এই শীতে বেড়াতে গেলে ফোনে যা যা রাখতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীত এলেই বেড়ানোর ধুম পড়ে যায়। এই সময় এটি বেশি দেখা যায়। কারণ এই সময় স্কুল বন্ধ থাকে। তবে এই শীতে বেড়াতে গেলে ফোনের বিষয়ে যা জানা আপনার জন্য একান্ত দরকার।

দু’বছরেরও বেশি সময় অতিমারীর প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে খানিকটা ছন্দে ফিরেছে পুরো বিশ্ব। যারমধ্যে শেষ হয়ে গেছে ২০২২ সাল। বড়দিন বা শীতকালীন ছুটির সময় সৌভাগ্যবশত জীবন স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে বর্তমানে। এখন কোনও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও নেই। সুতরাং, এই শীতে অনেকেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করেছেন।

যাদের ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে তারা প্রথমেই থাকা, খাওয়া, যাতায়াত, খরচ-খরচা সংক্রান্ত কয়েকটি দিক ভেবেও ফেলছেন। এ ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজও রয়েছে। বর্তমান সময় মোবাইল ফোন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। তাই ভ্রমণের সময় নিজের ফোনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরে রাখলে আরও ভালো হয়। কোন কোনটি কাজে লাগবে জরুরি সময়, আবার কোনটি কাজে লাগবে নেটওয়ার্ক কিংবা ব্যাটারির সমস্যা হলে।

এমার্জেন্সি ব্রডকাস্ট নোটিফিকেশন সক্রিয় করতে হবে

যে কোনও স্থানেই ভ্রমণ করার সময় এই নোটিফিকেশন ‘অন’ রাখা দরকার। হতে পারে এমন কোনও দূরবর্তী এলাকায় কেও ভ্রমণে গিয়েছেন যেখানে ভূমিধস কিংবা অন্য কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতাও রয়েছে। সেখানে মোবাইল ফোনের এই ফিচারটি অগ্রিম সতর্ক বার্তাও জানাতে পারে, AMBER অ্যালার্ট প্রদান করে সাহায্যও করতে পারে।

লক স্ক্রিনে মেডিকেল আইডি ও জরুরি পরিচিতি

স্মার্টফোনে জরুরি যোগাযোগের তথ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য রাখা উচিত। এতে কোনও রকম সমস্যা হলেই যে কোনও মানুষ পরিবারের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে পারবেন।

এটি করার নিয়ম হলো: অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ক্ষেত্রে প্রথমেই সেটিংস-এ যেতে হবে। সেখান থেকে আবাউট > ইমার্জেন্সি ইনফরমেশন> এন্টার অল ইনফো > মেডিক্যাল ইনফো> এডিট ইনফরমেশন অ্যান্ড অ্যাড। এখানেই রক্তের গ্রুপ, কোনও রোগ কিংবা সমস্যা থাকলে লিখে রাখা ভালো।

আইফোনের ক্ষেত্রে হেল্থ অ্যাপ-এ গিয়ে ‘মেডিক্যাল আইডি’-তে যেতে হবে। সেখানে জরুরি যোগাযোগসহ সমস্ত প্রয়োজনীয় বিবরণই লিখে রাখতে হবে।

স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের বিবরণ সংরক্ষণ

আপনি যে এলাকায় ভ্রমণ করছেন, সেখানকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যেমন- দূতাবাস, পুলিশ ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের যোগাযোগের বিশদ বিবরণ নিজের ফোনে রাখতে হবে। কাজে লাগতে পারে যে কোনও সময়।

অফলাইন মানচিত্র ব্যবহার

গুগল ম্যাপ ব্যবহারকারীকে অফলাইনে ম্যাপ ডাউনলোড করতে দেয়। গাড়িতে ভ্রমণ কিংবা ট্রেকিং-এর পরিকল্পনা থাকলে নিজের ফোনে অফলাইনে ম্যাপ ডাউনলোড করে নেওয়া দরকার। এটি ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াও সঠিক দিকনির্দেশ খুঁজে পেতে সহায়তা করবে।

গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রাখুন ফোনে

স্মার্টফোনে নিজের গুরুত্বপূর্ণ নথি, যেমন-পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির একটি ডিজিটাল কপি সব সময়ই রাখা দরকার। সেজন্য ডিজিলকার অ্যাপও ব্যবহার করা যেতে পারে। না হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নিজের প্রয়োজনীয় নথিগুলোর স্ন্যাপশট নিয়েও সুরক্ষিত ফোল্ডারে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

ইউপিআই-ভিত্তিক অ্যাপ এবং পরিষেবা

সঙ্গে নগদ টাকা রাখা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তবে কিছু ইউপিআই-ভিত্তিক কিংবা ওয়ালেট-ভিত্তিক অর্থ লেনদেনের অ্যাপ ও পরিষেবাগুলিও সক্রিয় করে রাখা উচিত। আবার ক্রেডিট কার্ডেও ডলার কনভার্ট করে সঙ্গে রাখতে পারেন। এটিও বিপদের সময় কাজে আসতে পারে।

ফোনে ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ সংরক্ষণ

এটি আপনাকে খুব সাবধানেই করতে হবে। কোনও কোনও ফোনে সুরক্ষিত উপায়েই এই ধরনের পরিষেবা দেওয়া হয়। সেগুলো সক্রিয় করে রাখা যেতে পারে।

AirTags বা অন্য ট্র্যাকিং ডিভাইসের ব্যবহার

ভ্রমণের সময় নিজের লাগেজ ও অন্য সামগ্রী নজরে রাখতে AirTags কিংবা টাইলের মতো ট্র্যাকিং ডিভাইসগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।

নিজের ফোনের ‘ফাইন্ড মাই ফোন’ অপশনটি সক্রিয় রাখুন

এতোসব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করলে ফোনটিকেও সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য, আইফোনে ‘ফাইন্ড মাই’ ও অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ক্ষেত্রে ‘ফাইন্ড মাই ফোন’ সক্রিয় করে রাখাও যেতে পারে। ফোন হারালে দূর থেকে ট্র্যাক করা যেতে পারে এটির মাধ্যমে।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।