জগিং শুরু করেছেন: কয়েকটি ভুলে সব পরিশ্রমই বৃথা যেতে পারে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গুণীজনরা বলে থাকেন, ছোট ছোট লক্ষ্য আপনাকে স্থির করতে। সেই…

% দিন আগে

জার্মানি এবার ইসরায়েলে যুদ্ধাস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার ইসরায়েলে নতুন করে যুদ্ধাস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করলো জার্মানি। তথ্য…

% দিন আগে

গবেষণায় নতুন তথ্য: ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেবে মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানার…

% দিন আগে