দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশসহ দেশজুড়েই করোনা ভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। শুরুতে বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলেও এখন সেটি আর নেই। আজ জেনে নিন টিকা নেওয়ার বিষয়ে কিছু তথ্য।
টিকাকেন্দ্রগুলোতে সম্মুখসারির করোনাযোদ্ধাসহ বয়স্ক মানুষের ভিড় দিনকে দিন বাড়ছে। এ পর্যন্ত বড় কোনো অঘটন কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সংবাদ আসেনি। মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কারও কারও হয়েছে, যা খুবই স্বাভাবিক। সেজন্য কাওকে হাসপাতালে ভর্তি হতেও হয়নি।
সামনে যারা টিকা নিতে আগ্রহী আছেন, তাদের মধ্যে কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে বা হলে কীভাবে সামাল দেবেন, তা জেনে রাখা দরকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনসহ (সিডিসি) অন্য সংস্থাগুলো এই বিষয়ে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশ (সিডিসি) বলছে, বর্তমানে ব্যবহৃত ফাইজার, বায়োএনটেক এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাগুলোতে ইনজেকশন দেওয়ার স্থানে মৃদু ব্যথা ও ফুলে যাওয়া, মাথাব্যথা, অবসাদ, কাঁপুনি, জ্বরের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। এর বাইরে টিকা নেওয়া কিছু মানুষের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিজ্ঞানীরা লিপিবদ্ধ করে যা পেয়েছেন, তা একেবারেই দুর্লভ। এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে, মাংসপেশি এবং সন্ধিতে ব্যথা, ইনজেকশনের স্থানে র্যাশ কিংবা দানা, স্থানীয় লসিকা গ্রন্থি (যেমন বগলের) ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো মৃদু ও অন্য যে কোনো টিকার ক্ষেত্রেও হতে পারে। এগুলো কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিনও স্থায়ী হতে পারে। আরও দুটি পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, বয়স্কদের চেয়ে বরং অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের এই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে বেশি। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে যে, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ইমিউন রেসপন্স বেশ কিছুটা দুর্বল হয়ে আসে, বরং কম বয়স্কদের ইমিউন সিস্টেম টিকার পর বেশ ভালো প্রতিক্রিয়া দেখায়। এর অর্থ হলো টিকার পর মৃদু বা সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে যে, ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় হয়েছে।
টিকার জন্য নিবন্ধন করার পর মনে মনে প্রস্তুতি নিতে থাকুন। পরবর্তী কয়েক দিন দূরে কোথাও বেড়ানো কিংবা ভারি কোনো কার্যক্রম কিংবা অনুষ্ঠানের আয়োজন না করাই ভালো। পর্যাপ্ত বিশ্রাম যাতে পাওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা নিয়ে রাখায় ভালো।
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের সুগার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কি না, আগে থেকেই দেখে নিতে পারেন। ডিপ ইন্ট্রামাসকুলার ইনজেকশনে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে সংক্রমণ হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। শর্করা খুবই অনিয়ন্ত্রিত থাকলে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে।
আপনার কোনো ওষুধে বা ইনজেকশনে পূর্বে তীব্র প্রতিক্রিয়া হওয়ার ইতিহাস রয়েছে কি না তা জানিয়ে রাখুন। সেজন্য নিবন্ধনপত্রে সঠিক মেডিকেল হিস্ট্রি দিতে হবে।
ব্যথা হলে সাধারণ প্যারাসিটামল কিংবা ওভার দ্য কাউন্টার ব্যথানাশক (যেমন আইবুপ্রফেন) গ্রহণ করতে পারেন। তবে টিকা দেওয়ার আগে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্যারাসিটামল কিংবা নন স্টেরয়ডাল অ্যান্টি ইনফ্লামাটেরি খাওয়ার কোনো দরকার নেই। এতে টিকার কার্যকারিতায় হয়তো প্রভাব পড়তে পারে। কেবল প্রয়োজন হলেই পরে এটি গ্রহণ করুন।
টিকা নেওয়ার দিন বা পরদিন, বিশেষ করে যদি অবসন্নতা কিংবা ক্লান্তি বোধ হতে থাকে, তাহরে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। দরকার হলে এক দিন ছুটিও নিতে পারেন। শুয়ে থাকুন, তবে মাঝেমধ্যে উঠে সামান্য হাঁটাহাঁটিও করুন। প্রচুর পানি পান করতে হবে।
কারও কারও টিকা দেওয়ার ৫ হতে ১০ দিন পর ওই স্থানে র্যাশও হতে পারে। এটি একটি বিলম্বিত অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া। সে ক্ষেত্রে অ্যান্টি হিস্টামিন খাওয়া যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে করায় ভালো।
টিকা দেওয়ার পর টিকাকেন্দ্রের বিশ্রামকক্ষে অন্তত ৩০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। অকারণে কোনো রকম ছোটাছুটি করবেন না। অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেবেন না। এই সময় পানি পান করুন।
কোনো খারাপ লাগা কিংবা সমস্যায় কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবী, কর্তব্যরত চিকিৎসক কিংবা নার্সকে অবহিত করুন। প্রতিটি টিকাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার সব উপকরণই থাকে। খুব স্বল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে তীব্র মাত্রার অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া কিংবা অ্যানাফাইলেক্সিস হওয়ার রেকর্ড রয়েছে, তাও আবার কেবল ফাইজার-বায়োএনটেক টিকার ক্ষেত্রে (আমাদের দেশে দেওয়া হচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা)। অ্যানাফাইলেক্সিস হলে আপনাকে কী করতে হবে, তার প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি টিকাকেন্দ্রগুলোতে রয়েছে।
টিকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে ১৬২৬৩ নম্বরে কল করে পরামর্শ নেওয়া যাবে।
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।
This post was last modified on মার্চ ৪, ২০২১ 8:45 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২৯ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি আপনি হৃদরোগের থেকে দূরে থাকতে চান তাহলে ভরসা রাখতে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে রাজধানী ঢাকার রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে গতকাল…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাশ্রয়ী দামে শক্তিশালী ব্যাটারি, দ্রুত চার্জিং সুবিধা; সাথে দৃঢ়তা ও…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মারণব্যধি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন ভারতীয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিনা খান।…