দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জীবনশৈলীতে কী কী পরিবর্তন আনতে পারলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমবে? ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’-এ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বমীর কাছে সে প্রশ্নই রাখা হয়।
আধুনিক জীবনযাত্রায় চলাচল, পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস এবং সময়ের অভাব আমাদের শরীরে ডেকে আনতে পারে নানা রোগব্যধি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমরা যতো বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছি, ততোই অসুখ কামড় বসাচ্ছে শরীরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা যায়, ওবেসিটি, কোলেস্টেরল, থাইরয়েডের মতো সমস্যা বাড়ছে বিশ্ব জুড়েই। সেই সব রোগের হাত ধরে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হৃদরোগর ঝুঁকি।
সংবাদপত্রে চোখ রাখলে আচমকা চোখে পড়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর। ১৮ থেকে ৬০- সব বয়সিদেরই কাবু করছে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক কিংবা সাইলেন্ট অ্যাকিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (এসএএমআই)। গত বছর ভারতে কেকে, সিদ্ধার্থ শুক্ল, সিদ্ধার্থ সূর্যবংশী, রাজু শ্রীবাস্তবের উদাহরণ মৃত্যুভীতি তৈরি করছে অল্পবয়সি ব্যক্তিদের মনে।
প্রতিদিনের রুটিনের বেশ কিছু ভুল আমাদের ঠেলে দিচ্ছে হৃদরোগের দিকে। কিছু ভুল আমরা জেনেবুঝেই করছি, কিছু অভ্যাসের কুপ্রভাব অজান্তেই মারণরোগের ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে। তবে এই বছর যা যা অনিয়ম করেছেন, সেইসব ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পারেন আসন্ন বছরেও একটু যত্নবান হওয়ার মাধ্যমে। জীবনশৈলীতে কী কী পরিবর্তন আনলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমবে? বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে ভারতের চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বমীর কাছে সে প্রশ্নই রাখা হয়েছিলো।
হার্টের যাবতীয় অসুখবিসুখকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়ে থাকে, কার্ডিয়োভাসকুলার ডিজ়িজ়। এই রোগের ঝুঁকি যাদের অনেক বেশি, তাদের দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথম ভাগ হলো- ‘নন-মডিফায়েড রিস্ক ফ্যাক্টর’ অর্থাৎ, চাইলেও আমরা পরিবর্তন করতে পারবো না। এই ক্ষেত্রে যাদের বাবা-মা বা পূর্বপুরুষদের হৃদরোগের ইতিহাস রয়েছে, যাদের বয়স বেশি- তাদের ক্ষেত্রে হৃদরোগের ঝুঁকিও অনেকটা বেশি। চাইলেও এই ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব নয়। দ্বিতীয় ভাগ হলো- ‘মডিফায়েড রিস্ক ফ্যাক্টর’ অর্থাৎ, যা চাইলেই পরিবর্তন করা যায়। মূলত ‘মডিফায়েড রিস্ক ফ্যাক্টর’ নিয়ে আলোচনা করেছেন ভারতের এই চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী।
হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে যে নিয়মগুলো মেনে চলা জরুরি, সেই বিষয়ে জানালেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী।
# হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে সবার আগে ধূমপান পুরোপুরি ছাড়তে হবে। ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য হার্ট অ্যাটাক হওয়ার অন্যতম বড় কারণ। সেইসঙ্গে মদ্যপানেও লাগাম টানতে হবে।
# যার যতো ওজন বেশি, তার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও থাকে বেশি। উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন কতো হওয়া উচিত, তা জেনে নিতে হবে। ওবিসিটির সমস্যা থাকলেও মুশকিল! ওজন কমানোর জন্য ডায়েটের উপর নজর দিতে হবে। কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে, খেলেও রিফাইন্ড কার্বোহাইট্রেট অর্থাৎ, সাধারণ পাউরুটির বদলে ব্রাউন ব্রেড, ময়দার রুটির বদলে আটার রুটিও খেতে পারেন। ডায়েটে বেশি করে শাকসব্জি এবং ফল রাখতে হবে। অল্প অল্প করে বার বার খেতে হবে। বাইরের খাবার মোটেও নয়, বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে হবে। ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, রেডমিট এড়িয়ে চলতে হবে। খাবারে লবণ এবং চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে।
# আপনাকে সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন শরীরচর্চা করতে হবে। ৭ দিন করতে পারলে আরও ভালো হয়। ভারী শরীরচর্চা না করলেও প্রতিদিন অন্ততপক্ষে আধা ঘণ্টা দ্রুত গতিতে হাঁটতে পারেন। সঙ্গে কিছু হালকা ব্যায়ামও করতে পারেন।
# পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে নানা বিষয় নিয়ে আমরা অত্যধিক চাপের মধ্যেই থাকি। যে কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি তো বাড়েই, সেইসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, বেশি খাওয়া, ধূমপান, ঘুমের সমস্যা এমনটি ক্লান্তিও দেখা দেয়। সেইজন্য কোনও ধরনের মানসিক চাপ কিংবা উদ্বেগকে প্রশ্রয় না দেওয়ার চেষ্টাও করুন। মনঃসংযোগ বাড়াতে ধ্যানও করতে পারেন। বই পড়া বা গান শোনার অভ্যাস থাকলে, সেগুলিও চাপমুক্ত করতে সহায়তা করে থাকে।
# রাতে ঠিক মতো ঘুম না হলে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। যে কারণে স্ট্রোক-হার্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। নিয়মিত যদি ঘুম না হয়, তাহলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ভালো মতো হয় না। কাজেই শরীর তখন স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ ঘটায়, যে কারণে হৃদরোগের আশঙ্কাও থেকে যায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।
This post was last modified on এপ্রিল ১০, ২০২৩ 11:54 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), দেশের আইটি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে যে, অবশেষে গাজায় চলমান সহিংসতা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৮ ডিসেম্বর কর্নাটকের সক্লেশপুরের হাদিগে গ্রামে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৮ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি বিষয় হলো সাপ্লিমেন্ট যখন খুশি তখন খাওয়া যায় না।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হোন্ডার জনপ্রিয় মোটরসাইকেল সিবি ইউনিকর্ন সম্প্রতি নতুন রূপে আন্তর্জাতিক বাজারে…