বিশেষ নিবন্ধ

ক্যাসিনো বিশ্বের কোথায় কোথায় রয়েছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ক্যাসিনো’ হলো আনুষ্ঠানিকভাবে জায়গা বানিয়ে নেওয়া রমরমা জুয়া খেলার আসর। ‘ক্যাসিনো’ শব্দটি ইতালীয় এবং ১৬৩৮ সালের দিকে দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে জায়গা করে নিয়ে জুয়া খেলা শুরু হয়।

‘ক্যাসিনো’ ১৯৩১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় আইনি বৈধতা পায়। মূলত তারাই ‘ক্যাসিনো’ জনপ্রিয় করেছে।

বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের ব্যবসা চলে ক্যাসিনো নির্ভর গ্যাম্বলিং কিংবা জুয়াকে ঘিরেই। চীনের মূল ভূখণ্ড ও মুসলিম কিছু দেশ ছাড়া পর্যটননির্ভর অর্থনীতির প্রায় সব দেশেই ক্যাসিনোর রমরমা আয়োজন বিদ্যমান রয়েছে। অপরদিকে রাষ্ট্রীয় অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশেও বেশ কয়েকটি ক্যাসিনোর সন্ধান পায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

Related Post

বিশ্বের কোথায় কোথায় চলে এই রমরমা জুয়া আসর ক্যাসিনো?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

ক্যাসিনোর কথা ওঠলেই প্রথমে উঠে আসবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের কথা, নেভাদায় এর অবস্থান। ৩৬০টি ক্যাসিনোর অস্তিত্ব শুধু এই এক অঙ্গরাজ্যেই বিদ্যমান। ইউটাহ, হাওয়াই ও আলাস্কা ছাড়াও ক্যাসিনো রয়েছে দেশটির বাকি সব রাজ্যতেই। সব মিলিয়ে ১৯৫৪টি ক্যাসিনো চালু রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। যেখানে চলে আসছে ৯ লাখের ওপর স্লট মেশিন। ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ও বছরে ৭০ বিলিয়ন ডলার আয়ের জোগান দেয় দেশটির এই ক্যাসিনো হতে।

কানাডার মানুষ জুয়া ভালোবাসে!

এক তথ্যে জানা যায়, সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যাসিনো রয়েছে কানাডাতে। জনগণকে ক্যাসিনোর মালিকানা ও পরিচালনার প্রথম অনুমতি দেয় উদারমনা এই দেশটি। বর্তমানে সেখানে মোট ক্যাসিনোর সংখ্যা প্রায় ২১৯টি। সবচেয়ে বেশি ৭৩টি রয়েছে কানাডার অ্যান্টারিওতে। এরপর তালিকায় রয়েছে আলবার্টা ও ব্রিটিশ কলম্বিয়াতে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় দেশটির ৭৬ ভাগ মানুষই কোনো না কোনো জুয়ার সঙ্গে জড়িত। এর মাধ্যমে বছরে সাড়ে ১৫ বিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়ে থাকে।

মেক্সিকোতে ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রিত হয় কেন্দ্রীয়ভাবে!

উত্তর আমেরিকার আরেকটি দেশ মেক্সিকোতে ২০৬টি ক্যসিনো রয়েছে। তবে গেম পরিচালনায় এর কোনোটিতেই নিজস্ব কোনো প্রোগ্রামই নেই, পুরোটাই কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। কোডারে, বিগ বোলা ও ইমোশন -এই ৩টি প্রতিষ্ঠানের দখলে মেক্সিকোর ক্যাসিনো শিল্পের বড় একটি অংশ।

ফ্রান্সে ক্যাসিনো

উত্তর অ্যামেরিকার দেশগুলোকে বাদ দিলে সংখ্যার দিক হতে সবচেয়ে বেশি ক্যাসিনোই রয়েছে ফ্রান্সে। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ক্যাসিনোগুলোর দেখা পাওয়া যাবে এই দেশটিতেই। অ্যামেরিকার মতো জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও ঐতিহাসিক দিক থেকে এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, ১৯১২ সালে চালু হয়েছে ক্যাসিনো ব্যারিয়ো দাভিলা। সব মিলিয়ে ১৮১টি ক্যাসিনো চালু রয়েছে এই ফ্রান্সে। এর পরের অবস্থানটিই হলো নেদারল্যান্ডসে, যেখানে রয়েছে ১৬৬টি ক্যাসিনো।

