নিয়মতান্ত্রিক খাদ্যাভ্যাস শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীর সুস্থ থাকতে যেমন প্রয়োজন ভিটামিন, ঠিক তেমনি প্রয়োজন মিনারেল। আবার ওজন নিয়ন্ত্রণেও জানতে হবে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের প্রয়োজনীয় কিছু নিয়ম।

শরীরকে সুস্থ রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে শর্করা, চর্বি, ভিটামিন, মিনারেল এবং পানির সুষম বণ্টন। এছাড়াও তিনবেলা খাবারের পরিবর্তন করে ৫ থেকে ৬ বেলার খাদ্যাভ্যাস আপনাকে গড়ে তুলতে হবে। শরীর সুস্থ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন নিউট্রিশন বিশেষজ্ঞ ডা. মৌসুমী আফরিন ইভা।

# অনেকেই মনে করেন যে চর্বিযুক্ত খাবার ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। এই ধারণাটি মোটেও সঠিক নয়। চর্বি কিংবা ফ্যাট জাতীয় খাবার আপনাকে অবশ্যই খেতে হবে। কারণ হলো ফ্যাটযুক্ত খাবারও শরীরের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন। তবে কোন ধরনের ফ্যাট প্রয়োজনীয় ও কোনটি অপ্রয়োজনীয় সেটি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে।

Related Post

# অনেকেই সুস্থ থাকতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইউটিউব দেখে ধারণা নেন। তবে শরীরের জন্য কোন খাবারটি প্রয়োজন ও কোন খাবারটি বাদ দিতে হবে সে জন্য একজন নিউট্রিশন কনসালটেন্ট কিংবা অভিজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়েই খেতে হবে।

# একজন ডায়াবেটিক রোগী সব সময়ই মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলেন। কারণ এই খাবার রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তবে এমন কিছু খাবার রয়েছে যার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেকটাই বেশি। যা খেতে মিষ্টি নয় তবে তা মিষ্টিজাতীয় খাবারের মতো রক্তের গ্লুকোজ বাড়াতে বিশেষভাবে দায়ী। এক্ষেত্রে এসব খাবারগুলোও পরিহার করাই ভালো।

# কারও রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি হলে তাকে খাবার নিয়ে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। তাছাড়াও গাউট রোগে আক্রান্ত রোগীর জন্য এমন কিছু খাবার নিষিদ্ধ রয়েছে, যা খাওয়ার কারণে শরীরের ব্যথা অজান্তেই বেড়ে যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের অতিরিক্ত পানি পান নয়, বরং পরিমাণ মতোই পানি পান করতে হবে। পিউরিন এবং পটাশিয়াম বেশি এমন শাকসবজি এবং ফলমূলকে খাদ্যতালিকা থেকে অবশ্যই বাদ দিয়ে চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, মিষ্টি ও পেঁপেসহ অন্যান্য খাবার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।

# সাধারণত কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীরা প্রোটিনজাতীয় খাবার কম খেয়ে থাকেন। তবে কিছু রোগী এমনভাবে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বন্ধ করে ফেলেন তাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেজন্য শরীরের ঘাটতি অনুযায়ী পরিমিত প্রোটিন খাবার তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে। প্রতিদিন মাছ, মাংস, ডিম (প্রতি ওজনের জন্য ০.৫–০.৮ গ্রাম আমিষ) অবশ্যই খেতে হবে। সেইসঙ্গে লবণ কিংবা সোডিয়াম খাবারও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

# যারা উচ্চরক্তচাপের রোগী তারা কাঁচা লবণ কম খেলেও প্রতিদিন আচার, চানাচুর, চিপস, মুড়ি, সস কিংবা সয়াসসের রান্না করা খাবার দেদারসে খেয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে লবণের মাত্রা কমার পরিবর্তে আরও বাড়ছে।

# যারা হাইপো থাইরয়েড এ ভুগছেন, তাদেরকে ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ কেক, ওটস, পাউরুটি, পেস্ট্রি ইত্যাদি খাবারগুলো পরিহার করতে হবে এবং লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি খাবার খেতে হবে।

# আবার যারা ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত, যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বা ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা অনেক বেশি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও প্রাণীজ চর্বি জাতীয় খাবার, অতিরিক্ত পোড়া, ডুবো তেলে ভাজা (ট্রান্সফ্যাট) জাতীয় খাবার প্রতিদিনের খাবারের তালিকা থেকে অবশ্যই বাদ দিতে হবে। সেইসঙ্গে যুক্ত করতে হবে মৌসুমি ফলমূল ও সবুজ শাক-সবজি।

# গর্ভবতী মহিলাদের বাচ্চা পেটে থাকা অবস্থায় কামরাঙা, আনারস, পেঁপে খাওয়া যাবে না। এই সময় আমিষ সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, মাংস, দুধ সঠিক পরিমাণে খেতে হবে। সেইসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত শাক-সবজি ও ফলমুল খেতে হবে।

১৪. যারা দিনের বেশিরভাগ সময় ডেস্কে বসে কাজ করেন, তারা কিছুক্ষণ পর পর একটু হাঁটাচলা করতে হবে। ধুমপান-মদ্যপান অবশ্যই পরিহার করুন।

# ডা. মৌসুমী আফরিন ইভা, নিউট্রিশন কনসালটেন্ট, ডায়াবেটলজিষ্ট ও ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান। মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস, মালিবাগ ঢাকা। সিনিয়র রেসিডেন্ট (ইন্টারনাল মেডিসিন), হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হসপিটাল।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।

This post was last modified on নভেম্বর ১৬, ২০২১ 2:32 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে পাকা আম খাবেন কীভাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি পাকা আম খেলে রক্ষে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।…

% দিন আগে

আপনার স্মার্টফোন আগুনের মতো গরম হচ্ছে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই গ্রীষ্মে শুধুমাত্র শরীরই নয়, গরম হচ্ছে আমাদের স্মার্টফোনটিও। ফোন…

% দিন আগে

দেশে ফিরেই মোনালিসা অভিনয়ে ফেরার কথা জানালেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক সময় ছোট পর্দার ব্যস্ত মুখ হিসেবে পরিচিত ছিলেন মোজেজা…

% দিন আগে

এই ছবির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে একটি হরিণ: আপনি কী খুঁজে বের করতে পারবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই জঙ্গলের মধ্যে নদী রয়েছে। রয়েছে সার দেওয়া গাছ। চারপাশে…

% দিন আগে

পাহাড়-পর্বতের এক অসাধারণ দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

সন্তানের শরীরচর্চা নিয়ে চিন্তিত না হয়ে জিম, যোগাসন ও আর যা শেখানো যেতে পারে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে পড়াশোনার জন্য দিনের বেশির ভাগ সময় কম্পিউটারে চোখ রাখতে…

% দিন আগে