জাতীয়

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন- শিশুর হৃদয় হোক রঙিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ ১৭ মার্চ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম শতবার্ষিকী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে উদযাপিত হচ্ছে আজকের এই দিনটি।

গত বছর বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন থেকে শুরু হয় মুজিব বর্ষ যা এ বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সে কারণে এই দিনটি জাতীয় শিশু কিশোর দিবস হিসাবেও উদযাপিত হয়। এই দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়। এবারের জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর হৃদয় হোক রঙিন’।

Related Post

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃখক পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশী দূতাবাসগুলোতেও এই দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপন করা হবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

ইতিপূর্বে গতবছর বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও করোনা ভাইরাসজনিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে মুজিব বর্ষের কর্মসূচি পুনর্বিন্যাস করে উদযাপিত করা হচ্ছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আজ ১৭ মার্চ হতে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। বিদ্যমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানে দেশী-বিদেশী অতিথিরা অংশগ্রহণ করবেন।

তিনি জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানমালায় প্রতিদিন পৃথক থিমভিত্তিক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অডিওভিজুয়াল এবং অন্যান্য বিশেষ পরিবেশনা’র মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালার থিমগুলো হলো –
১৭ মার্চ ‘ভেঙেছ দুয়ার এসেছো জ্যোতির্ময়’
১৮ মার্চ ‘মহাকালের তর্জনী’
১৯ মার্চ ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’
২০ মার্চ ‘তারুণ্যের আলোকশিখা’
২১ মার্চ ‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের গান’
২২ মার্চ ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’
২৩ মার্চ ‘নারীমুক্তি, সাম্য ও স্বাধীনতা’
২৪ মার্চ ‘শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’
২৫ মার্চ ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা’ এবং
২৬ মার্চ ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’।

দশদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় আজ ১৭ মার্চ, ২২ মার্চ এবং ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও ১৭ মার্চ, ১৯ মার্চ, ২২ মার্চ, ২৪ মার্চ এবং ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।

এই ৫ দিনের অনুষ্ঠানে বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধানগণ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আজকের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্, ১৯ মার্চ অনুষ্ঠানে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ২২ মার্চ অনুষ্ঠানে নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভা-ারী, ২৪ মার্চ অনুষ্ঠানে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন।

এই ৫ দিনের অনুষ্ঠানেই স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে সীমিত আকারে ৫০০ জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও এই ৫ দিনের অনুষ্ঠানসহ অন্য ৫ দিনের অনুষ্ঠানমালায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণের ধারণকৃত বক্তব্য প্রদর্শন করা হবে। প্রত্যেকদিনের অনুষ্ঠান টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

১৯৪০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে যা মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

বঙ্গবন্ধু ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৫৩ সালে তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার এই অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা এবং পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক এবং স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন। তাঁর সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে ধাপে মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা ধরনের নির্যাতন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। যা ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়াল্ড রেজিস্টার-এ অর্ন্তভুক্তির মাধ্যমে বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

অপরদিকে, ২৬ মাচর্ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন ও তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে বাঙ্গালীর বহু আকাঙ্খিত বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়। বিংশ শতাব্দীতে নির্যাতিত, নিপীড়িত এবং শোষিত মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যারা বিশ্বনন্দিত নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম। তথ্যসূত্র: একুশে টেলিভিশন।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর

অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।

This post was last modified on মার্চ ১৭, ২০২১ 11:11 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ডায়াবেটিস রোগিরা ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ খেলে কি রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ স্বাদে মিষ্টি না হলেও এই ধরনের খাবারে শর্করার…

% দিন আগে

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে সাব্বির আহমেদকে নিয়োগ দিলো ভিসা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেমেন্ট প্রযুক্তিতে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের…

% দিন আগে

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অন্তর্ভূক্তিমূলক থিয়েটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার…

% দিন আগে

বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শাকিব খান!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলীকে…

% দিন আগে

৬ মাসে ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত ১৩ হাজার শিশু

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার…

% দিন আগে

আপনার চরিত্র কেমন তা আপনার আঙুলের আকৃতিই বলে দেবে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার ব্যক্তিত্ব কীরকম তা বলে দিতে পারে আপনার আঙুলের আকৃতি!…

% দিন আগে