ব্রিটিশরা কথায় কথায় বাজি ধরেন কেনো

রাজপ্রাসাদ হতে শুরু করে রাজপথ, বাজি যদি জুয়ার মধ্যে পড়ে থাকে তাহলে ব্রিটিশদের চেয়ে এগিয়ে নেই পৃথিবীর কেও। শুধু লন্ডনেই হাজারের ওপর বেটিং শপ রয়েছে। ২০ লাখের বেশি ব্রিটিশরা অনলাইনে জুয়া খেলে থাকে। এর বাইরে মেফেয়ার ও পিকাডিলির মতো খ্যাতনামা ক্যাসিনো তো আছেই। সব মিলিয়ে এর সংখ্যা ১৫৮টি।

ম্যাকাও অর্থই হলো ক্যাসিনো

সংখ্যায় বেশি না হলেও নামিদামি ক্যাসিনোর দিক থেকে লাস ভেগাসের পরেই হলো চীনের স্বায়ত্ত্বশাসিত অঙ্গরাজ্য ম্যাকাওয়ের নাম। বলতে গেলে সেখানকার অর্থনীতি এই শিল্পের উপর পুরোটা নির্ভরশীল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইনস্টারের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো ভেনিটিয়ানের অবস্থানও এই সিটিতে। সিটি অব ড্রিমস, স্যান্ডস, পন্টে সিক্সটিন, এমজিএম গ্র্যান্ডও রয়েছে দেশের ভেতরে। মাত্র অর্ধশত ক্যাসিনো ম্যাকাওয়ের সরকারের ৮০ ভাগ রাজস্বের যোগান দিয়ে থাকে।

দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশ

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২১টি ক্যাসিনো রয়েছে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। গোয়ার পানাজি, গ্যাংটক, মুম্বাইসহ সর্বমোট ১১টি শহরে এইসব ক্যাসিনোর অবস্থান। শ্রীলঙ্কায় ৫টি ক্যাসিনো রয়েছে। যার সবগুলোই রাজধানী কলম্বোতে অবস্থিত। অপরদিকে ১১টি ক্যাসিনো রয়েছে নেপালে, ও মিয়ানমারে রয়েছে ৫টি ক্যাসিনো।

ক্যাসিনোর তালিকায় কিছু মুসলিম অধ্যুষিত দেশ

বিশ্বের অনেক মুসলমান প্রধান দেশেও বর্তমানে বৈধ ক্যাসিনো রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ১৭টি রয়েছে মিশরে, যার ১৪টি শুধু রাজধানী কায়রোতে অবস্থিত। আর ৯টি রয়েছে তুরস্কে। আফ্রিকার মরক্কোতে রয়েছে আরও ৭টি। তাছাড়াও মধ্যাপ্রাচ্যের দেশ আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, আরব আমিরাত ও এশিয়ার মালয়েশিয়াতেও ক্যাসিনোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ক্যাসিনো একটি বে-আইনি খেলা। সম্প্রতি বাংলাদেশের আইন শৃংখলা বাহিনী অভিযান শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেশ অনেকগুলো ক্লাব সিলগালা করেছে পুলিশ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি কখনও বৈধ খেলা হতে পারে না।

This post was last modified on সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯ 12:15 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

নখ দেখেই বোঝা যাবে রোগ হয়েছে কি না!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স বৃদ্ধির পর নখ কিছুটা হলেও ভঙ্গুর হতেই পারে। আবার…

% দিন আগে

তরুণ প্রজন্মকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে- মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ “কৃষি-উদ্যোক্তাদের সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করার পাশাপাশি সরকার তাদের বিকাশে সকল…

% দিন আগে

বিস্ময়কর এক রোবট অ্যাটলাসের গল্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের চেয়ে ভালোভাবে তো একটি রোবট শরীরকে কখনই নিয়ন্ত্রণ করতে…

% দিন আগে

প্রথম পারিশ্রমিক ছিলো ৫০ রুপি: বর্তমানে প্রতি ছবিতে নেন ২০ কোটি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে দক্ষিণী চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় একজন অভিনেতা যশ। যিনি সবার…

% দিন আগে

গাজার যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা শুনছে না ইসরায়েল!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি চুক্তি করতে…

% দিন আগে

ভারতে গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা লিটার!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের সমাজে গাধা নামক প্রাণীটি কঠোর পরিশ্রমের রূপক হিসেবে প্রচলিত।…

% দিন আগে