যে গ্রামে হয় স্বর্ণবৃষ্টি!

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ সেন্দুবার গ্রামে বৃষ্টির পর মূল্যবান ধাতব পদার্থ সংগ্রহ করতে শিশুরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কারণ সেখানে হয় স্বর্ণবৃষ্টি!

অনলাইন সূত্র জানিয়েছে, উপমহাদেশের প্রায় সব কৃষকরা মৌসুমি বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করেন। ভারতের বিহারের কৃষকরা এর ব্যতিক্রম নন। তারাও নিয়মিত মৌসুমি বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করেন। তবে তাদের অপেক্ষা কিছুটা ভিন্ন। ফসলের জন্য বৃষ্টি নয়, স্বর্ণবৃষ্টির অপেক্ষা করেন বিহারের রোহতাস জেলার কাইমুর মালভূমির সেন্দুবার গ্রামের জনগণ। পাটনা থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের এই গ্রামে আক্ষরিক অর্থেই স্বর্ণবৃষ্টি হয়।

ছোট্ট এই গ্রামটির ৫০০ অধিবাসীর সবাই জানিয়েছেন, বৃষ্টির পানির সঙ্গে ছোট ছোট স্বর্ণের টুকরো ও এই জাতীয় দামি ধাতু পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত পাহাড়ি এলাকার লোকেরা বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করেন, সেটি ছাঁকতে গিয়েই এসব দামি ধাতুর সন্ধান পান গ্রামবাসীরা। তারাই জানান, বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদরা এই কাইমুর মালভূমির ঠিক উপরের এলাকায় স্বর্ণ ও মূল্যবান ধাতুর সন্ধান পাওয়ার পর থেকেই বৃষ্টির পানিতে পাওয়া যাচ্ছে এসব পদার্থ।

জানা যায়, দুই ধাপে এই মালভূমিতে খনন কাজ হয়েছিল। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৭, এরপর ১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত খনন কাজ চলে এ অঞ্চলে। পরে অর্থাভাবে এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিহারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের খননবিষয়ক কর্মকর্তা অতুল কুমার ভার্মা জানান, কাইমুর মালভূমিতে খননের ফলে মাটি সরে গিয়ে স্বর্ণজাতীয় দামি খনিজ বের হয়ে আসছে। সেটিই বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে এই গ্রামে এসে পড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এখানে মাটির নিচে স্বর্ণ ছাড়া আরও অনেক মূল্যবান ধাতু রয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানান, বিহারের কাইমুর মালভূমি ২ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটার। এই মালভূমির অনেক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। এই অঞ্চল মগ্ধ, গুরজাহার, প্রাতিহারা ও মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি বৌদ্ধ মঠও ছিল। সপ্তম শতকে এই মালভূমি হর্ষবর্ধনের কনৌজ সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। এমন কি উত্তর ভারতের শাসক শেরশাহ শূরির জন্মও হয়েছিল কাইমুরে এবং এখান থেকেই তিনি শাসন শুরু করেন।

রোহাতস জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ কুমার বলেন, যুগে যুগে এই অঞ্চলে অসংখ্য সমৃদ্ধ জাতির বসবাস ছিল। সেসব সমৃদ্ধ নগরীর কোনো একটি অংশ সেন্দুবার গ্রামের ওপরেই ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভূমি ধস বা কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগে চাপা পড়ে গেছে এই গ্রামের সভ্যতা। এখন সেই মাটি থেকে উঠে আসছে সভ্যতার নিদর্শন। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

This post was last modified on জুন ৭, ২০২৩ 12:44 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

Recent Posts

হৃদয় কাড়া এক প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% দিন আগে

কাদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে? অভ্যাসের পরিবর্তন কী এই রোগকে ঠেকাতে পারে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হিসাববিহীন জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, প্রাত্যহিক বিভিন্ন বদভ্যাসই স্তন ক্যান্সার ডেকে…

% দিন আগে

নিজের আইপি অ্যাড্রেস জানবেন যেভাবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অনেকেই নিজের আইপি অ্যাড্রেস সম্পর্কে মোটেও অবগত নন।…

% দিন আগে

শ্রেয়া ঘোষালের সঙ্গে ডুয়েট গাইবার ইচ্ছে- রিজভী ওয়াহিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রিজভী ওয়াহিদ- যাকে বাংলা আধুনিক গানে প্রেমের গানের শিল্পী বলা…

% দিন আগে

গাধার সংখ্যা যে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি পালিত হলো বিশ্ব গাধা দিবস। ‘গাধা’ শব্দটি প্রায়ই আমরা…

% দিন আগে

গাছ-গাছালির মাঝে পাথরের এমন দৃশ্য সত্যিই এক ব্যতিক্রমি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% দিন আগে