ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ নিয়ে কিছু ধারণা থাকা জরুরি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্ষায় ছত্রাকের সংক্রমণ নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে। সচেতন থাকার পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সেই বিষয়গুলো মন থেকে মুছে ফেলা জরুরি।

সাধারণভাবে বর্ষার প্রকৃতি মনোরম হয়ে থাকে, তবে পরিবেশ যতোই ভালো থাক না কেনো এই সময় এমন কিছু সমস্যার বাড়বাড়ন্ত হয়, যেগুলো সত্যিই বেশ অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। যারমধ্যে ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ হলো অন্যতম। জ্বর, সর্দি-কাশি হলে সেটি সামলে ওঠা যায়। তবে এই ধরনের সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করা খুব সহজ নয়। বর্ষার পানিকাদা তো এই ধরনের ছত্রাক সংক্রমণের একটা বড় কারণও, সেইসঙ্গে এই সময়ের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়াও থাকে এই ধরনের সংক্রমণের নেপথ্যের কারণ হিসেবে। র‌্যাশ, চুলকানি, ত্বকের উপর চাকা চাকা দাগ ওঠা, ছত্রাক সংক্রমণের মতো ব্যাপার এমনিতেই গ্রীষ্মের মৌসুমে হয়, তবে বর্ষাতেও এর ঝুঁকি কিন্তু কম থাকে না। ঘাম জমে, অপরিচ্ছন্নতার কারণেও এমন হতে পারে। বিশেষত: পোশাকের আড়ালে থাকা অংশে সাধারণত এ ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে আরও বেশি। তাই সতর্ক হতে হবে। এই ধরনের জীবাণু সংক্রমণ নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা আমাদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে। সচেতন থাকার পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সেই সব বিষয়গুলো মন থেকে মুছে ফেলা জরুরি।

ছত্রাকের হানা শুধু কী গরমেই হয়?

ছত্রাকজনিত সংক্রমণের ভয় গরমকালেই বেশি হয়। তার মানেই এই নয় যে, বর্ষাকালে এর কোনো ঝুঁকি নেই। বরং গরমের মতো বর্ষাতেও ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ আরও বেড়ে যায়। ‘টি. মেন্টাগ্রোফাইটস’ হলো এক ধরনের এক ছত্রাক। যার হানায় সাধারণত এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

শুধু কী শিশুদের ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ হয়?

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। যে কারণে যে কোনও সংক্রমণ তাদের শরীরে সবচেয়ে আগে হানা দিয়ে থাকে। সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতাও তাদের থাকে না। যে কারণে ছত্রাকজনিত সংক্রমণের হার বাচ্চাদের মধ্যেই বেশি। সেইসঙ্গে বড়দেরও এই রোগের ঝুঁকি থেকেই যায়। পরিসংখ্যান বলছে, ১১ বছর থেকে ৪০ বছর বয়সিরা প্রতি বর্ষায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে তাকে এই ধরনের সংক্রমণে।

ঘরোয়া টোটকায় সেরে যাবে?

এই ধারণা সমস্যা ঘরোয়া টোটকায় আরও বাড়িয়ে তোলে। সংক্রমণ সারাতে অনেকেই প্রাথমিকভাবে ঘরোয়া টোটকায় ভরসা রাখেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই ধারণা মোটেও ঠিক নয়। এতে সংক্রমণ আরও বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। শরীরের কোনও অংশে এমন হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখানোটা জরুরি। নিজে থেকে কোনও ওষুধ প্রয়োগ করা মোটেও ঠিক হবে না।

একটু সেরে উঠতেই চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া কী ঠিক?

ত্বকের যে কোনও রোগই পুরোপুরিভাবে সারতে অনেক বেশি সময় লাগে। তবে সঠিক চিকিৎসা হলে প্রাথমিকভাবে উপরের ক্ষত অনেকটা সেরে যেতে পারে। তাতে রোগ পুরোপুরিভাবে সেরে গিয়েছে মনে করে অনেকেই চিকিৎসা বন্ধও করে দেন। কখন ওষুধপত্র খাওয়ার দরকার পড়বে না, এই সিদ্ধান্ত একমাত্র চিকিৎসকই দেবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জুলাই ৩১, ২০২৩ 2:17 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

আইফার্মার ও ইউসিবি’র প্রকল্প: অগ্রিম ঋণ পরিশোধ করলেন ভুট্টা এবং মরিচ চাষিরা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভুট্টা এবং মরিচ চাষিদের জন্য ব্যাংক অর্থায়ন ও ঋণ পরিশোধের…

% দিন আগে

‘সংবাদ’ নিয়ে বড়পর্দায় ফিরছেন ‘এই তো প্রেম’ নির্মাতা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সুপারস্টার শাকিব খান এবং বিন্দুকে নিয়ে ‘এই তো প্রেম’ নির্মাণ…

% দিন আগে

সুনামগঞ্জের ২৮৫ কৃষি উদ্যোক্তা পেলেন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১৯ মে সুনামগঞ্জ সদরের প্রিয়াঙ্গন কমিউনিটি সেন্টারে জেলার ১২টি উপজেলার…

% দিন আগে

সম্পূর্ণরূপে পুড়ে গেছে রাইসির হেলিকপ্টার: কেওই বেঁচে নেই

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া গেছে।…

% দিন আগে

শিশুর আঙ্গুলে সার্জারির পরিবর্তে এক চিকিৎসক জিহ্বায় অপারেশন করলেন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাতে ৬াট আঙুল থাকায় ৪ বছরের এক কন্যা শিশুকে অপারেশন…

% দিন আগে

এমন দৃশ্যের উপরে আর কিছু হতে পারে না

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ২০ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% দিন আগে