দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুই প্রজন্মের দুই ব্যক্তি। একজন মাত্রই পৃথিবীতে এসেছে। বয়স মাত্র ৬ মাস। অপরজন পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার সময় হয়ে এসেছে, বয়স ১০২ বছর। তাদের চেহারায় আশার আলো দেখতে পাচ্ছে ইতালি।
১০২ বছর যার বয়স তিনি বিদায় নিতে পারতেন বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর। তবে ১০২ বছর বয়সী সেই বৃদ্ধা দিব্যি বেঁচে গেলেন করোনার ভয়াল থাবা হতে! ইতালিতে যাকে এখন ‘অমর’ উপাধিও দেওয়া শুরু হয়েছে। যেমনটা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বেঁচে গেলো ৬ মাস বয়সী একটি শিশু!
৬ মাস বয়সী শিশুটির নাম লিওনার্দো ও ১০২ বছর বয়সী বৃদ্ধার নাম ইতালিকা গ্রনদোনা। এই দু’জনই ইতালির উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা। যে এলাকাকে বলা হচ্ছে যে, ইউরোপে করোনা ভাইরাসের ‘গ্রাউন্ড জিরো’।
তবে খুব সহজে এই দু’জনকে করোনা ভাইরাস পরাজিত করতে পারেনি। দীর্ঘদিনের লড়াই হয়েছে তাদের মধ্যে। জীবন নিয়ে বেশ টানাটানিও করেছে কোভিড-১৯। তবে মহামারিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত ইতালিতে যখন একের পর এক লাশের সারি তৈরি হচ্ছে, তখন তুমুল লড়াইয়ের পর প্রাণঘাতি করোনাকেই হার মানিয়ে দিয়েছেন ইতালিকা গ্রনদোনা ও লিওনার্দো।
ছোট্ট লিওনার্দো করোনার সঙ্গে লড়াই করেছে এক হতে দুই সপ্তাহ নয়, একটানা ৫০দিন। উত্তর ইতালির ল্যাম্বোর্ডি এলাকার করবেট্টা মিউনিসিপ্যালিটিতে জন্মগ্রহণ করে শিশু লিওনার্দো। জন্মের ৪ মাস যেতে না যেতেই প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় সে। ইতালিতে করোনার হানা দেওয়ার শুরুতেই আক্রান্ত হয় শিশুটি।
তারপর হাসপাতালের বিছানায় তার সঙ্গে চলতে থাকে করোনার লড়াই। ৫০ দিনের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর যখন লিওনার্দো করোনাকে পরাজিত করে ঘরে ফিরলো, তখন স্থানীয় মেয়র মার্কো ব্যালারিনি তাকে উপাধি দিলেন যে, ‘দ্য ওয়ান্ডারফুল ফেইস অব হোপ।’ একই সঙ্গে ছোট্ট লিওনার্দোকে ধন্যবাদও জানালেন, উত্তর ইতালিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকার এই স্পৃহা পূনর্জাগরণের জন্য।
মেয়র বলেন যে, ‘সত্যিই আজ আমাদের মুখে হাসি ফোটার অনেক বড় একটি উপলক্ষ তৈরি হয়েছে। আমাদের খুব খুশিও লাগছে এবং মনে করতে পারছি যে আমরা একটা সমাজেরই অংশ। আজ আমরা একটি অসাধারণ আশা জাগানিয়া মুখমন্ডলও দেখতে পাচ্ছি। করবেত্তা তাকে স্বাগত জানাচ্ছে, আজই মাত্র তাকে করোনা ভাইরাসের বিপক্ষে জয়ী হিসেবে হাসপাতাল হতে রিলিজ দেওয়া হচ্ছে।’
পরক্ষণে তিনি আরও বলেন, ‘লিওকে অনেক ধন্যবাদ। একই সঙ্গে তোমার মা-বাবাকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যারা কখনই তোমার ব্যপারে আশা ছেড়ে দেননি। তারা করবেত্তার সমস্ত মানুষের হৃদয়কেই যেনো উষ্ণ করে দিয়েছেন। করবেত্তাকে অনেক শক্তিশালীও করেছেন।’
শিশুটির মা স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন, ‘আমি তাকে দেখে খুবই অবাক হয়ে যেতাম। বিশেষ করে রাতের বেলা। আর কোনো মায়ের যেনো এই ধরনের কোনো অভিজ্ঞতা না হয়।’
