এসি কেনার আগে যে ৬টি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘাম ঝরানো গরমকাল চলছে, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রার তীব্রতা। আর সে কারণেই এখন প্রতিটি বাড়িতে এসির মতো হোম অ্যাপ্লায়েন্স খুব জরুরি হয়ে উঠেছে। সেইসঙ্গে, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নানা রকম এসিতে এখন বাজার সয়লাব।

এই সবের মধ্য থেকে নিজের ঘরের জন্য সঠিক এসি বাছাই করা অনেক সময় কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তবে, এসি কেনার পূর্বে মাত্র ৬টি বিষয় মাথায় রাখলে এই কাজটি হয়ে যাবে একদম সহজ!

রুমের আকার

যে রুমে এসি লাগানো হবে এর আকারের ওপর নির্ভর করে সঠিক আকারের এসি বাছাই করতে হবে। রুমের তুলনায় ছোট হবে এমন এসি কিনলে তা ঘর ঠিকভাবে ঠাণ্ডা করতে পারবে না। অপরদিকে রুমের তুলনায় বড় হবে এমন এসি কিনলে তা বেশি বিদ্যুৎ খরচ করবে এবং তাপমাত্রার তারতম্যের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

সাধারণত এসি ১, দেড় বা ২ টন আকারের হয়ে থাকে। যার মধ্যে ১২০ বর্গফুট রুমের জন্য ১ টন, ১৮০ বর্গফুট রুমের জন্য দেড় টন এবং ২৪০ বর্গফুট রুমের জন্য ২ টন এসি যথার্থ। যাই হোক, রুমের আকার জানা থাকার পাশাপাশি, জানালার আকার, রুমে সূর্যের আলো কতটুকু ঢুকতে পারে, সিলিংয়ের উচ্চতা, এই সব বিষয়েও খেয়াল রাখাটা জরুরি। রুম সম্পর্কে এসব খুঁটিনাটি জেনে নেওয়ার পর এসি বিক্রেতা বা প্রফেশনাল কারও সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।

এসির ধরণ ও বিদ্যুৎসাশ্রয়

বাসাবাড়িতে সাধারণত দুই ধরণের এসি ব্যবহার করা হয়- ‘উইন্ডো’ ও ‘স্প্লিট’। স্প্লিট এসির কম্প্রেসর আবার নন-ইনভার্টার এবং ইনভার্টার দু’ধরণের হয়ে থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করে ইনভার্টার প্রযুক্তি-নির্ভর এসিগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নন-ইনভার্টার এসির তুলনায় জনপ্রিয় বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের ইনভার্টার কম্প্রেসর ৫০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুসাশ্রয় করতে সক্ষম।

একই সঙ্গে, এই ধরণের এসি পরিবেশ-বান্ধব হয় এবং অতিরিক্ত খরচ বাঁচাতে সাহায্য করে। এসি কেনার ক্ষেত্রে সিজনাল এনার্জি এফিশিয়েন্সি রেশিও (এসইইআর) রেটিং বেশি রয়েছে কিনা দেখে নেওয়া জরুরি। এই রেটিংয়ের মাধ্যমে সারাবছর এসি পরিচালনায় কতটুকু বিদ্যুৎ এবং টাকা খরচ হবে তা জানা যায়। এসইইআর রেটিং ভালো থাকার মানেই হলো এসি দীর্ঘমেয়াদে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হবে এবং অতিরিক্ত খরচ হবে না।

এসির দাম

এসি কেনার ক্ষেত্রে এর দাম অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই ক্ষেত্রে শুরুতেই আপনার বাজেট নির্ধারণ করতে হবে, এরপর দোকানে গিয়ে দেখতে হবে আপনারে বাজেটের মধ্যে সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি। সাধারণত ৪০,০০০ টাকা থেকে নন-ইনভার্টার এসির দাম শুরু হয়, আর ইনভার্টার প্রযুক্তি- নির্ভর এসির দাম শুরু হয় ৬০,০০০ টাকা থেকে।

