এম. এইচ. সোহেল ॥ খুব কাছে থেকে সেদিন দেখেছিলাম বাংলার নবাবখ্যাত এই গুণি শিল্পী চলচ্চিত্রের এক সময়ের তুখোড় অভিনেতা আনোয়ার হোসেনকে। তখনকার এতো খ্যাতির মানুষটিও সবার সঙ্গে মিশেছেন-কথা বলেছেন সাধারণভাবেই।
এক সময় চলচ্চিত্র মানেই এক বিশাল কিছুই ছিল। তখন বাংলাদেশে এই চলচ্চিত্রই ছিল একমাত্র বিনোদনের মাধ্যম। আর তাই এই সব চলচ্চিত্রে যে বা যাঁরা অভিনয় করতেন তাদের দেখা পাওয়া মানে বড় কিছু অর্জনের মতোই ছিল। আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা পাওয়ার বিষয়টিও ছিল সেরকম। আমি অনেক ছোট ছিলাম। আর ছোট বেলায় সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখতাম প্রায় প্রতি সপ্তাহে। বলতে গেলে সিনেমা দেখাটা ছিল একটা নেশা। আর তখনকার (আশির দশকের শুরুর কথা) প্রায় প্রতিটি সিনেমাতেই অভিনয় করতেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর অভিনয়ে আমরা মুগ্ধ ছিলাম।
হঠাৎ একদিন জানতে পারলাম নবাব সিরাজউদ্দৌলা যাত্রায় অভিনয় করতে আনোয়ার হোসেন আসছেন। আমরা ক’বন্ধু মিলে ছুটলাম জয়নগর নামক স্থানে নবাব সিরাজউদ্দৌলা যাত্রা দেখতে। তবে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল যাত্রা দেখা নয়, আনোয়ার হোসেনকে দেখা।
আমাদের উদ্দেশ্য সেদিন সফল হয়েছিল। আমরা নবাব সিরাজউদ্দৌলা দেখেছিলাম। তবে আমরা সবচেয়ে বেশি পেয়েছিল আনোয়ার হোসেনকে খুব কাছে থেকে দেখা এবং তাঁকে ছোঁয়া। এতো বড় একজন অভিনেতার দেখা পাওয়া এবং তাঁকে স্পর্শ করা যেনো তখনকার আমলে এক দুর্লভ ব্যাপার ছিল। আমার জীবনে অন্তত সেই দুর্লভ ঘটনাটি ঘটেছিল।
আমরা টিকিট কেটে ঢুকেছিলাম প্যান্ডেলে। কিন্তু আমাদের টার্গেট ছিল ভেতরে গিয়ে আনোয়ার হোসেনকে কাছে থেকে দেখা। সেই কাজটি করতে গিয়ে সেদিন শুধু দেখা নয়, তাঁর স্পর্শও পেয়েছিলাম। তিনি এতো বড় একজন অভিনেতা হওয়া সত্বেও তিনি সকলের সঙ্গে করমর্দন করতেন তা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল। সবার সঙ্গে এতো সহজভাবে মিশতেন সে ধারণাও আমাদের ছিল না। আর তাই সেদিনকার সেই কথা আজ তিনি মারা যাওয়ার পর মনে হলো। স্মৃতিতে সেই আনোয়ার হোসেনকে আমি এখনও দেখি। আমরা অনেক ছোট ছিলাম। এবং বলা যায়, সাধারণ পাবলিক। অথচ তারপরও তাঁর মতো একজন অভিনেতা আমাদের কাছে যেতে বাধা দেননি! পরবর্তীতে সাংবাদিকতার সুবাদে অনেক বড় বড় অভিনয় শিল্পীদের সাহচার্যে আশার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু সেদিনকার সেই কথা কোন দিন ভোলার মতো নয়। তিনি আসলে কতটা সহজ-সরল ছিলেন সেদিনের কথা মনে হলে সে কথার প্রমাণ মেলে।
আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন এই গুণি শিল্পী আনোয়ার হোসেন। বাংলাদেশে হয়তো আরও অনেক অভিনেতার জন্ম হবে কিন্তু আনোয়ার হোসেনকে আমরা আর কোন দিন ফিরে পাবো না। তাঁর সেই বর্জ্যকণ্ঠের ধ্বনি হয়তো আর কোন দিন শুনতে পাবো না। তাঁর অভিনিত ছবিগুলো দেখেই হয়তো আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হবে। এই প্রজন্ম বুঝবে নিষ্ঠা, সততা, বলিষ্ঠতা, ত্যাগ সবকিছুই থাকা লাগে একজন অভিনেতার ভেতরে। যা ছিল এই প্রয়াত অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের মধ্যে।
আজ আমরা তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করি। তিনি বেহেস্তবাসী হোন এটাই আমাদের কামনা।
This post was last modified on সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৩ 12:42 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ স্বাদে মিষ্টি না হলেও এই ধরনের খাবারে শর্করার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেমেন্ট প্রযুক্তিতে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অন্তর্ভূক্তিমূলক থিয়েটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলীকে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার ব্যক্তিত্ব কীরকম তা বলে দিতে পারে আপনার আঙুলের আকৃতি!…