শিশুটির মা জানিয়েছেন, তার সন্তান যখন খুব জ্বরে ভুগতে ভুগতে অসুস্থ ও হার্টরেট খুব কমে গিয়েছিল, তখন তার বেঁচে থাকার আশা ওঅনেকটাই কমে গিয়েছিল। তারপরও, যখন তার বাবার এক কলিগ করোনা পজিটিভ হিসেবে ধরা পড়ে, তখন আমরাও নিশ্চিত হয়েছি, সে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। তবে স্থানীয় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ওআপ্রাণ চেষ্টা করে ছোট্ট লিওনার্দোকে সুস্থ করে তোলার।
অপরদিকে ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় আরেক শহর জেনোয়ার সান মার্টিনো হাসপাতালে ১০২ বছর বয়সী ইতালিকা গ্রনদোনার করোনা ভাইরাসকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনা বেশ তোলপাড় ফেলে করে দিয়েছে। এই বৃদ্ধাও দীর্ঘ লড়াই করেন করোনার সঙ্গে। ২০ দিন হাসপাতালের বিছানায় কাটাতে হয় তাকে।
মার্চের শুরুর দিকেই করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়েই হাসপাতালে আসেন টেস্ট করার জন্য। করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর তিনি হাসপাতালে ভর্তিও হন। হার্টের সমস্যাও ছিল তার। তবে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল হতে মুক্তি পেলেন তিনি। জেনোয়ার চিকিৎসকরা বলেই বসেছেন, ‘এই নারীর কাছে করোনা ভাইরাস পরাজিত হয়েছে।’
চিকিৎসকরা তার নিক নেমটাই (উপনাম) পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তার নাম দিয়েছেন ‘হাইল্যান্ডার (পর্বতবসী)- দ্য ইমোরটাল (অমর)।’ সিএনএনকে চিকিৎসক ভেরা সিকবালদি বলেন, ‘তিনি (গ্রনদোনা) সব বয়স্ক মানুষের অনেক বড় এক প্রতিনিধি ও তিনি বয়স্কদের সামনে নিজেকে আশার প্রতীক হিসেবেই তুলে ধরতে পেরেছেন।’
ইতালির ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে জানা যায়, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর মৃতদের গড় বয়স হলো ৭৮। এর মধ্যে ইতালিকা গ্রনদোনার সুস্থ হওয়ার বিষয়টি বিরল একটি ঘটনা।
ইতালিকা গ্রনদোনার সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনায় চিকিৎসকরাও নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। তাদের গবেষণায় এক ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। তারা আরও গভীর গবেষণা করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ইতিমধ্যে। সিকবালদি বলেন, চিকিৎসকরা গ্রনদোনার বেঁচে ওঠার বিষয়ে মোটেও আশাবাদী ছিলেন না।
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।
This post was last modified on এপ্রিল ৬, ২০২০ 1:48 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ৫ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২২ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পরিমাণে একটু বেশি আম খেলেই গ্যাসের মতো সমস্যা হয় অনেকের।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ। দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আজওয়া টেকের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের বহুল আলোচিত সিনেমা ‘পিংক’ এর নির্মাতা অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জিম্মি চুক্তিতে রাজি হতে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে মাত্র সাত…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবারের ছবিটি একটু ভিন্ন ধরনের এই ছবির ভিতরে লুকিয়ে চুরিয়ে…