কুলিং স্পিড

আপনি যদি এমন কোনো এসি চান যা রুমকে খুব দ্রুত ঠান্ডা করতে পারবে, তাহলে ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (বিটিইউ) রেটিং বেশি রয়েছে কিনা দেখে নিন। বেশি বিটিইউ-নির্ভর মডেলগুলো রুম খুব দ্রুত ঠাণ্ডা করতে সক্ষম, সেইসঙ্গে এগুলো বিদ্যুৎসাশ্রয়ও করে। সম্প্রতি কিছু এসি ব্র্যান্ড রুম দ্রুত ঠাণ্ডা করতে সক্ষম এমন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে, যার সাহায্যে বড় ফ্যান, বিস্তৃত ইনলেট এবং প্রশস্ত ব্লেডের মাধ্যমে ৩০-৪০ শতাংশ দ্রুত সময়ের মধ্যে রুম ঠাণ্ডা করা যায়।

এসি ইনস্টল এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা

প্রফেশনাল টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে এসি ইনস্টল করা উচিত। ঠিকভাবে ইনস্টল না করা হলে তা এসির পারফর্ম্যান্সের ক্ষেত্রে জটিলতাও তৈরি করতে পারে; সেইসঙ্গে, এতে করে বিদ্যুতের খরচ বেড়ে যেতে পারে এবং ঘরের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে উঠত পারে। এছাড়াও, এসি ভালোভাবে কর্মক্ষম রাখতে এর রক্ষণাবেক্ষণের সময় সম্পর্কে জানতে হবে। এসি ব্র্যান্ডের বিক্রয়-পরবর্তী সেবা সম্পর্কেও বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। সঠিকভাবে ইনস্টল আর রক্ষণাবেক্ষণ করা গেলে এসি সারাজীবন সেবা দিয়ে যেতে পারবে। আর সেজন্য, দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে এসি ইনস্টল করা প্রয়োজন।

এসি’র ফিচার

প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনের এই যুগে পারফর্ম্যান্স এবং গ্রাহক-অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে নিত্যনতুন ফিচার নিয়ে আসা হচ্ছে। রুমে বিশুদ্ধ বাতাস সরবরাহ নিশ্চিতে এসিতে আনা হয়েছে খুব সহজেই পরিস্কার করা যাবে এমন এয়ার ফিল্টার। এছাড়াও, আপনার পছন্দ এবং রুচির সঙ্গে মিলে যাবে এমন এসিও বাজারে আছে।

একটি রুম কতো দ্রুত ঠাণ্ডা হবে তা নির্ভর করে কুলিং স্পিডের ওপর, এটিও এখন এসি কেনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এই সমস্ত ফিচার সম্পর্কে জানার পাশাপাশি, এসি রিমোট কন্ট্রোলের ফাংশনগুলোও দেখে নিতে হবে। উদ্ভাবনী ফাংশন-নির্ভর রিমোট কন্ট্রোল আপনার এসি ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, সম্প্রতি স্যামসাং এসি রিমোট কন্ট্রোলে এমন ফিচার নিয়ে এসেছে যেনো রুমের বর্তমান তাপমাত্রা এবং এসিতে সেট করা তাপমাত্রা এই দু’টিই একসঙ্গে দেখা যায়। রুম ঠিক কতো সময়ের মধ্যে ঠাণ্ডা হচ্ছে তা এখন খুব সহজেই বোঝা যাবে, আর সর্বোচ্চ আরাম নিশ্চিত করতে এর ওপর নির্ভর করে সেটিংসও পরিবর্তন করা যাবে।

এই সমস্ত বিষয় বিবেচনায় নিলে খুব সহজেই এসি কেনা যাবে। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে একদিকে যেমন আপনার প্রয়োজন মিটবে, ঠিক তেমনি নিশ্চিত করা যাবে আরাম এবং প্রশান্তি। খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তি’র।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।