অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য আসছে ফ্রিবাডস ৩

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য আসছে ফ্রিবাডস ৩। মূলত এটি অ্যাপলের এয়ারপড ২-এর মতোই। যে কারণে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে অ্যাপলের এয়ারপডের ডিজাইন নকলের অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি হুয়াওয়ে ফ্রিবাডস থ্রি নামে একটি এয়ারপড উন্মোচন করেছে। তবে এটি দেখতে অনেকটা অ্যাপলের এয়ারপডের মতোই। অ্যাপল ভক্তরা মনে করছেন যে, হুয়াওয়ের সদ্য আসা ফ্রিবাডস থ্রি অ্যাপলের আইপডেরই অনুরূপ। উভয় প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলোর নকশা প্রায় একই রকম। এমনকি তারা একরকম ডিজাইনই বেছে নিয়েছেন বলে মন্তব্য করছে অনেকেই।

জানা গেছে, তবে হুয়াওয়ে আইফা ২০১৯ ট্রেড শোতে ফ্রিবাডস থ্রি প্রদর্শন করা হয়। অ্যাপল ভক্তরা তাদের এয়ারফোনের দিকেই নজর রাখছে। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের প্রতি তারা অ্যাপলের এয়ারফোন কপির অভিযোগও তুলেছেন।

এই বিষয়ে ভার্জের একটি প্রতিবেদনে এক ব্যক্তি লিখেছেন যে, ‘হুয়াওয়ে ফ্রিবাডস থ্রি উন্মোচন করা হয় আইফা ট্রেড শোতে। এমনকি বর্তমানে তারা অনুকরণের বিষয়টিও গোপন রাখার চেষ্টা করছে না। তবে কতো লোক এই কপি পণ্য কিনে থাকেন?’

অপর একজন লিখেছেন যে,‘ ব্যবহারকারীরা এয়ারপডগুলো ব্যবহার করছে এমন ভেবে যদি কপি পণ্যগুলো কিনে থাকে তবে অ্যাপলের পণ্য কপিরাইটের কারণে লোকশানেও পড়তে পারে অ্যাপল।’

এদিকে দ্য সানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হুয়াওয়ে স্বীকার করেছে যে, তারা অ্যাপলের আইকনিক ডিজাইন রিলিজ হওয়ার পর ফ্রিবাডসের ডিজাইনটি করেছেন।

অপর একজন মুখপাত্র বলেছেন যে, ‘ক্রেতারা অনলাইনে পণ্য দেখার সময় ওই পণ্যের বিবরণ ভালো করে দেখেনই না। আপনি হুয়াওয়ের ফ্রিবাডস এবং অ্যাপলের এয়ারপড ভালো করে লক্ষ্য করলে এর মধ্যেও তফাৎটা সবাই বুঝতে পারবেন। উভয় পণ্য সাদা ও কালো। দেখতেও প্রায় একরকম। তাই ব্যবহারকারীরা দুই কোম্পানির পণ্যের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে ফিরছে।’

তবে বৈশিষ্ট্যগুলো ভালো করে লক্ষ্য করলেই দুইটি পণ্যের মধ্যে উন্নত পণ্যটি বুঝতে পারবেন। তবে ফ্রিবাডস খুব দ্রুত ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে এখন পর্যন্ত দামের বিষয়ে কোনও সমাধানই হয়নি। যদিও হুয়াওয়ে বলছে যে, তারা এয়ারপডের তুলনায় অনেক সস্তায় তাদের পণ্য ব্যবহারকারীদের উপহার দিবে।

চায়নার টেক প্রতিষ্ঠান টাইটান সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে এয়ারপডের বিষয়ে বারবার বলছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে জানানো হয় যে, ফ্রিবাডস থ্রি এয়ারপডের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি চার্জ ধরে রাখতে পারে এবং এটি দ্বিগুণ দ্রুত চার্জ করতে সক্ষম। হুয়াওয়ের এয়ারপডগুলোতে নয়েস ক্যান্সেলেশন ফিচার রয়েছে যেটি অ্যাপলের এয়ারপডে নেই। একই অনুষ্ঠানে পি ৩০ প্রো মডেলের একটি স্মার্টফোনও উন্মুক্ত করা হয়েছে। এই স্মার্টফোনটিতে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড টেন অপারেটিং সিস্টেম বিদ্যমান।

জানা যায়, ওয়্যারলেস এয়ারপডগুলো ব্যবহারকারী এবং উৎপাদন কোম্পানির কাছে ক্রমেই আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অ্যামাজন, মাইক্রোসফটসহ বেশ কিছু কোম্পানি কয়েক মাসের মধ্যে বেশ কয়েকটি নতুন পণ্য বাজারে উন্মুক্ত করেছে। তবে অ্যাপল তাদের এয়ারপড এবং এয়ারপড প্রো দিয়ে তাদের আধিপত্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

হুয়াওয়ের ভাষ্য মতে, ফ্রিবাডস থ্রি হলো- এয়ারপড টু-এর মতোই। এগুলো দেখতে অনেকটাই একই রকম। চার্জিং কেস এবং অনেকগুলো ফিচারেরও রয়েছে মিল।

আসলে ফ্রিবাডস থ্রি অন্য কোনও কোম্পানির হিট পণ্য নয়। তারা নিজেরাই বলছে যে, নয়েস প্রটেকশন ফিচারের জন্য তারা ধন্য। নতুন এই ফ্রিবাডসের মূল্য ১৭৯ ইউরো।

ফ্রিবাডস থ্রি বর্তমানে ইউরোপের বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে। ইউকে এবং জার্মানসহ বেশ কয়েকটি দেশে শীঘ্রই আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

যা রয়েছে এই হুয়াওয়ের ফ্রিবাডস থ্রিতে :

# কিরণ এওয়ান চিপসহ ৫.১ ব্লুটুথ ও ইএলই ৫.১।

# রয়েছে ডুয়াল চ্যানেল কানেকশন সুবিধা।

# থাকছে নয়েস ক্যান্সেলেশন সুবিধা (এয়ারফোনে বিশ্বের প্রথম) সর্বোচ্চ ১৫ ডিবি।

# ১৯০ মিলিসেকেন্ড মিনিমাম লিটেন্সি।

# এতে সংযোগ টাইম ২.৫ সেকেন্ড।

# নয়েস পিকআপের জন্য পৃথক সেন্সর।

# নয়েস ডিজাইন বাতাসের শব্দমুক্ত।

# আইপিএক্স ফোর।

# রয়েছে বেস টিউব চিহ্নিত করতে ১৪ মিলিমিটার ড্রাইভার।

# এতে ওয়্যার্ড চার্জিং: ইউএসবি টাইপ-সি (৫ ভোল্ট, ১.২ এম্পিয়ার, ৬ ওয়াট)।

# এটি ওয়্যারলেস চার্জিং কিউআই স্ট্যান্ড (২ ওয়াট)।

# ব্যাটারি: ৩০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার প্রতিটি এয়ারবার্ডসে, ৪১০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার প্রতিটি কেসে।

# ব্যাটারি লাইফ হলো: ৪ ঘণ্টা (শুধু এয়ারপড), ২০ ঘণ্টা (চার্জিং কেসে)।

# এটির ওজন: ৪.৫ গ্রাম প্রতিটি এয়ারপড, ৪৮ গ্রাম প্রতিটি কেস।

তথ্যসূত্র: দ্য সান ও অ্যান্ড্রয়েড অথরিটি