লাইফস্টাইল

মনের শুদ্ধি ও সুস্থ জীবন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সুস্থ জীবন যাপন করা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। তবে এই সুস্থ জীবন যাপন করতে গেলে অনেক রকম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। আর এই সুস্থ জীবনের সঙ্গে মনের শুদ্ধিও জড়িত।

বোখারী শরীফের হাদীস হলো, ‘মানুষের শরীরে এক টুকরো মাংসপিণ্ড রয়েছে, যা ভালো থাকলে সমস্ত শরীরই ভালো থাকে আর তা দূষিত হয়ে পড়লে সমস্ত শরীরই খারাপ হয়ে যায়। সেটিই হলো ক্বালব।’ এর একটি অংশ হলো এনাটমিক্যাল হার্ট বা হৃৎপিণ্ড, আর অপরটি হলো হৃদয়। হৃৎপিণ্ড ও হৃদয় এক কিনা, তা নিয়ে রয়েছে দ্বিমত।

আসলে মানুষের জন্মরহস্য বেশ সূক্ষ্ম এবং জটিল একটি বিষয়। শরীরের প্রতিটি কোষের মধ্যেই রয়েছে চেতনা; এতে প্রতিনিয়ত চলছে ভাঙাগড়া। মায়ের গর্ভে আমাদের যখন জন্ম হয় তখন প্রথমে একটিমাত্র কোষ থাকে। সেই কোষটি ভাগ হতে হতে একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি- ঠিক এভাবেই ৯ মাসে পুরো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গড়ে ওঠে।

মানবশিশুর হৃৎপিণ্ড তৈরি হয় গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে। একে বলা হয়ে থাকে মাস্টার অর্গান, কারণ হৃৎপিণ্ডই পুরো শরীরে রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মাতৃগর্ভ থেকে শুরু করে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এই অঙ্গ নিরলসভাবেই কাজ করতে থাকে। কোনো কারণে যদি হৃৎপিণ্ড বন্ধও হয়ে যায় তাহলে আমাদের মৃত্যু ঘটে থাকে। শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গই আমাদের জন্যে অত্যন্ত জরুরি। হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, পাকস্থলী, বৃক্ক, যকৃৎ প্রত্যেকেই সুশৃঙ্খল এবং সমন্বিতভাবে একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যদিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। যে কারণে সম্ভব হচ্ছে আমাদের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার। এই সমন্বয়ের কাজটি সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে আমাদের সচেতন চেষ্টা ছাড়া।

মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, তারপেই তাকে সবকিছু শিখিয়ে দিলেন। সেই মানুষ আজ তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তির মাধ্যমে কতো কীই না করছে! বিজ্ঞানীরা একে একে মহাবিশ্বের সৃষ্টিরহস্য উন্মোচন করেছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের জগতেও ঘটে চলেছে অভাবনীয় নানা পরিবর্তন। বর্তমানে হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাও সম্ভব হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে যে, যার শরীরে হার্ট প্রতিস্থাপন করা হলো তার মানসিকতা এবং খাদ্যাভ্যাসে নানা পরিবর্তন আসে।

সুস্থ থাকতে হলেও প্রত্যেকেরই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। আগে কলেরা বসন্ত ইত্যাদি সংক্রামক ব্যাধি দেখা যেতো। আজকাল মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে হৃদরোগ ক্যান্সার ডায়াবেটিস ইত্যাদি নানা অসংক্রামক ব্যাধিতে। একবার এ রোগগুলো কারও হয়ে গেলে তা একটি সচ্ছল পরিবারকেও অসচ্ছল করে ফেলতে পারে। ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে এ রোগগুলো থেকে মুক্ত থাকতে হবে। এই রোগগুলো অনেকটাই মানুষের নিজেরই সৃষ্টি। কোরআনে (সূরা রুম, আয়াত ৪১) যেমন বলা রয়েছে, হে মানুষ! তোমাদের কর্মের প্রতিক্রিয়াতেই জলেস্থলে বিপর্যয় এবং বালা-মুসিবত ছড়িয়ে পড়ে …। তেমনি এ রোগগুলোও আমাদের ভুল খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে এতোটা বাড়ছে।

আমরা এখন ফাস্টফুডসহ নানা ধরনের কুখাদ্য খাচ্ছি। কোনো ব্যায়াম করছি না। তবে নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। শাকসবজি এবং দেশীয় ফলমূল খেতে হবে। মাংস ও চর্বিজাতীয় খাবার যতদূর সম্ভব কমাতে হবে। লবণ বেশি খেলে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ধূমপান, জর্দা, সাদা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকলে অনেক রোগ থেকে বেঁচে যাওয়া সম্ভব। সেইসঙ্গে নিয়মিত ব্যায়ামচর্চা এবং হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। অফিসে যাওয়ার সময় বা বাসায় ফেরার সময় হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। সম্ভব হলে লিফট ব্যবহার না করে হেঁটে ওপরে উঠতে হবে।

সর্বপরি আমাদের সব সময় মনকে ঠিক রাখতে হবে। কারণ মনের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। মনোবল আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে। আমাদের জীবন চর্চাতেও এই মনোযোগের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই বলা যায় মনের শুদ্ধির সঙ্গে সুস্থ জীবন যাপনের যোগসূত্র রয়েছে। এটি আমরা কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারবো না। তাই আমাদের ঠিক সেভাবেই এগিয়ে যেতে হবে।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।

This post was last modified on মে ৩১, ২০২১ 1:53 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

এসসিবি-চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৩: ‘সেরা কৃষি প্রতিষ্ঠান’ স্বীকৃতি পেলো আইফার্মার

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক অ্যান্ড চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৩- এর…

% দিন আগে

দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রীর ছোটবেলার ছবি: বলুনতো এটি কে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে ছবিটি আপনারা দেখছেন সেটি দেশের জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রীর ছোটবেলার…

% দিন আগে

ওয়ারেন্ট ঠেকাতে মরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: গ্রেফতার আতঙ্কে নেতানিয়াহু!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের…

% দিন আগে

ছবিতে লুকিয়ে রয়েছে একটি কাঁচি: কেবলমাত্র বুদ্ধিমানেরাই ৩০ সেকেন্ডে খুঁজে বের করতে পারবেন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছবিতে লুকিয়ে রয়েছে একটি কাঁচি। তবে এই কাঁচির প্রতিকৃতিটি এই…

% দিন আগে

মাছ ধরার এক অসাধারণ দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

ডায়াবেটিস রোগিরা ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ খেলে কি রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ স্বাদে মিষ্টি না হলেও এই ধরনের খাবারে শর্করার…

% দিন আগে