বিশেষ নিবন্ধ

স্যোশাল মিডিয়ায় আসক্তির কারণে ভেঙ্গে যেতে বসেছে সামাজিক বন্ধন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান প্রযুক্তির যুগে এসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। স্যোশাল মিডিয়ায় আসক্তির কারণে ভেঙ্গে যেতে বসেছে সামাজিক বন্ধন।

একসময় ছিলো যখন বহু দূরের পথ পাড়ি দিয়ে হলেও মানুষ একে অন্যকে দেখতে আসতেন। আবার কোনো অনুষ্ঠানের দাওয়াত পৌঁছাতেও যেতে হতো অনেক পথ পাড়ি দিয়ে। আতিথিয়তা থেকে গল্প, আড্ডা, খুনসুটি সব কিছুই ছিল সামাজিক পরিচিত চিত্র।

আর্থিক সংগতি না থাকলেও আন্তরিক বন্ধন তখন ছিল অটুট। তবে এখন একটি ফোন কল বা ম্যাসাঞ্জারের মাধ্যমে এক মুহূর্তেই কাজ শেষ। যে কারণে মানুষের সঙ্গে মানুষের যে সম্পর্ক বা হৃদ্যতা আগে ছিলো তা আগের মতো থাকছে না। বিয়ে-শাদি কিংবা বিভিন্ন দাওয়াতও এখন মানুষ সামান্য ম্যাসেজের মাধ্যমে কিংবা ফেসবুক টুইটারের মাধ্যমে দিয়ে দিচ্ছে।

Related Post

এক সময় পরিবারের সবাই মিলে এক সঙ্গে বসে আড্ডা গল্প করা হতো। শিশুরাও এ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারতো। অথচ এখন স্যোশাল মিডিয়ায় যুক্ত হয়ে সবাই নিজেদেরকে এতে ডুবিয়ে রেখেছেন সব সময়। যে কারণে পারিবারিক বন্ধনও দিনে দিনে শিথিল হয়ে যাচ্ছে ক্রমেই। একে অন্যের প্রতি যে ভালোবাসা সেটির পরিবর্তে বাড়ছে ফেসবুক কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি প্রবল আসক্তি। এক্ষেত্রে সবচেয় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোমল মতি শিশুরা। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, বর্তমানে বিয়ে ভাঙ্গার অন্যতম কারণই হয়ে দাঁড়িয়েছে স্যোশাল মিডিয়া কিংবা ফেসবুক।

স্যোশাল মিডিয়ার ভয়াবহতা হতে কিভাবে আমরা বের হয়ে আসতে পারি? সেটিই এখন ভাববার বিষয়। এমন প্রশ্নে বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নেহাল করিম বলেছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নিজেদেরকে সেই আলোকেই তৈরি করে নিতে হবে। প্রযুক্তিকে বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগই নেই। তবে দেখতে হবে সেটিকে আমরা কিভাবে ব্যবহার করছি। আমাদের সন্তানদেরকে সেভাবেই গড়ে তুলতে হবে। স্যোশাল মিডিয়ার প্রভাব অনেক বেশি সেটি ঠিক। এ থেকে অবশ্যই নিজেদেরকেই বের করে আনতে হবে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই বলেন আমরা এগুলোকে নির্মূল করবো। তবে কোনো কিছুকেই কখনও নির্মূল করা যায় না। আসলে হ্রাস করা যায়। সেজন্য নিজেদের সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। সন্তানদের কাছ থেকে কোনো কিছু লুকাতে চাইলে তারা আরও বেশি পরিমাণে সেদিকে ঝুঁকবে সেটিই স্বাভাবিক নিয়ম। তাই তাদেরকে ভালো মন্দ, কোনটা সঠিক সেই বিষয়ে জ্ঞান দিতে হবে। পারিবারিক বন্ধন ঠিক রাখতে নিজেদের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করতে হবে যে কোনো ভাবেই হোক। সুতরাং নতুন নতুন প্রযুক্তি আসবে তবে সেটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার আমাদের করতে হবে। তাহলে কোনো সমস্যাই হবে না।

বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা একটু বেশিই জড়িয়ে পড়েছি। অর্থ্যাৎ আমরা আসক্ত হয়ে পড়েছি। সে কারণে আমরা নিজের সামাজিক বন্ধন নষ্ট করে দিচ্ছি। সবকিছুই যন্ত্র নির্ভর হয়ে পড়ছে। তবে আত্মিক সম্পর্ক নষ্ট করে নয়। একসময় পারিবারিক বন্ধন, পারস্পরিক আন্তরিকতা, খুনসুটি, আড্ডা ছিল আমাদের সমাজের অন্যতম একটি সংস্কৃতি। এখন পারিবারিক বা সামাজিক সম্পর্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমমুখী হয়ে উঠছে। আধুনিক হতে গিয়ে সবকিছু যেনো হারিয়ে ফেলছি। এদেশে মানুষের আন্তরিকতা কিংবা পারিবারিক বন্ধন নিয়ে যে সুনাম ছিল সেটি বর্তমানে অনেকটা হারিয়ে যেতে বসেছে। একুশে টেলিভিশন অবলম্বনে।

This post was last modified on ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২০ 4:14 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

অফিসে এসি না থাকলে গরমে সারাদিন পরিশ্রম করে সুস্থ থাকবেন কীভাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক অফিসেই এসির ব্যবস্থা থাকে না। এসি না থাকলেও কাজ…

% দিন আগে

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা: এক মহা দুর্যোগের শিকার এশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুরো বিশ্বের জলবায়ুর সঙ্গে তুলনা করলে প্রথমেই উঠে আসে এশিয়ার…

% দিন আগে

এনার্জিপ্যাকের সঙ্গে চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও…

% দিন আগে

জয়া এবার মা হচ্ছেন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয়তার শিখরে আছেন অভিনেত্রী জয়া। দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী…

% দিন আগে

মার্কিন পতাকা নামিয়ে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়লো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ক্যাম্পাস বিক্ষোভের…

% দিন আগে

বাংলা সাল যেভাবে এলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বৈশাখ এলে বাংলা সালের কথা আমাদের মনে পড়ে। আসলে এই…

% দিন আগে