ফেসবুক বন্ধ করে দিচ্ছে ব্যবসায়িক গ্রুপ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে অনলাইনে কেনাকাটা বেশ প্রচলিত। যারমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

অনেকেই শুধুমাত্র ফেসবুকের ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশে পণ্য কেনা-বেচার ব্যবসা।

তবে সম্প্রতি রিসাইকেল বিনের মতো কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপ বন্ধ হওয়ার পর এরকম গ্রুপ নির্ভর ব্যবসার ভবিষ্যত নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

Related Post

ঢাকার ফ্লোরিডা শারমিন নামে এক ব্যবসায়ী বিবিসিকে জানিয়েছেন, তিন বছর আগে ফেসবুকে ‘রি-সাইকেল বিন’ নামে একটি গ্রুপ খুলেন।

উদ্দেশ্য পুরনো জিনিসপত্র বেচা-কেনার সুযোগ তৈরি। এই গ্রুপটিতে খুব দ্রুত যুক্ত হয় প্রায় ১৫ লাখ সদস্য, যারা নিজেরা ওই গ্রুপটিতে ব্যবহৃত পণ্য বিক্রির জন্য পোস্ট দিতেন বা কিনতে পারতেন।

তবে মাস খানেক পূর্বে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় ওই গ্রুপটি। গ্রুপটি বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা এই বিষয়ে কোনো ওয়ার্নিংও পাননি ফেসবুক হতে।

তিনি বলেন, আমাদের এই গ্রুপ কোয়ালিটি ছিলো গ্রিন। অর্থাৎ সবকিছুই ঠিক রয়েছে। তবে হঠাৎ করে গ্রুপে ঢুকতে গিয়ে দেখি গ্রুপ নেই। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দেখি গ্রুপটাই গায়েব। পরে আমি ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। তারাও সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারলেন না।

ফ্লোরিডা শারমিন বলেছেন, তার গ্রুপে ফেসবুকের কোন কমিউনিটি গাইডলাইন লংঘন হয়েছে কী-না সেই বিষয়েও কোন নোটিফিকেশন তিনি পাননি।

আবার তার মনে এই সংশয়ও রয়েছে, ফেসবুক হয়তো এরকম বড় গ্রুপকে ফেসবুক প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসা করতে দিতে চাইছে না। কারণ এখান থেকে ফেসবুকের কোনো লাভই নেই।

তাদের কোনো পোস্ট বুস্টও দিতে হয় না, আবার বিজ্ঞাপনও দিতে হয় না। তবে কারণ যেটিই হোক না কেনো, ১৫ লাখ সদস্যের গ্রুপটি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সদস্য, উদ্যোক্তা সকলের ব্যবসায় এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

ফ্লোরিডা শারমিন বলেছেন, “আমাদের গ্রুপটা ডিজেবল হওয়ার আগে এরকম আরো কয়েকটি গ্রুপ বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে আমরা সতর্কও ছিলাম, আবার টেনশনেও ছিলাম। সেজন্য আমরা একটা ব্যাকআপ গ্রুপও খুলেছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত আমাদের গ্রুপটা রক্ষা করা যায়নি। এখন আমার নিজের ব্যবসা একেবারে পড়ে গেছে, গ্রুপে যারা উদ্যোক্তা ছিলেন, মডারেটর ছিলেন তাদেরও সবার ব্যবসা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। গ্রুপকে কেন্দ্র করে একটি কুরিয়ার সার্ভিসও খুলেছিলাম, সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত।

ফেসবুকের কিছু নীতিমালা রয়েছে- যার আওতায় গ্রুপ বন্ধ করা হতে পারে। সেইসব নীতিমালায় গ্রুপ বন্ধ হওয়া নিয়ে বেশ কিছু সুস্পষ্ট কারণও উল্লেখ রয়েছে। যেখানে ওষুধ, চোরাই পণ্য, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, জুয়া, লটারি ইত্যাদির প্রচার, অস্ত্র, বিস্ফোরক, ডকুমেন্টস, টাকা-পয়সা, ব্যবহৃত কসমেটিক্স, মাদক দ্রব্য, যৌনতার নির্দিষ্ট কিছু পণ্য সামগ্রী ইত্যাদির ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, ফেসবুকের কমিউনিটি স্টান্ডার্ড লংঘন, প্রতারণা, ফেইক আইডি’র পোস্ট অনুমোদন, সহিংসতা বা গ্রুপে কপিরাইট ছাড়া ছবি/ভিডিও ইত্যাদির কারণেও ফেসবুক কোনো একটি গ্রুপ বন্ধ করে দিতেই পারে। অনেকেই গুগল কিংবা ফেসবুক থেকে কোন একটি পণ্যের ছবি ডাউনলোড করে সেই ছবি ব্যবহার করে ক্রয়-বিক্রয়ের পোস্টও দেন। অনেক সময় এইসব গ্রুপে পণ্য কিনতে গিয়ে গ্রাহকরা প্রতারণার শিকারও হন। এই ধরণের বিষয়ও ফেসবুকের নজরে আসলে সেটি ওই গ্রুপের জন্য ক্ষতির কারণও হতে পারে।

এ সম্পর্কে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন সেলিম একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, কোনো গ্রুপের বিরুদ্ধে একসঙ্গে একাধিক নিয়ম লংঘন হলে সেইক্ষেত্রে কোনো নোটিশ ছাড়াই তাৎক্ষণিক গ্রুপটি বন্ধ করে দিতে পারে ফেসবুক। ফেসবুক পূর্বে প্রোফাইল বা পেইজের দিকে যেভাবে নজর রাখতো, সেটি এতোদিন ফেসবুক গ্রুপের ক্ষেত্রে দেখাই যায়নি। তবে গ্রুপগুলোও ফেসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে নজরদারি সেটার আওতায় এসেছে। কোনো নিয়ম লংঘন হলেই সেটি দ্রুত ধরা পড়ছে এবং ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে”।

তাহলে পথ কী?

শুধু ফেসবুক গ্রুপের উপর ভরসা করে ব্যবসা করা এখন বেশ অনেকটা কঠিন হয়ে উঠছে। আগে যেমন অনেকেই নিয়ম-নীতি না জেনেই ব্যবসা শুরু করতে পারতেন, এখন সেই সুযোগ থাকছে না। এইক্ষেত্রে যাদের ব্যবসা শুধুই ফেসবুক গ্রুপের উপর নির্ভরশীল এটি তাদের জন্য বেশ ঝুঁকির কারণও, গ্রুপ বন্ধ হলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এইক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি বিষয় পরামর্শও দিচ্ছেন।

পরামর্শ হলো:

প্রথমত: ফেসবুকের নিয়ম-নীতি সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে।

দ্বিতীয়ত: পুরোপুরি ফেসবুক গ্রুপ নির্ভরশীল না হয়ে এর বাইরে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবসা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া।

তৃতীয়ত: ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স করা।

কোনো গ্রুপের সঙ্গে ওয়েবসাইট ও ট্রেড লাইসেন্সের মতো ডকুমেন্টস থাকলে ফেসবুক সেটিকে সত্যিকারের কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কোনো নিয়ম লংঘনের কারণে গ্রুপ ডিজেবল হলে সেটা আবেদন করে আবারও ফিরিয়ে আনা তখন সহজতর হয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: বিবিসি।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on আগস্ট ২৩, ২০২৩ 2:53 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

এখন থেকে বড় পর্দায় দেখা যাবে রাতের স্বপ্ন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…

% দিন আগে

রাজবাড়ী বড় মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে